Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে দেশ। এরই মধ্যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও তোপ দাগলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। নিজের এক্স (টুইটার) হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশও খুব লাফাচ্ছে, ওদেরও গঙ্গার জল বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আমাদের দেওয়া জল খাবে আর গুণগান গাওয়ার বেলায় পাকিস্তানের!’
এরপর তিনি একটি ইংরেজি খবরের ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট শেয়ার করেন। লেখেন, ‘পাপীদের গঙ্গাজল?’
উক্ত স্ক্রিনশটে একটি প্রতিবেদনের হেডলাইন লেখা যাচ্ছে। রিপোর্টের সারমর্ম হল, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের এক উপদেষ্টা সম্প্রতি লস্কর-ই-তৈয়বার এক মাস্টারমাইন্ডের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ডঃ আসিফ নজরুল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ঠিক একদিন পরেই ঢাকায় লস্কর-ই-তৈয়বা (LeT)-র সিনিয়র অপারেটিভ ইজহার-এর সঙ্গে দেখা করেন।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন পর্যটক। এই ঘটনার পর ভারত জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জন্ম নিয়েছে ক্রোধও। প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবা এই হামলায় জড়িত।
এরপরেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারই অংশ হিসাবে পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬০ সালের ‘সিন্ধু জল চুক্তি’ বাতিল করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি, আটারি চেকপোস্টও বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাকিস্তানি নাগরিকদের সমস্ত ধরনের ভিসাও বাতিল করা হয়েছে।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানের হাইকমিশন থেকে তাদের সমস্ত প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত উপদেষ্টাকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ারই নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে ‘সিন্ধু জল চুক্তি’ রদের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন।
১৯৬০ সালে ‘সিন্ধু জল চুক্তি’ সইয়ের প্রসঙ্গে নিশিকান্ত দুবে আরও বলেন, ‘তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু নোবেল পুরস্কারের লোভে ‘সাপকে জল খাওয়াতেও’ রাজি ছিলেন।’
১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৬০ সালে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আইউব খান ‘সিন্ধু জল চুক্তি’তে সই করেছিলেন।
গঙ্গা জল বণ্টন চুক্তি
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৯৬ সালে গঙ্গা জল বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর লক্ষ্য ছিল গঙ্গার জলের সুষম বন্টন করা।
১৯৭৫ সালে ফারাক্কা ব্যারেজ তৈরি হয়। সেই সময় থেকেই জলবন্টন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেই সমস্যার সমাধান করতেই এই চুক্তি।
চুক্তির মেয়াদ ছিল ৩০ বছর। আগামী ২০২৬ সালেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। অর্থাৎ, খুব শীঘ্রই চুক্তি রিনিউ করার সময় এগিয়ে আসছে।
ফারাক্কা ব্যারেজ বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
ফারাক্কা ব্যারেজ তৈরির পিছনে মূল লক্ষ্য ছিল হুগলি নদীর নাব্যতা বজায় রাখা। কলকাতা বন্দরে জাহাজ চলাচল সচল রাখতেই ১৯৭৫ সালে ফারাক্কা ব্যারেজ তৈরি করা হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, গঙ্গার জলের পরিমাণ ৭০,০০০ কিউসেকের কম হলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সমান পরিমাণে জল ভাগ হবে।
অর্থাৎ, যদি জলের পরিমাণ ৭০,০০০ থেকে ৭৫,০০০ কিউসেকের মধ্যে হয়, তাহলে বাংলাদেশ ৩৫,০০০ কিউসেক পাবে। বাকি জল ভারত ব্যবহার করবে।
আরও পড়ুন:- ওষুধের দোকানে বিক্রি হওয়া নকল ওষুধ চিনবেন কীভাবে? বিস্তারিতভাবে বুঝে নিন