Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- জন্মগত পরিচয় ভারতীয় ৷ কিন্তু, এ দেশে থেকেও, এখানকার জল ভাগ্যে নেই ! তেষ্টা মেটাতে তাই একটি আস্ত গ্রামকে নির্ভরশীল থাকতে হয় প্রতিবেশী দেশ ভুটানের উপর ৷ আর সেই গ্রাম অবস্থিত ভুটানের পাসাখা সীমান্ত লাগোয়া আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকে ৷ গ্রামের নাম বাঙ্গেবাজার ৷ গ্রামের প্রতিটি পরিবার ও সেখানে থাকা ব্যবসায়ীদের জলের জোগান আসে ভুটান থেকে, তা-ও একটি সরু পাইপের মাধ্যমে ৷
একদিকে ভারত সরকারের জল জীবন মিশন প্রকল্পে দেশের প্রত্যেক গ্রামের প্রতি ঘরে পরিশ্রুত পানীয় জলের নল পৌঁছে যাচ্ছে ৷ আর সেখানে স্বাধীনতার 77 বছর পেরিয়ে গেলেও একটা গোটা গ্রাম দেশের জল থেকে বঞ্চিত বলে অভিযোগ ৷ আর এ নিয়ে প্রশাসনও যে উদাসীন, তা তাদের বক্তব্যেই যেন স্পষ্ট ৷ কালচিনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সাধো প্রথমবার সেই গ্রামের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানলেন ৷
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বক্তব্য, “আমি আপনার থেকেই প্রথমবার শুনলাম ৷ গ্রামে গিয়ে পরিদর্শন করে দেখব ৷ তারপর পরিস্থিতি বুঝে সমস্যা সমাধানে যা করা সম্ভব, তা করব ৷” কিন্তু, কালচিনি ব্লকের বিডিও মিঠুন মজুমদারও এ বিষয়ে অবগত নন বলে জানিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, “এ বিষয়টি আমার জানা নেই ৷ তবে, আমি পিএইচই-র সঙ্গে কথা বলব ৷ তাদের সঙ্গে কথা বলে যাতে সমস্যাটা মেটানো যায়, সেই চেষ্টা করব ৷”
আরও পড়ুন:- ব্যাংকক-মায়ানমারে ভূমিকম্প কত তীব্র? দেখুন রীতিমতো ভয় ধরানো VIDEO
আর যুগের পর যুগ ধরে এই সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাঁরা যাচ্ছেন, সেই গ্রামবাসীদের বক্তব্য কী ! গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, তাঁদের এই জলকষ্ট বহুদিনের ৷ ভুটান থেকে পাইপ লাইন দিয়ে জল গ্রামে আসে ৷ সীমান্ত পেরিয়ে মাটির নীচ দিয়ে বাঙ্গেবাজার গ্রামে এসেছে জলের লাইন ৷ সেই পাইপ লাইন থেকে 10-12টি নল সারা গ্রামে ছড়িয়ে গিয়েছে বসতি অনুযায়ী ৷
ভুটান সীমান্ত পেরিয়ে মাটির তলা দিয়ে আলিপুরদুয়ারের গ্রামে এসেছে জলের পাইপ ৷
তবে, সেখানেও রয়েছে বিস্তর ঝক্কি ৷ অভিযোগ, ভুটান থেকে যে পাইপ লাইন দিয়ে জল আসে, তার উৎস প্রায় দেড়শো কিলোমিটার দূরে ৷ মাঝে মধ্যেই সেই পাইপ লাইন বন্ধ হয়ে যায় ৷ তখন গ্রামবাসীদেরই পাইপ লাইন ভুটানে গিয়ে চালু করে আসতে হয় ৷
পাইপ লাইন একবার খারাপ হয়ে গেলে, তা সারাই করতেও লাগে ভুটান সরকারে অনুমতি ৷ আবার অনুমতি একবার পাওয়া গেলেও, পাইপ লাইন মেরামতির খরচ গ্রামবাসীদেরই বহন করতে হয় বলে অভিযোগ ৷ আর সেই খরচের টাকা জোগান করতে না-পারলে, দিনের পর দিন জলকষ্টে ভুগতে হয় ৷ তখন নীচে নেমে অন্য কোনও গ্রাম থেকে জল বয়ে নিয়ে আসতে হয় গ্রামবাসীদের ৷
এই জলকষ্ট থেকে বাঁচতে, কিছু গ্রামবাসী বর্ষার জলকে ধরে রাখেন ৷ পাইপ লাইনের জল না-এলে বর্ষার ধরে রাখা জল তাঁরা ব্যবহার করেন ৷ কিন্তু, তা-ও বেশিদিন ধরে রাখা সম্ভব হয় না ৷ সেই জলও নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে ৷
এ নিয়ে গ্রামবাসী তথা স্থানীয় ব্যবসায়ী ঋতু তামাং বলেন, “এখানে পানীয় জলের খুব সমস্যা ৷ এখান থেকে প্রায় দেড়শো কিলোমিটার ভুটানের উপরে গিয়ে পাইপ সেট করে জলের ব্যবস্থা করতে হয় ৷ এখানে 25টা পরিবার এই জলের সমস্যায় ভুগছেন ৷ সরকার থেকে যদি জলের এই সমস্যা সমাধান করে দেয়, তাহলে খুব ভালো হয় ৷”
একই কথা গঙ্গা তামাংয়ের ৷ তিনি বলেন, “এলাকায় জলের খুব সমস্যা ৷ ভুটান থেকে জল নিয়ে আসতে হয় ৷ আমরা যে জল ব্যবহার করছি সেটা ভুটানের ৷ সেই জল বন্ধ হলে নীচে নেমে অন্য গ্রাম থেকে জল আনতে হয় ৷ আমরা চাই জলের এই সমস্যা যাতে খুব তাড়াতাড়ি মিটে যায় ৷”
আরও পড়ুন:- রাস্তায় ইদের নামাজ পড়লে বাতিল হবে পাসপোর্ট-ড্রাইভিং লাইসেন্স, বিস্তারিত জেনে নিন
আরও পড়ুন:- প্রতিমাসে 5000 টাকা দেওয়ার গ্যারেন্টি দিচ্ছে মোদি সরকার। জানুন কিভাবে আবেদন করবেন?