Bangla News Dunia , পল্লব চক্রবর্তী : একদিন পরেই মা শ্যামার আগমন বার্তা। অর্থাৎ কালীপুজো। হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী মনে করা হয় মৃত পূর্বপুরুষরা মর্ত্যে নেমে আসেন। দীপান্বিতা অমাবস্যার আগেই আগমন ঘটে। সেই চতুর্দশী তিথিতেই পালিত হয় ভূত চতুর্দশী। রীতি মেনে প্রত্যেক হিন্দুর ঘরেই চোদ্দ রকমের শাক খাওয়া হয়। কিন্তু কেন ?
পুরাণ মতে, দানবরাজ বলির স্বর্গ্য, মর্ত্য ও পাতাল দখলের পর নির্বিচারে হত্যাও শুরুর পর দেবতারাও নিস্তার পাননি। বৃহস্পতির বলির এই তাণ্ডব ঠেকাতে বিষ্ণু বামনের ছদ্মবেশে আবির্ভূত হন। তিন পা সমান জমি ভগবান বিষ্ণু বলির কাছে ভিক্ষা চান। বলি বুঝতে পারে ছদ্মবেশে বিষ্ণু। কিন্তু তা সত্বেও তিনি বিষ্ণুকে ভিক্ষা দিতে রাজি হয়ে যান। দু-পা দিয়ে ভগবান বিষ্ণু স্বর্গ ও মর্ত্য দখল করেন। নাভি থেকে বেরিয়ে আসা পা বলির মাথায় রাখেন। বলির পাতাল প্রবেশ ঘটে। তাঁর আশীর্বাদেই মর্ত্যে প্রতিবছর বলির পুজো হয়। কালীপুজোর আগের রাতে রাজা বলি পাতাল থেকে পুজো নিতে মর্ত্যে আসেন সহচর হিসাবে থাকেন অশরীরীরা।
এই দিন পূর্ব পুরুষদের কথা স্মরন করে চোদ্দ রকমের শাক খাওয়ার পাশাপাশি চোদ্দ শাক ধোয়া জল বাড়িতে ছেটায়। মনে করা হয় এই দিন স্বর্গ ও নরকের দরজা কিছুক্ষণের জন্য খোলা রাখা হয় আর স্বর্গত ব্যাক্তিরা পৃথিবীতে নেমে আসেন। এই দিন চোদ্দশাক খাওয়ার পিছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কারণও। রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু শাক খাওয়ার নিয়ম। সেগুলি হল- পাট, কুমড়ো, কলমি, মুলো, গিমে, হিলঞ্চ, গুলঞ্চ, পলতা, মেথি সর্ষে নটে, লাল ও সুষনি শাক। অঞ্চলভেদে নিম, জয়ন্তী, শাঞ্চে, কালকাসুন্দে, লাউ, পালং, পুঁই, ওল, বেতো, কেঁউ, পলতা ইত্যাদি শাক খাওয়ার রীতিও আছে।
দেশের প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি বলছে এই শাক গুলিতে রয়েছে নানা রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করার ক্ষমতা। কালীপুজোর সময় থেকেই বাতাসে শিরশিরানি শুরু হয়। অর্থাৎ শীতের হাওয়া ধীরে ধীরে বইতে শুরু করে তাই এই ঋতু পরিবর্তনের সময় নানা রোগ দেখা যায় যা প্রতিরোধে এই শাক গুলি বিশেষ ভাবে কার্যকরী।
আরও খবর পেতে ফলো করুন আমাদের চ্যানেল