Bangla News Dunia, Pallab : পর পর ২টি ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গিয়েছে গোটা মায়ানমার। পরিস্থিতি জটিল করেছে একের পর এক আফটার শক। রবিবারও একাধিকবার কেঁপে উঠেছে মায়ানমারের মাটি। যার জেরে আতঙ্কিত মানুষজন ঘরে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন। অবস্থা কবে স্বাভাবিক হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশায় ভূতত্ত্ববিদরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূমিকম্পের ফলে মায়ানমারে বিপুল পরিমাণ শক্তি নির্গমন ঘটেছে। ভূ-স্তরে স্থিতিশীলতা ফিরতে কয়েকমাস সময় লাগতে পারে। ততদিন আফটার শক চলতে থাকবে। ফের বড় ধরনের ভূমিকম্পের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন : এপ্রিল মাসে বদলে যাচ্ছে ব্যাংকের এই নিয়মগুলি, না জানলে পড়তে হতে পারে বিপদে
আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, মায়ানমারের নীচে অবস্থিত ইউরেশীয় পাতের সঙ্গে ভারতীয় পাতের সংঘর্ষে শুক্রবার ভূমিকম্প হয়েছিল। তার মধ্যে একটির কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৭। অন্যটির ৬.৭। এর ফলে ৩৩৪টি পরমাণু বোমার সমান শক্তি উৎপন্ন হয়েছে। আমেরিকার ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ জেস ফিনিক্স জানিয়েছেন, মায়ানমারে ভূমিকম্প যেভাবে প্রভাব ফেলেছে তাতে হতাহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। একই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভে। যদিও রবিবার পর্যন্ত সেখানে সরকারিভাবে ১,৬৪৪ জনের প্রাণহানির কথা জানানো হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।
ভারতের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষক সংস্থা ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির ডিরেক্টর ওমপ্রকাশ মিশ্রের বক্তব্য, এবারের ভূমিকম্পের কারণ মায়ানমারের সাগাইং প্রদেশের নীচে অবস্থিত সাগাইং চ্যুতিরেখা। এটি ১২০০ কিলোমিটার লম্বা এবং প্রায় ১০০ কিলোমিটার চওড়া। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রয়েছে ৪টি পাত। এগুলি হল ভারতীয় পাত, ইউরেশীয় পাত, বার্মা পাত ও সুন্ডা পাত। ভারতীয় পাতটি ক্রমশ এগিয়ে গিয়ে ইউরেশীয় পাতের সঙ্গে ধাক্কা খাচ্ছে। আবার ভারতীয় পাতের একাংশ বার্মা পাতের নীচে প্রবেশ করছে। সুন্ডা পাতটি ভারতীয় পাতের দিকে এগিয়ে আসছে। এর ফলে সাগাইং চ্যুতিরেখায় প্রবল চাপের কারণে বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হচ্ছে। যার পরিণতিতে এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৭-এর ওপরে চলে গিয়েছে।
শনিবার ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মান্দালয় শহর পরিদর্শনের পর আন্তর্জাতিক মহলের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন জুন্টা সরকারের প্রধান সিনিয়ার জেনারেল মিন অং হ্লাইং। ভারতের মতো হাতেগোনা কয়েকটি দেশই এখনও পর্যন্ত জোরকদমে ত্রাণ সহায়তা শুরু করতে পেরেছে। তবে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে সমস্যা তৈরি করেছে গৃহযুদ্ধ। ভূমিকম্পের পরেও মায়ানমার বায়ুসেনা বিদ্রোহীদের এলাকায় বোমাবর্ষণ করায় কড়া সমালোচনা করেছে রাষ্ট্রসংঘ। যুদ্ধ চলতে থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে উদ্ধারকর্মীদের। তবে উদ্ধারকাজে গতি আনতে রবিবার থেকে দু-সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ৪টি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর জোট। তারপরেও অবশ্য রাখাইন ও চিন প্রদেশে মায়ানমার সেনা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর এসেছে।