Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- মৃত হোক বা জীবিত, মশা আনো আর টাকা নাও। হ্যাঁ! এমনই স্কিম শুরু হয়েছে ফিলিপিন্সে। রাজধানী ম্যানিলার একটি গ্রামের মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে মশার বদলে টাকা আদায় করছে। জীবিত বা মৃত, প্রতি পাঁচটি মশার জন্য দেওয়া হচ্ছে ১ ফিলিপিন্স পেসো অর্থাৎ ১.৫ টাকা। দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সচেতনতা ছড়াতে মশার বিনিময়ে এই অভিযান শুরু হয়েছে।
রাজধানী ম্যানিলার অ্যাডিশন হিলস গ্রামের ক্যাপ্টেন কার্লিটো সার্নাল জানান, তিনি মশার বিনিময়ে অর্থ দেওয়ার স্কিম শুরু করেছেন। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। তিনি জনগণকে তাঁদের আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে উদ্বুদ্ধ করছেন, যাতে ডেঙ্গুর বিস্তার রোধ করা যায়। ফিলিপিন্সের স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন যে স্থানীয় জনগণের মধ্যে এই স্কিম নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ তৈরি হয়েছে। তারা বাক্স, কাপ এবং অন্যান্য পাত্রে ভর্তি করে মশা নিয়ে আসছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইলুমিনাডো ক্যান্ডাসুয়া একটি সিল করা প্লাস্টিকের কাপে তিনটি জীবন্ত মশা নিয়ে এসেছেন। মশার সংখ্যা গোনার জন্য বসানো হয়েছে মেশিন। ওই মেশিনেই মশা মেরে ফেলা হচ্ছে। কান্দাসুয়া বলেন, ‘মশা ধরা খুবই কঠিন কাজ। আমি যে টাকা পেয়েছি, তা কম হলেও, আমি তা পিগি ব্যাঙ্কে রাখব। সেই টাকা বাঁচিয়ে রাখব যাতে আমি আমার সন্তানের জন্য একটি ফোন কিনতে পারি।’
আরও পড়ুন:- মহিলাদের জন্য সেরা 5 অনলাইন কোর্স। বাড়ি বসে শিখে প্রতিমাসে হাজার হাজার টাকা রোজগার করুন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ফিলিপিন্সকে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বর্ণনা করেছে। ২০২৩ সালে ফিলিপিন্সে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৬৭,৩৫৫ জন। ৫৭৫ জনের মৃত্য়ু হয়েছিল।
ফিলিপিন্সে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে ২৮ হাজার ২৩৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪০% বেশি। কুইজন সিটিতে ১,৭৬৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১০ জন মারা গিয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই শিশু। অ্যাডিশন হিলস গ্রামটি কুইজন সিটির কাছে এবং সেখানেও ডেঙ্গু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এই বছর গ্রামে ৪২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। দুটি শিশু মারা গিয়েছে। ক্যাপ্টেন সারনাল বলেন, ‘এটা ছিল আমাদের জন্য বিপদের ঘণ্টা। তাই আমি একটা উপায় খুঁজে পেয়েছি। মশার বিনিময়ে টাকা।’
যদিও মশা মারার এমন স্কিম নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে। সমালোচকরা বলছেন, টাকার লোভে মানুষ যদি মশার বংশবৃদ্ধি শুরু করে তাহলে বড় সমস্যা হবে। তবে ক্যাপ্টেন সারনাল বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমার সঙ্গে সঙ্গে মশা নিধন অভিযানও বন্ধ হয়ে যাবে।
৬৪ বছরের মিগুয়েল ল্যাবাগ একটি বন্ধ জগে ৪৫টি মশার লার্ভা নিয়ে গ্রামের অফিসে পৌঁছেছেন। তিনি মশার লার্ভার বিনিময়ে ৯ পেসো (১৩.৪৬ টাকা) পেয়েছেন। টাকা নেওয়ার পর খুশিতে ডগমগ ল্যাবাগ বলেন, ‘এটা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। এখন আমি কফি কিনতে পারি।’
আরও পড়ুন:- আঙুর শুধু জলে ধুলেই হয় না, ৩ উপায়ে পরিষ্কার না করলে মারণ রোগের বাসা বাঁধবে
আরও পড়ুন:- রেখা গুপ্তা কে? কেন তাঁকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী করল BJP?