Bangla News Dunia, দীনেশ :- রাতের অন্ধকারে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে এসে চোর সন্দেহে গণপিটুনি খেলেন এক যুবক। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মেখলিগঞ্জের নিজতরফের ভোটেরবাড়ি এলাকায়। এদিন রাতে যুবককে অন্ধকারে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। এরপরেই যুবককে পাকড়াও করে চোর সন্দেহে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় গ্রামবাসীরা। কিন্তু আদৌ কি সে চুরি করতে এসেছিল এলাকায়?
এর পিছনে রয়েছে পরকীয়ার গল্প। জানা গিয়েছে, ধৃত যুবকের নাম মহম্মদ বাদসা আলম। সে বিবাহিত। এদিন কুচলিবাড়ি থেকে প্রেমিকাকে দেওয়ার জন্য কিনেছিলেন ঠান্ডা পানীয় ও মিষ্টি। সেগুলো নিয়ে নিজতরফের ভোটেরবাড়িতে এসেছিলেন যুবক। এলাকার অন্ধকার পথ ধরে গোপনে প্রেমিকার কাছে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা দেখতে পান তাঁকে। এরপরেই চোর সন্দেহে চিৎকার শুরু করলে লাঠিসোঠা নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বেশ কিছু মানুষ। বেগতিক দেখে যুবক তাঁর প্রেমিকার জন্য আনা ঠান্ডা পানীয় ও মিষ্টির প্যাকেট ফেলে প্রাণ বাঁচাতে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ভাগ্য তাঁর সাথ দেয়নি। এলাকার একটি চাবাগানের ভিতর দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেও স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে যান। যুবককে চোর ভেবে উত্তম মধ্যম দিতে শুরু করেন স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে যুবককে উদ্ধার করে মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন:- জেল সুপারের কাছে ‘লিভ ইন’ করার আর্জি সাহিল-মুসকানের, জানতে বিস্তারিত পড়ুন
চোর সন্দেহে যুবককে গণপিটুনি দেওয়ার পর সামনে আসে আসল রহস্য। পরবর্তীতে স্থানীয়রা দেখতে পান যুবক পালাতে গিয়ে মিষ্টির প্যাকেট ও একটি ঠান্ডা পানীয় ফেলে পালিয়েছে। তা দেখেই শুরু হয় জল্পনা। চোর কেন মিষ্টির প্যাকেট ও ঠান্ডা পানীয় আনবেন? নিজেদের মধ্যে খোঁজখবর করতে তাঁরা জানতে পারেন ওই যুবক বিবাহিত। ভোটেরবাড়ির এক বিবাহিত যুবতীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। মহিলার স্বামী বাড়িতে না থাকায় রাতের অন্ধুকারে লুকিয়ে দেখা করতে এসেছিলেন যুবক। কিন্তু তার আগে স্থানীয়দের নজরে পড়তেই চোর সন্দেহে যুবককে মারধর করা হয়।
আরও পড়ুন:- কম বিনিয়োগে ১০টি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া, বিস্তারিত জেনে নিন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় যুবক বলেন, ‘আমরা প্রথমে চোর সন্দেহ করলেও পরে জানতে পারি যুবকের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে গ্রামেরই এক মহিলার। কয়েক মাস আগে তার সঙ্গেও পালিয়েছিল। পরে আবার ফিরে এসেছে।’ নিজতরফ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গীতা রায় বলেন, ‘সাধারণ মানুষ চোর সন্দেহে এক যুবককে মারধর করেছিল। আমরা গিয়ে তাদের হাত থেকে তাকে বাঁচিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেই। যুবকের কাছ থেকে কিছু টাকা ও মোবাইল উদ্ধার হয় তাও পুলিশকে দেওয়া হয়েছে।’
অন্যদিকে ওই যুবকের বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি পুলিশ। তাই তাকে গ্রেপ্তারও করেনি। তবে তাকে চিকিৎসার জন্য মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু রবিবার সকালে ওই যুবক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় বলে খবর। মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডা. তাপস কুমার দাস বলেন, ‘ওই যুবক হাসপাতাল থেকে কিভাবে পালাল আমরা তদন্ত করে দেখছি।’ এনিয়ে মেখলিগঞ্জ থানার ওসি মণিভূষণ সরকার বলেন, ‘শুনে ছিলাম ওই যুবক বাড়ি চলে গেছে। আর যুবকের নামে কোন লিখিত অভিযোগ নেই।’