অবশেষে নতুন নিয়ম অনুযায়ী দেশের সমস্ত রেশন কার্ডধারীদের জন্য বড় এক ঘোষণা করেছে সরকার। সরকারের তরফে এবার এই নিয়ম বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়েছে, এবং এই নির্দেশ না মানলে আপনার রেশন কার্ড বাতিল হয়ে যেতে পারে — এমন সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে। এতদিন ধরে বহু মানুষ সরকারি রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে মাসিক খাদ্যসামগ্রী পেয়েই চলেছেন। কিন্তু, একাধিক জাল কার্ড, ভূয়ো দাবিদার এবং অব্যবস্থাপনার কারণে সরকারের পক্ষ থেকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের কাছে এই নিয়ম মানা এখন অত্যন্ত জরুরি।
এদিকে সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছে, যাদের রেশন কার্ড এখনো আধারের সঙ্গে যুক্ত হয়নি এবং যাদের ই-কেওয়াইসি প্রক্রিয়া এখনো সম্পূর্ণ হয়নি, তারা শীঘ্রই এই কাজটি না করলে রেশন ব্যবস্থার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে চলেছেন। শুধু তাই নয়,ইতিমধ্যে কিছু রাজ্যে ইতিমধ্যে কড়া নজরদারি চালানো শুরু হয়েছে এবং এদিকে একাধিক কার্ড বাতিল করার কাজও এগোচ্ছে। এর ফলে সময় থাকতে এই কাজ সেরে ফেলা জরুরি।
ই-কেওয়াইসি, অর্থাৎ ‘ইলেকট্রনিক নো ইয়োর কাস্টমার’ একটি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হতে চলেছে, যা ব্যবহারকারীর পরিচয় নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। রেশন কার্ডের ক্ষেত্রে ই-কেওয়াইসি চালু হওয়ায় সরকারের উদ্দেশ্য হলো প্রকৃত উপভোক্তাদের নির্বাচন করা এবং ভুয়ো কার্ডধারীদের ছাঁটাই করে ফেলা। বহু বছর ধরে রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা সুবিধা পেয়ে চলেছেন। কিন্তু সেই ব্যবস্থায় অনিয়মের অভিযোগ বারবার উঠে এসেছে। সেই জায়গা থেকেই এবার এই নিয়মকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সরকারের কথা অনুযায়ী, একাধিক মানুষ এখনো পর্যন্ত নিজেদের আধার নম্বর রেশন কার্ডের সঙ্গে যুক্ত করেননি। আবার অনেকেই কেওয়াইসি করেননি, যার ফলে ডেটাবেসে থাকা তথ্যগুলি অসম্পূর্ণ বা ভুলভাবে রেকর্ড হয়ে আছে। এর ফলে রেশন কার্ডের প্রকৃত উপভোক্তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে, এবং বহু অবৈধ নাম রেশন লিস্টে থেকে যাচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান করতেই এই ই-কেওয়াইসি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এই ই-কেওয়াইসি সম্পন্ন করার জন্য দু’টি পদ্ধতি চালু করা হয়েছে— একদিকে অফলাইন পদ্ধতি, অন্যদিকে অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে করতে হবে। শহরাঞ্চলের জন্য অনলাইন পদ্ধতিটি সুবিধাজনক হলেও গ্রামীণ এলাকা বা প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে অফলাইন পদ্ধতি অনেক সহজ হবে।
যদি আপনি অফলাইনের মাধ্যমে ই-কেওয়াইসি করতে চান, তাহলে আপনাকে নিকটবর্তী রেশন ডিলার দোকানে যেতে হবে। সেখানে আধার ও রেশন কার্ডের ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে, আপনার আঙুলের ছাপ বা বায়োমেট্রিক তথ্যের মাধ্যমে যাচাইকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এই কাজটি একেবারে বিনামূল্যে এবং তুলনামূলকভাবে দ্রুত সম্পন্ন হয়। তবে যদি কারো বায়োমেট্রিক সংক্রান্ত সমস্যা থাকে— যেমন আঙুলের ছাপ মেলাতে সমস্যা হয়, তাহলে তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাদ্য দফতরের নির্দিষ্ট কেন্দ্র বা অফিসে গিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়।
অন্যদিকে, অনলাইন পদ্ধতির সুবিধা হল আপনি বাড়ি বসেই কাজটি করতে পারবেন আপনি । বেশ কিছু রাজ্যের খাদ্য দফতরের ওয়েবসাইটে এখন ই-কেওয়াইসি করার অপশন চালু করা হয়েছে। আপনাকে শুধু www.food.wb.gov.in বা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে গিয়ে লগ ইন করতে হবে। তারপর রেশন কার্ড নম্বর, আধার নম্বর এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্টার করে, এরপর আসা OTP-এর মাধ্যমে যাচাইকরণ সম্পন্ন করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই OTP না আসা বা সার্ভার সমস্যার কারণে প্রক্রিয়াটি ব্যাহত হতে পারে, সেক্ষেত্রে পরের দিন বা অন্য সময়ে আবার চেষ্টা করলে সফল হয়ে যাবে।