Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- গরম পড়তেই ধর্মতলা জুড়ে দু’পা অন্তর পুদিনার শরবত, লেবু জল, লস্যির দোকান । আর তাতেই দেদার ব্যবহার করা হচ্ছে মাছ থেকে শুরু করে মরা মানুষ সংরক্ষণে ব্যবহৃত ইন্ডাস্ট্রিয়াল বরফ । তা যে খাবার যোগ্য নয়, সেই বিষয়ে সবকিছু জেনেই দোকানদাররা ব্যবহার করছেন সেই বরফ । এদিন বড় ধরনের অভিযান চালিয়ে এমনই বহু বরফ নষ্ট করলেন কলকাতা পুরনিগমের ফুড সেফটি বিভাগের কর্মীরা । নেতৃত্বে ছিলেন খোদ ফুড সেফটি আধিকারিক তরুণকুমার সাঁপুই ।
কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা । সেখানেই প্রতিদিন লাখো মানুষের আনাগোনা । কেউ আসেন অফিসে, কেউ আসেন কেনাকাটা করতে । আবার বড় অংশের মানুষ আসেন দূরপাল্লার বাস ধরতে । প্রখর গরমে শরীরে স্বস্তি আনতে অনেকেই চুমুক দেন ঠাণ্ডা লেবুর জলে । অনেকে আবার পান করেন পুদিনা শরবত । কেউ কেউ আবার লস্যি খেয়ে তৃপ্তি মেটান । আর সেই শরবত থেকে লস্যি, সবটাই তৈরিতে ও ঠাণ্ডা রাখতে ব্যবহার হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল বরফ ।
অতীতে ফুড সেফটি আধিকারিকরা অভিযান চালিয়ে সতর্ক করলেও এদিন ফের বেপরোয়া মনোভাব লক্ষ্য করা গেল ব্যবসায়ীদের । অনেকেই আবার সামনে রেখেছেন পানযোগ্য বরফ বা আইস কিউব । এদিন অভিযানে দোকানের আশপাশে লুকিয়ে রাখা জায়গা থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল বরফ বের করে ফুড সেফটি কর্তারা নষ্ট করে দেন ।
রং মেশানো তরকারি ফেলে দিতে বাধ্য করালেন ব্যবসায়ীদের
সেই অভিযানেই সামনে আসে কাটা ফল বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যে । নেই কোনও ঢাকার ব্যবস্থা । ধুলো থেকে মাছি বসছে, আর সেই ফল বিক্রি হচ্ছে দেদার । ফুড সেফটি কর্মীরা সেগুলি মুহূর্তে ফেলে দেন । শুধু ফল কিংবা বরফ নয়, মিষ্টি শরবতে চিনির পরিবর্তে স্যাকারিন মেশাচ্ছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী ।
খাবারে রং মেশানে হচ্ছে
এদিন ধর্মতলাজুড়ে ব্যাপক অভিযানের সময় বেশকিছু দোকানের খাবারের নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফুড সেফটি আধিকারাকিরা । চাটনি থেকে তরকারির রং আনতে ব্যবহৃত হচ্ছে ব্যাপক পরিমাণে মেটালিক ইয়েলো । তৎক্ষণাৎ পরীক্ষা করেই সেই খাবার নষ্ট করা হয় ব্যবসায়ীদের সামনেই ।
তিনদিন পুরনো তেলে রান্না হচ্ছে
এখানেই শেষ নয়, লুচি, কচুরি ভাজার তেল তিনদিনের পুরনো । পোড়া মোবিলের থেকেও খারাপ অবস্থা সেই তেলের । সেই তেল ফেলেও দেওয়া হয় । এই বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকতে আধিকারিকরা ওই সব দোকানদারদের সতর্ক করেন । ফের হলে আইনি ব্যবস্থার পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
অভিযানে দেখা গেল যে কাটা ফল বিকোচ্ছে দোকানে
ফুড সেফটি বিভাগের আধিকারিক তরুণকুমার সাঁপুই বলেন, “ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইস, যা মাছ কিংবা মৃতদেহ সংরক্ষণে ব্যবহার হয় সেইগুলি খাবারে ব্যবহার হচ্ছে কি না সেই দেখতেই অভিযান ছিল আজ । কাটা ফল বিক্রি হচ্ছে কি না সেটাও দেখার ছিল ৷ এতবার বলার পরেও কোনও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না । আমজনতা যে লস্যি বা শরবত খাচ্ছেন তাতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইস ব্যবহার হচ্ছে ।”
খোলা পড়ে রয়েছে আখের রস
তাঁর কথায়, “চেষ্টা করব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবসায়ীদের সংশোধন করাতে । যেগুলো ব্রান্ডেড নয় বা এফএসএসএআই অনুমোদিত নয়, সেইসব মশলা বা সস আমরা নষ্ট করে দিয়ে থাকি । এদিন সেটাই করা হল ৷ যেখানে দেখা গিয়েছে তেল নিম্নমানের বা দীর্ঘদিন ব্যবহার হচ্ছে সেই তেল ফেলে দিতে বাধ্য করেছি । তিনবারের বেশি একই তেল খাবারে ব্যবহার ঠিক নয়, এখানে যাঁরা ব্যবসা করছেন তাঁরা নিয়ম মানছেন না । এইসব খেলে পেটের রোগ, হৃদরোগ বা লিভার সমস্যা হয়ে থাকে । ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে ৷”
ইন্ডাস্ট্রিয়াল বরফ ফেলে দিচ্ছেন ফুড সেফটি আধিকারিকরা
আরও পড়ুন:- SBI দিচ্ছে ২০ লাখ টাকার স্কলারশিপ । যোগ্যতা ও আবেদন পদ্ধতি জেনে নিন।