শাসকদলের বড় ধাক্কা, TMCP মনোনয়নই দিতে পারেনি, ঠিক কী হয়েছে কলকাতা মেডিক্যালে?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে এবারের ছাত্র কাউন্সিলের ভোট ঘিরে তীব্র আলোড়ন, বিতর্ক, আর শেষ পর্যন্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অনুপস্থিতি, যা ছাত্ররাজনীতির সাম্প্রতিক ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা হয়ে রইল। ভোট হয়ে গিয়েছে। ফলও প্রকাশিত। কিন্তু সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার, রাজ্যজুড়ে ক্ষমতাসীন শাসকদলের ছাত্র সংগঠন TMCP কোনও আসনেই লড়াই করতে পারল না। কারণ, তারা মনোনয়নই জমা দিতে পারেনি!

ঠিক কী হয়েছে কলকাতা মেডিক্যালে?

কলেজ কর্তৃপক্ষ ২২ মে ছাত্র কাউন্সিল নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। ৩ জুন সেই নির্বাচনও সম্পন্ন হয়। ২০টি আসনের জন্য ভোট নেওয়া হয় এবং প্রায় ৯৭০ জন পড়ুয়া তাতে অংশ নেন। নির্বাচনের ফল অনুযায়ী, নকশালপন্থী ছাত্র সংগঠন MCDSA ১৭টি আসনে জয়ী হয়। বাকি আসনগুলিতে একজন SUCI (DSO)-র প্রার্থী এবং দু’জন নির্দল প্রার্থী জয় পান। এর মধ্যেই নজর কাড়ল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অভিযোগ। তারা দাবি করেছে, এই ভোট নিয়ে তাদের কোনওরকম তথ্য দেওয়া হয়নি, কোনও রকম স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (SOP) প্রকাশিত হয়নি, এমনকী কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে দিনক্ষণও চূড়ান্ত হয়নি। তাঁদের মতে, এই গোটা প্রক্রিয়াই ছিল ‘একতরফা’ এবং ‘গোপন’।

TMCP-এর তরফে WBJDA সভাপতি তথা চিকিৎসক অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ভোটের তারিখ ঘোষণা কোনও বৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়নি। অধিকাংশ সদস্য বিষয়টি জানতেনই না। তাই আমরা এই ভোট বয়কট করেছি।’ তবে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘এটি ছাত্র সংসদের নির্বাচন নয়, বরং ছাত্রদের দাবিতে গঠিত কাউন্সিল নির্বাচন। সরকার আমাকে এখানে দায়িত্ব দিয়েছে। যদি সরকার মনে করে আমি পক্ষপাত দিচ্ছি, তাহলে সরিয়ে দিক।’

আরও পড়ুন:- পিএম কিষাণের ২০তম কিস্তির টাকা পেতে গেলে সারতে হবে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

তৃণমূল কংগ্রেসের বড় ধাক্কা

২০২২ সাল থেকেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে নিয়মিত ছাত্র কাউন্সিল নির্বাচন হয়ে আসছে। যদিও গত বছর আরজি কর কাণ্ডের পর ২০২৪-এর নির্বাচন হয়নি। এবার ফের ভোট হল, কিন্তু TMCP কার্যত তাতে সামিলই হতে পারল না। এদিকে, MCDSA-র দাবি, সমস্ত নিয়ম মেনেই নির্বাচন হয়েছে। ছাত্রদের মধ্যেই গাইডলাইন ঘুরেছে। তাদের দাবি, ‘কলেজের ছাত্রছাত্রীরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সংস্কৃতি ঘৃণা করে। তাই TMCP-র কেউ থাকেও না, জানেও না।’

DSO-এর পক্ষ থেকেও একই সুরে অভিযোগ, ‘শাসকদলের হুমকি-সংস্কৃতি এখানে চলবে না। মেডিক্যাল কলেজের ক্যাম্পাস বরাবরই একটু বেশি গণতান্ত্রিক। তাই এখানকার ছাত্রছাত্রীরা সচেতনভাবে TMCP-কে বর্জন করেছে।’ শুধু রাজনৈতিক লড়াই নয়, এই নির্বাচন ঘিরে ছাত্রদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ইতিহাসও রয়েছে। ২০২২ সালে একদল পড়ুয়া টানা ১২ দিন অনশন করেন নির্বাচন দাবিতে। সেই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম ভোট হয়, আর সেখান থেকেই শুরু হয় স্বতন্ত্র ছাত্র কাউন্সিলের ধারা।

সব মিলিয়ে, এবারের নির্বাচন TMCP-র কাছে ছিল বড় ধাক্কা। প্রশাসনিক নিয়ম না মানা হয়েছিল, নাকি ছাত্রদের কাছেই সংগঠন হারিয়েছে প্রাসঙ্গিকতা—এই প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলেও। তবে এটুকু স্পষ্ট, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ছাত্ররাজনীতির হাওয়া বদলাচ্ছে। এবং সেই বদল শাসকদলের পক্ষে মোটেও সুখকর নয়।

আরও পড়ুন:- বিরাট খবর! তিন মাসের রেশন একসঙ্গে ফ্রিতে দিচ্ছে সরকার। কেন এমন সিদ্ধান্ত ?

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন