Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- শ্রীরামকৃষ্ণের 190তম জন্মমহোৎসব পালিত হচ্ছে হাওড়ার বেলুড় মঠে ৷ এই উপলক্ষে শুধু মঠের ভিতরই সেজে ওঠেনি, বরং আশেপাশে বসেছে বিশাল মেলা । বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা নানা ধরনের সামগ্রী নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন মাঠের চারপাশে ৷ এর মধ্যে রয়েছে ধর্মীয় বই, প্রসাদ, পুজোর সামগ্রী এবং নানা ধরনের হস্তশিল্প ।
সকাল থেকেই ভক্তরা এই মেলায় অংশ নিচ্ছেন ৷ চলছে বেচাকেনা । বেলা 11টা থেকে দুপুর 2টো পর্যন্ত মা সারদা সদব্রত প্রসাদালয়ে হাতে হাতে প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে । হাজার হাজার ভক্তকে রবিবার মহাপ্রসাদ পরিবেশন করা হচ্ছে ৷ ভক্তদের প্রসাদ গ্রহণ করে আপ্লুত ।
শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মমহোৎসব উলপক্ষে বেলুড় মঠে এক পবিত্র এবং আধ্যাত্মিক আবহের সৃষ্টি হয়েছে ৷ সারাদিনব্যাপী নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে রবিবার ৷ এদিন ভোর সাড়ে 4টায় মঙ্গলারতির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয় ৷ এরপর সারাদিন জুড়ে চলছে নানা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যা সমগ্র পরিবেশকে এক অপার্থিব আনন্দে ভরিয়ে তুলেছে ।
আরও পড়ুন:- স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ টাকা দেওয়া হল। কারা পেল? না পেলে কি করবেন দেখুন
শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দিরের পাশে গঙ্গার ধারে অস্থায়ী মঞ্চে সকাল থেকেই শুরু হয়েছে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান । সেখানে চলছে বেদ পাঠ, স্তব গান, ভজন, রামকৃষ্ণ পুঁথি পাঠ ও তার ব্যাখ্যা । পদাবলী কীর্তন, ভক্তিগীতি, বাউল গান, কবিগান ও লোকগীতি এই মহোৎসবের পরিবেশকে আরও মনোমুগ্ধকর করে তুলেছে । দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত শিল্পীরা এই মহোৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন, যা ভক্তদের হৃদয়কে আনন্দে ভরিয়ে তুলছে । বিশেষ এই দিনে বেলুড় মঠ সম্পূর্ণভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য ।
এদিনের এই বিশেষ দিনে বেলুড় মঠে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়েছে । দূর-দূরান্ত থেকে আগত ভক্তরা এই মহোৎসবে অংশগ্রহণ করে নিজেদের জীবন ধন্য মনে করছেন । ভক্তি, আধ্যাত্মিকতা ও আনন্দের এক অপূর্ব সমন্বয়ে আজকের বেলুড় মঠ এক নবজাগরণের সাক্ষী হয়ে উঠেছে ।
বারাসতের বাসিন্দা রুচিরা সেনগুপ্ত বলেন, “বেলুড় মঠে এসে দারুণ লাগছে ৷ কোনওদিন ভাবিনি বেলুড় মঠে এরকম মেলা হতে পারে ৷ সুন্দর করে ঠাকুর দর্শন করলাম ৷ ভোগ খাব না ৷ মেলা ঘুরে বাড়ি চলে যাব ৷”
সালকিয়া থেকে আগত বিক্রেতা শ্রেয়সী চক্রবর্তীর কথায়, “আমরা মেলায় নিয়ে আসা সমস্ত জিনিস নিজেরা তৈরি করি এবং বিক্রি করি ৷ এখানে বিক্রিবাটা থেকে যে টাকা পাওয়া যায় তা দিয়ে আমরা মানুষের সেবা করি ৷ দই বড়া, মালপোয়া, ইটলি, আলুর দম ,নান, বড়ি, নাড়ু-সহ বিভিন্ন জিনিসের খাবার পাওয়া যাচ্ছে ৷ সারারাতে জেগে আমরা এই খাবার তৈরি করেছি ৷”
বাঙুরের বাসিন্দা ভক্ত দীপান্বিতা বলেন, “প্রত্যেকবছর এই দিনে বেলুড় মঠে আসার চেষ্টা করি ৷ সবচেয়ে ভালো লাগে মহারাজদের আনন্দ করতে দেখে ৷ তাঁরা যেভাবে আজকের দিনে ভক্তদের সঙ্গে মিলেমিশে যায়, সেটা খুব ভালো লাগে ৷ আজ ভোগ খাব না ৷ মেলায় যেসমস্ত জিনিস পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোই খাব ৷ এখানে মহারাজরা ভক্তদের সঙ্গে জিলিপি ভাজেন, খাওয়া-দাওয়া করেন ৷ এটা এদিনের বিশেষত্ব ৷ “
অন্যদিকে প্রসাদ নেওযার জন্য ভক্তদের দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে বেলুড় মঠ চত্বরে ৷ প্রসাদ গ্রহণের জন্য দীর্ঘ লাইন হলেও ভক্তদের মুখে ক্লান্তির লেশমাত্র নেই ৷ বরং সকলের মনে এক অপার শান্তি বিরাজ করতে দেখা যাচ্ছে । সন্ধ্যায় সন্ধ্যারতির মাধ্যমে এই পবিত্র মহোৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে । গঙ্গার তীরে তখন দীপের আলোয় এক মায়াময় পরিবেশ সৃষ্টি হবে, যা ভক্তদের মনে চিরস্থায়ী স্মৃতি হিসেবে রয়ে যাবে বলে মনে করছে বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষ ।
আরও পড়ুন:- দোলপূর্ণিমা ঠিক কখন পড়ছে? জেনে নিন পুজোয় শুভ সময় ও তিথি
আরও পড়ুন:- ১২০টি দেশে ভিসা-হীন এন্ট্রি! কর দিতেও হবে না, কিভাবে মাস্টারস্ট্রোক দিলেন ললিত মোদী ? জেনে নিন