উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল পাক অধিকৃত কাশ্মীর (PoK)। পাকিস্তানের শাহবাজ সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ (Massive Protest)। এটিকে সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের মধ্যে একটি বলে মনে করা হচ্ছে।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সাধারণ মানুষদের একটি সংগঠন ‘আওয়ামি অ্যাকশন কমিটি’ (AAC) সোমবার থেকে গোটা অঞ্চলজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু করেছে। ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য বনধ এবং চাকা জ্যাম’ ধর্মঘটের ফলে তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে পিওকে-তে। ইতিমধ্যেই গোটা অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে ইসলামাবাদ। মাঝরাতে থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।
তবে এই ঘটনা নতুন নয়। বিগত কয়েকমাস ধরেই বিক্ষোভের আগুনে ফুঁসছেন পিওকে-র বাসিন্দারা। কয়েক দশক ধরে রাজনৈতিক বঞ্চনা ও অর্থনৈতিক অবহেলার বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছেন। মোট ৩৮ দফা দাবি করেছেন তাঁরা। এর মধ্যে অন্যতম হল পিওকে-র বিধানসভায় পাকিস্তানে বসবাসকারী কাশ্মীরি শরণার্থীদের জন্য সংরক্ষিত ১২টি আসনের অবলুপ্তি। সেই সঙ্গে ভর্তুকিযুক্ত আটা, বিদ্যুতের সঠিক দাম ধার্য করা সহ ইসলামাবাদ বহু বছর ধরে যে সংস্কারগুলি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা পূরণ করার দাবিও জানানো হয়েছে।
পিওকে-র এক বিক্ষোভকারী নেতা শওকত নওয়াজ মীর বলেন, ‘৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের যেভাবে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে তার বিরুদ্ধেই আমাদের প্রতিবাদ। যথেষ্ট হয়েছে। হয় অধিকার প্রদান করুন, নাহলে জনগণের বিক্ষোভের মুখে পড়ুন।’
এদিকে, পিওকে-তে বিক্ষোরকারীদের রুখতে কড়া পদক্ষেপ করেছে পাকিস্তানের প্রশাসন। পিওকে-র গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিতে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। চারপাশে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য ইসলামাবাদ থেকে অতিরিক্ত এক হাজার পুলিশকর্মীকেও পাঠানো হয়েছে। তবে বিক্ষোরকারীরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ হবে কিন্তু আপসহীন হবে। নিজেদের অবস্থান থেকে পিছু হটতে নারাজ উভয়পক্ষই। ফলে রাজনৈতিক অধিকারের দাবিতে পিওকে-র এই বিক্ষোভ দীর্ঘস্থায়ী সংগ্রামে মোড় নিতে পারে যে কোনও মুহূর্তে, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।