স্মার্ট মিটার লাগানো কি বাধ্যতামূলক? এতে কি কোনো সুবিধা পাবেন গ্রাহকরা ?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বসছে বিদ্যুতিক স্মার্ট মিটার। আগের নিয়ম অতীত, এখন নয়া নিয়মে অভ্যস্থ হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বাংলার নানা প্রান্তে স্মার্ট মিটার বসানোয় তৎপর হয়েছে বিদ্যুৎ দপ্তর। বলা হচ্ছে, এর দ্বারা বিদ্যুৎ চুরি আটকানো সহজ হবে। কিন্তু বাস্তবে এই মিটারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব সাধারণ মানুষ। আর এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে পশ্চিমবঙ্গ ও বিভিন্ন রাজ্যে। এই প্রতিবেদনে জেনে নিন স্মার্ট মিটারে কি বিদ্যুৎ বিল বেশি ওথে, এবং এটি লাগানো বাধ্যতামূলক কিনা?

স্মার্ট মিটার আসলে কী?

বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার। অনেক জায়গায় এই বিষয়ে সাধারণ মানুষকে কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। এই নতুন মিটার ব্যবস্থা হল প্রিপেইড ইলেকট্রিক মিটার। যেখানে উন্নত প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে পরিষেবায় গতি আনার উদ্দেশ্য বিদ্যুৎ দপ্তরের।

স্মার্ট মিটার সম্পর্কে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। এই মিটার হল আধুনিক ইলেকট্রিক মিটার। যেটি চলে রিমোট প্রযুক্তির মাধ্যমে। এটি বসানোর পর আপনার বাড়িতে প্রতি ঘন্টায় যে বিদ্যুৎ খরচের হিসেব, সেই তথ্য বিদ্যুৎ দপ্তরের কাছে যন্ত্রটি পাঠিয়ে দেবে। যন্ত্রটি কাজ করে প্রিপেইড মডেলে। আগে থেকে টাকা রিচার্জ করতে হবে। টাকা রিচার্জ থাকলেই মিলবে বিদ্যুৎ পরিষেবা। আপনার মোবাইলে যেমন টাকা না ভরলে তার পরিষেবা মেলে না, ঠিক সেরকমই স্মার্ট মিটারে যদি টাকা না থাকে তাহলে পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাবে।

স্মার্ট মিটার বসানোর উদ্দেশ্য কী?

রাজ্যে স্মার্ট মিটার বসানোর উদ্দেশ্য হল, এর মাধ্যমে গ্রাহকরা নিজেদের খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এই বিষয়ে বিদ্যুৎ দপ্তরের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, রাজ্যের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ডিজিটাল করার উদ্দেশ্যে নতুন প্রযুক্তির মিটার বসানোর উদ্যোগ। এই ইলেক্ট্রিক ডিভাইস না বসালে এই প্রক্রিয়া কোনদিন সম্ভব হত না। তাছাড়া, এর দ্বারা বিদ্যুৎ চুরি আটকানো যাবে। যা অভিযোগ, বিগত অর্থবর্ষে বিদ্যুৎ চুরির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়ে প্রায় দুই কোটি টাকার জরিমানা আদায় করেছিল বিদ্যুৎ দপ্তর।

 

সাধারণ মানুষের অভিযোগ

সম্প্রতি স্মার্ট মিটার নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বিদ্যুৎ গ্রাহকরা অভিযোগ তুলছেন। তাঁরা এই অভিযোগ তুলছেন যে, তাদের অনুমতি ছাড়াই নতুন মিটার বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে হঠাৎ আগের তুলনায় বিদ্যুতের বিল অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আবার অনেকের এও অভিযোগ, তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্যের উপর নজরদারির শিকার হচ্ছেন।মানুষের বক্তব্য, আগে যেখানে মাসে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বিদ্যুতের বিল আসত স্মার্ট মিটার বসানোর পর থেকে সেই বিল বেড়ে গিয়েছে। এখন প্রায় ৯০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত বিদ্যুতের বিল হয়ে যাচ্ছে।

স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি

এই পরিস্থিতিতে নতুন মিটার লাগানোর বিরুদ্ধে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যুৎ দপ্তর অভিযান কর্মসূচি পালন করছেন সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তাঁরা এদিন নৈহাটির বরদা ব্রিজের দলীয় কার্যালয়ের কাছ থেকে মিছিল করেন। ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার অফিসের কাছে যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা এর বিরুদ্ধে একটি স্মারকলিপি জমা দেন। এছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ও দেশ জুড়ে এই নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।

স্মার্ট মিটার লাগানো কি বাধ্যতামূলক?

স্মার্ট মিটার লাগানো বাধ্যতামূলক নয়। এই বিষয়ে বাধ্যতামূলক কোন স্পষ্ট নির্দেশিকা নেই। তবে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে এবং বিদ্যুৎ চুরি রোধ করতে এই নতুন মিটার বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একদিকে বিধুত দতর জানাচ্ছে, এই মিটারে গ্রাহকের সুবিধা হবে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের একাংশ অভিযোগ করছেন এর ফলে কারেন্ট বিল বেশি আসছে।

 

উপসংহার

মোটকথা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নতুন মিটারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তীব্র হচ্ছে। এই আন্দোলনে উল্লেখ করা হয়, নতুন মিটার বসালেই কারেন্ট বিল বেড়ে যাচ্ছে। আবার টাকা শেষ হয়ে গেলেই আচমকা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে গ্রাহকরা বহু অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। তবে বিদ্যুৎ দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, এই মিটার বসলে অসুবিধা নয় বরং সুবিধাই হবে জনতার।

আরও পড়ুন:- হিটলারের গ্যাস চেম্বারের ভিতরটা কেমন ছিল? কিভাবে বন্দিদের উপর চালানো হয়েছিল নিধনযজ্ঞ ?

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন