৩২০০০ শিক্ষক বাতিল মামলার আপডেট: টেট দুর্নীতি কি ৩২০০০ চাকরির ওপর প্রভাব ফেলবে? জানুন বিস্তারিত

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

৩২০০০ শিক্ষক বাতিল মামলা: কলকাতা হাইকোর্টে ৩২০০০ চাকরি বাতিল মামলার শুনানি দীর্ঘদিন ধরেই চলছে, যেখানে ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষার দুর্নীতি এবং তার প্রভাব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এই মামলাটি পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। মামলাটির সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

মামলার বর্তমান অবস্থা

কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ৩২০০০ অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকদের চাকরি বাতিলের মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে বিচারাধীন। এই মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আইনজীবীরা তাদের বক্তব্য রেখেছেন। বর্তমানে, মামলার মূল আবেদনকারীরা তাদের বক্তব্য পেশ করছেন, এবং শুনানি প্রায় শেষের দিকে।

শুনানিতে উঠে আসা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

শুনানিতে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বারবার প্রশ্ন তুলেছেন যে, ৩২০০০ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ঠিক কীভাবে দুর্নীতি হয়েছে এবং এর সঙ্গে চাকরি পাওয়া শিক্ষকরা কীভাবে জড়িত। এই প্রশ্নের উত্তরে, আবেদনকারীদের আইনজীবীরা ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। তাদের মতে, তৎকালীন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে এবং টাকার বিনিময়ে অনেককে টেট পাশ করানো হয়েছে।

টেট দুর্নীতি বনাম নিয়োগ প্রক্রিয়া

তবে, বিচারপতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্পষ্ট করেছেন: টেট পরীক্ষার দুর্নীতি এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার দুর্নীতি এক জিনিস নয়। টেট পরীক্ষা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া দুটি ভিন্ন বিষয়। টেট পরীক্ষায় দুর্নীতি হয়েছে মানেই যে নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও দুর্নীতি হয়েছে, তা সরাসরি প্রমাণ করা কঠিন। সিবিআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় অনিয়ম এবং দুর্নীতি হয়েছে, কিন্তু ৩২০০০ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সরাসরি দুর্নীতির প্রমাণ এখনো পর্যন্ত সামনে আসেনি।

আইনজীবীদের বক্তব্য

  • বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য: আবেদনকারীদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য দাবি করেছেন যে, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষা থেকেই দুর্নীতির শুরু এবং এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি। তিনি পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন।
  • অন্যান্য আইনজীবীরা: ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের আইনজীবীরা বলেছেন যে, টেট পরীক্ষার দুর্নীতির সঙ্গে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে মেলানো উচিত নয়। তাদের মতে, যারা সৎভাবে চাকরি পেয়েছেন, তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করা ঠিক হবে না।

মামলার সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ

বিচারপতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, টেট পরীক্ষার দুর্নীতির জন্য পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় টেট পরীক্ষার নম্বরের গুরুত্ব মাত্র ৫। তাই, টেট দুর্নীতি ৩২০০০ চাকরির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারবে না। যারা সৎভাবে চাকরি পেয়েছেন, তাদের চাকরি বহাল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে, যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

এই মামলার পরবর্তী শুনানিতে আরও নতুন তথ্য উঠে আসতে পারে। তবে, বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী, ৩২০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা কম।

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন