100 Days Work: পশ্চিমবঙ্গের লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের জন্য বিরাট স্বস্তির খবর। ১০০ দিনের কাজ (MGNREGA) প্রকল্পে কেন্দ্রকে অর্থ বরাদ্দ করার যে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্ট দিয়েছিল, সেই রায়ই বহাল রাখল দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের ফলে রাজ্যে পুনরায় এই প্রকল্প শুরু হওয়ার পথ প্রশস্ত হল। আদালতের নির্দেশ মেনেই নবান্ন ইতিমধ্যে ১ অগস্ট থেকে কাজ শুরু করার জন্য তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কাজ ও মজুরি বন্ধ থাকায় রাজ্যের প্রায় ৭৩ লক্ষ শ্রমিক চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে ছিলেন।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ কী ছিল?
দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্র সরকার পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল, যার ফলে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে রাজ্যের শ্রমিকরা মজুরি পাচ্ছিলেন না। এই অচলাবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ‘পশ্চিমবঙ্গ খেতমজুর সমিতি’ হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে। গত জুন মাসে সেই মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্ট এক ঐতিহাসিক রায় দেয়।
- আদালত কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয় যে ১ অগস্ট থেকে রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ পুনরায় শুরু করতে হবে।
- হাইকোর্ট স্পষ্ট করে দেয় যে, দুর্নীতির অভিযোগ থাকা চারটি জেলা—পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা—ছাড়া রাজ্যের বাকি অংশে কাজ শুরু করা যেতে পারে।
- প্রয়োজনে কেন্দ্র এই কাজ শুরু করার জন্য নির্দিষ্ট শর্ত আরোপ করতে পারে বলেও আদালত জানিয়েছিল।
হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। তাদের যুক্তি ছিল, দুর্নীতির কারণে টাকা বন্ধ রাখা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের ধাক্কা
সম্প্রতি এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেল কেন্দ্রীয় সরকার। শীর্ষ আদালত কলকাতা হাইকোর্টের রায়কেই বহাল রেখেছে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, জনস্বার্থের কথা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজ অবিলম্বে শুরু করতে হবে এবং এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থও কেন্দ্রকে মঞ্জুর করতে হবে। কেন্দ্রের দুর্নীতির যুক্তিকে গুরুত্ব না দিয়ে আদালত সাধারণ মানুষের কাজের অধিকারকেই প্রাধান্য দিয়েছে। এই রায়কে রাজ্য সরকারের একটি বড় আইনি জয় হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
রাজ্যের প্রত্যাশা ও পরবর্তী পদক্ষেপ
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর রাজ্য সরকার এখন অনেকটাই আশাবাদী। নবান্ন মনে করছে, এবার কেন্দ্র দ্রুত বকেয়া মজুরি এবং প্রকল্প চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করবে। উল্লেখ্য, ‘পশ্চিমবঙ্গ খেতমজুর সমিতি’ তাদের মামলায় শুধুমাত্র বকেয়া মজুরিই দাবি করেনি, পাশাপাশি এতদিন টাকা আটকে রাখার জন্য ০.০৫ শতাংশ হারে সুদ দেওয়ারও আর্জি জানিয়েছে। সুদের বিষয়টি এখনও বিচারাধীন থাকলেও, মূল প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় রাজ্যের গরিব মানুষজন আবার কাজ ফিরে পাবেন এবং তাদের আর্থিক দুর্দশা কিছুটা হলেও লাঘব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Follow Us














