26/11 মুম্বই হামলার পেছনে তাহাউর রানার গোপন ভূমিকা কী ছিল? সামনে এলো বিস্ফোরক তথ্য

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- এমন একজন ব্যক্তি সম্পর্কে, যার নাম শুনলেই গায়ে কাঁটা দেয়—তাহাউর হুসেন রানা। এই লোকটি কে? কীভাবে একজন পাক সামরিক চিকিৎসক মুম্বইয়ের ২৬/১১ হামলার মতো ভয়াবহ ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়লেন? এবং কেন ২০২৫ সালে তার প্রত্যর্পণ ভারতের জন্য এত বড় খবর? আজকে আমরা এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজবো।

তাহাউর রানা কে? ১৯৬১ সালে পাকিস্তানের চিচাওয়াতনিতে জন্ম নেওয়া এই ব্যক্তি ছিলেন একজন শিক্ষিত মানুষ। তিনি পাকিস্তানের হাসান আবদাল ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা করেন, যেখানে তার বন্ধু হয় ডেভিড কোলম্যান হেডলি—যিনি পরে মুম্বই হামলার আরেকজন চক্রান্তকারী হিসেবে ধরা পড়েন। রানা পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে মেডিকেল কোরে ক্যাপ্টেন হিসেবে কাজ করেন, কিন্তু স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি চাকরি ছাড়েন। এরপর তিনি তার স্ত্রী সমীরার সঙ্গে ১৯৯৭ সালে কানাডায় পাড়ি জমান। ২০০১ সালে তারা কানাডার নাগরিকত্ব পান। কিন্তু এই সাধারণ জীবনের আড়ালে একটা অন্ধকার গল্প লুকিয়ে ছিল। তিনি কীভাবে সন্ত্রাসবাদের জগতে জড়িয়ে পড়লেন? চলুন, জেনে নিই।

২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর—একটা তারিখ, যা ভারত কখনো ভুলবে না। মুম্বইয়ের তাজমহল প্যালেস হোটেল, ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস, চাবাদ হাউস—একের পর এক হামলায় ১৬৬ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। (দুঃখী সুরে) এই হামলার পেছনে ছিল লস্কর-ই-তৈয়বা, আর তার মাস্টারমাইন্ডদের মধ্যে একজন ছিলেন তাহাউর রানা।

আরও পড়ুন:- ব্রেক আপের প্রতিশোধ নিতে প্রেমিকার বাড়িতে ৩০০টি পার্সেল পাঠাল যুবক; কি ছিল পার্সেলে ?

কিন্তু রানা কী করেছিলেন? তিনি তার বন্ধু হেডলিকে মুম্বইয়ে গোয়েন্দাগিরি করার জন্য সাহায্য করেন।  রানার শিকাগো-ভিত্তিক অভিবাসন সংস্থা—ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস—ব্যবহার করে হেডলি ভারতে ভ্রমণের জন্য ভিসা পান। এমনকি রানা মুম্বইয়ে তার সংস্থার একটা শাখা খোলার অনুমতি দেন, যা হেডলি কভার হিসেবে ব্যবহার করেন।

আরও চমকপ্রদ তথ্য—হামলার কয়েকদিন আগে রানা নিজে মুম্বইয়ে গিয়েছিলেন এবং তাজ হোটেলে ছিলেন! তিনি বলেছিলেন, এটা ব্যবসায়িক ভ্রমণ ছিল। কিন্তু তদন্তকারীরা বলছেন, এটা ছিল হামলার পরিকল্পনার অংশ।

২০০৯ সালে রানা এবং হেডলিকে শিকাগোর ও’হেয়ার বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে রানাকে লস্কর-ই-তৈয়বাকে সমর্থন দেওয়া এবং ডেনমার্কের একটি পত্রিকায় হামলার পরিকল্পনার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তাকে ১৪ বছরের জেল দেওয়া হয়, কিন্তু মুম্বই হামলার সরাসরি অভিযোগ থেকে তিনি খালাস পান।

কিন্তু ভারত থামেনি। ১৭ বছর ধরে ভারত রানার প্রত্যর্পণের জন্য লড়াই করে। অবশেষে, ২০২৫ সালের ৯ এপ্রিল, রানাকে ভারতে আনা হয়।  তাকে দিল্লির তিহার জেলে রাখা হয়েছে, আর এনআইএ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।এই জিজ্ঞাসাবাদ থেকে কী বেরিয়ে আসবে? লস্কর-ই-তৈয়বার নতুন রহস্য? পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা?

এখন রানা তিহার জেলে উচ্চ নিরাপত্তার মধ্যে আছেন। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাসবাদ এবং হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। অনেকে, যেমন ২৬/১১-এর শিকার দেবিকা রোটাওয়ান, তার জন্য মৃত্যুদণ্ড চান। কিন্তু ভারতের আইনজীবীরা বলছেন, তার বিচার হবে ন্যায্য এবং স্বচ্ছ।

রানার প্রত্যর্পণ শুধু ভারতের জন্য নয়, বিশ্বের জন্য একটা বড় বার্তা। এটা দেখায় যে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে লড়ছে। আর এই বিচার হামলার শিকারদের জন্য ন্যায়বিচারের একটা আশা।

আরও পড়ুন:- 111 বছর ধরে দায়ের হয়নি কোনও মামলা ! জানুন দেশের শান্তিপূর্ণ গ্রামটি কোথায় ?

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন