32000 Teacher Case: ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক মামলার রায়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা, দেখুন বিস্তারিত

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

Primary Teacher Verdict: রাজ্যের শিক্ষা মহলে দীর্ঘদিনের উৎকণ্ঠার অবসান। অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন রাজ্যের ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষক এবং তাঁদের পরিবার। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এক ঐতিহাসিক রায়ে সিঙ্গল বেঞ্চের পূর্ববর্তী নির্দেশকে সম্পূর্ণভাবে খারিজ করে দিয়েছে। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, ওই ৩২,০০০ শিক্ষকের চাকরি বহাল থাকছে এবং তাঁদের নতুন করে কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে না। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর এই রায় শিক্ষকদের জন্য এক বিশাল জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কেন খারিজ হলো সিঙ্গল বেঞ্চের রায়?

২০২৩ সালের মে মাসে কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ‘ম্যানিপুলেশন’ বা কারচুপির অভিযোগে এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে ডিভিশন বেঞ্চ এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া মামলায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে। আদালতের মতে, শুধুমাত্র সন্দেহের বশে বা বিচ্ছিন্ন কিছু অনিয়মের কারণে পুরো প্যানেল বাতিল করা যায় না।

আদালত জানিয়েছে, এই শিক্ষকরা দীর্ঘ ৯ বছর ধরে সততার সঙ্গে কাজ করে আসছেন। এতদিন পর তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা বা নতুন করে ইন্টারভিউ দিতে বলা অবিচার। তাছাড়া, শিক্ষাগত যোগ্যতায় (Academic Score) কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা ইন্টারভিউ বা অ্যাপটিটিউড টেস্টে ভালো ফল করতেই পারেন, এটাকে দুর্নীতির চূড়ান্ত প্রমাণ হিসেবে ধরা যায় না। ‘সিস্টেমেটিক ফ্রড’ বা ব্যাপক জালিয়াতির কোনও জোরালো প্রমাণ এক্ষেত্রে মেলেনি বলে জানিয়েছে আদালত।

সিবিআই রিপোর্ট ও পরিসংখ্যান

মামলা চলাকালীন সিবিআই যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছিল, সেখানেও ঢালাও দুর্নীতির প্রমাণ মেলেনি বলে পর্যবেক্ষণ আদালতের। হাজার হাজার শিক্ষকের মধ্যে মাত্র কয়েকশ জনের ক্ষেত্রে অনিয়ম লক্ষ্য করা গেছে। আদালতের যুক্তি, মুষ্টিমেয় কিছু অযোগ্য প্রার্থীর জন্য হাজার হাজার যোগ্য শিক্ষকের জীবন বিপন্ন করা যায় না।

নিচে সিবিআই রিপোর্ট অনুযায়ী প্রাপ্ত অনিয়মের একটি পরিসংখ্যান দেওয়া হলো:

বিবরণ সংখ্যা
গ্রেস মার্কস সংক্রান্ত অনিয়ম ২৬৪ জন
অন্যান্য অভিযোগ ৯৬ জন
মোট অনিয়ম পাওয়া গেছে ৩৬০ জন

ভবিষ্যৎ কী?

ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়ের ফলে মামলাকারীদের অর্থাৎ যারা চাকরি পাওয়ার আশায় মামলা করেছিলেন, তাঁদের আপাতত হতাশ হতে হয়েছে। আদালত স্পষ্ট করেছে, যারা দীর্ঘ সময় ধরে কর্মরত, তাঁদের স্বার্থরক্ষা করা আদালতের দায়িত্ব। ফলে ৩২,০০০ শিক্ষক তাঁদের পদে বহাল থাকছেন এবং সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁদের নতুন করে কোনও পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে না। এই রায় রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন