7th Pay Commission: সপ্তম বেতন কমিশনের দাবি! নবান্নে নোটিশ পাঠালো সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন, বেসিক বেতন দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা?

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

7th Pay Commission: রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের দাবিদাওয়া নিয়ে আবার একবার সরব হলো কর্মচারী সংগঠন। যখন কেন্দ্রীয় স্তরে অষ্টম বেতন কমিশনের (8th Pay Commission) প্রস্তুতি শুরু হয়েছে, ঠিক সেই সময়ে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের জন্য সপ্তম বেতন কমিশন (7th Pay Commission) গঠনের দাবিতে রাজ্য সরকারকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নোটিশ পাঠাল ‘ইউনিটি ফোরাম’। এই আইনি নোটিশটি রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং অর্থ দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিবকে পাঠানো হয়েছে, যা রাজ্য সরকারি কর্মচারী মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

নোটিশের মূল কারণ ও প্রেক্ষাপট

‘ইউনিটি ফোরাম’-এর পক্ষে আহ্বায়ক শ্রী দেবপ্রসাদ হালদার এবং শ্রী পলাশ দত্ত এই নোটিশ জারি করেছেন। নোটিশের মাধ্যমে তাঁরা জানতে চেয়েছেন যে, রাজ্য সরকার তার কর্মচারীদের জন্য সপ্তম বেতন কমিশন গঠনের বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বা করার কথা ভাবছে। এই পদক্ষেপটি এমন এক সময়ে নেওয়া হয়েছে যখন রাজ্যের কর্মীরা কেন্দ্রীয় কর্মীদের তুলনায় মহার্ঘ ভাতার (Dearness Allowance) ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন।

নোটিশে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের (6th Pay Commission) প্রসঙ্গও তুলে ধরা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে যে, ষষ্ঠ বেতন কমিশন প্রায় চার বছর দেরিতে, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জমা পড়েছিল। এতে একাধিক অসঙ্গতি (anomalies) ছিল বলে ফোরামের দাবি। তৎকালীন চেয়ারম্যান শ্রী অভিরূপ সরকারের রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে এটি জমা দিতে দেরি করে, যার ফলে কর্মচারীরা প্রায় ৪৮ মাসের বেসিক বেতন, মহার্ঘ ভাতা এবং বাড়ি ভাড়া ভাতা (HRA) থেকে বঞ্চিত হন।

ডিএ (DA) বৈষম্য এবং আইনি লড়াই

বর্তমানে রাজ্যের কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের তুলনায় ৪০% ডিএ কম পাচ্ছেন। যেখানে কেন্দ্রীয় কর্মীরা ৫৮% ডিএ পান, সেখানে রাজ্যের কর্মীরা পাচ্ছেন মাত্র ১৮%। এই বিপুল বৈষম্যকে সংবিধানের ১৪ নং ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অসঙ্গতি তুলে ধরে বলা হয়েছে যে, নয়াদিল্লির বঙ্গভবনে কর্মরত রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ৫৮% হারে ডিএ পাচ্ছেন, অথচ পশ্চিমবঙ্গে কর্মরতরা পাচ্ছেন মাত্র ১৮%। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে খামখেয়ালি ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করা হয়েছে। অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল, কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের একাধিক নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার সেগুলি মানেনি বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

ইউনিটি ফোরামের প্রধান দাবিগুলি

অ্যাডভোকেট প্রবীর চ্যাটার্জির মাধ্যমে পাঠানো এই নোটিশে ইউনিটি ফোরামের পক্ষ থেকে কয়েকটি সুস্পষ্ট দাবি পেশ করা হয়েছে:

  • অবিলম্বে কেন্দ্রীয় হারে অর্থাৎ ৫৮% মহার্ঘ ভাতা বকেয়া সহ প্রদান করতে হবে। সাথে ১০% সুদ সহ, ROPA 2019 অনুযায়ী বেসিক পে-এর সাথে মার্জ করতে হবে, ঠিক যেমন বঙ্গভবনের কর্মচারীরা পাচ্ছেন।
  • সমস্ত আইনি জটিলতা এড়িয়ে ৩১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ এর মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
  • কেন্দ্রীয় অষ্টম বেতন কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যে সপ্তম বেতন কমিশন গঠনের জন্য অবিলম্বে একটি কমিটি গঠন করতে হবে।

সাধারণত প্রতি ১০ বছর অন্তর বেতন কমিশন গঠন করা হয়। সেই অনুযায়ী, ২০২৬ সালে পরবর্তী কমিশন গঠন করা উচিত। যদি সপ্তম বেতন কমিশন গঠিত হয় এবং ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৫৮-এর পরিবর্তে ২-এর কাছাকাছিও থাকে, তাহলে বর্তমানে যাদের বেসিক ৩০,০০০ টাকা, তা প্রায় ৬০,০০০ টাকায় পৌঁছে যাবে, যা কর্মীদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাবে।

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন