8th Pay Commission: কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য অত্যন্ত খুশির খবর। অষ্টম বেতন কমিশন বা 8th Pay Commission নিয়ে জল্পনার অবসান ঘটতে চলেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই নতুন বেতন কমিশন কার্যকর হতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদিত এই কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হলে সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের বেতন ও পেনশনে বড়সড় পরিবর্তন আসবে।
দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা তাদের বেতন কাঠামোর সংস্কার এবং ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর বৃদ্ধির অপেক্ষায় ছিলেন। এই প্রতিবেদনে আমরা জানাব অষ্টম বেতন কমিশনের সম্ভাব্য বেতন বৃদ্ধি, ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর এবং পেনশন সংক্রান্ত নতুন নিয়মাবলী সম্পর্কে।
বেতন ও পেনশনে আমূল পরিবর্তনের সম্ভাবনা
অষ্টম বেতন কমিশন কার্যকর হলে কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত উভয় শ্রেণীর কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের আর্থিক কাঠামো ঢেলে সাজানো হবে। বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতির কথা মাথায় রেখে ডিয়ারনেস অ্যালাউন্স বা DA-এর সমন্বয় করা হবে। বর্তমানে সপ্তম বেতন কমিশনের অধীনে কর্মীরা যে সুবিধা পাচ্ছেন, তার তুলনায় অষ্টম কমিশনে মূল বেতন বা বেসিক স্যালারিতে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে এবং বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ফিটমেন্ট ফ্যাক্টরের ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের ন্যূনতম মূল বেতন ১৮,০০০ টাকা থেকে বেড়ে ৫১,৪৮০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। যদিও সরকার এখনও পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধির শতাংশ বা সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি, তবে এই সম্ভাব্য বৃদ্ধি কর্মীদের মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে।
ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর: কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ‘ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশের অর্থনৈতিক মুদ্রাস্ফীতির ওপর ভিত্তি করে এটি নির্ধারণ করা হয়। সপ্তম বেতন কমিশনে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ছিল ২.৫৭। অষ্টম বেতন কমিশনের ক্ষেত্রে এটি কত হতে পারে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিশ্লেষণ।
| বিবরণ | সপ্তম বেতন কমিশন | অষ্টম বেতন কমিশন (সম্ভাব্য) |
|---|---|---|
| ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর | ২.৫৭ | ১.৮৩ থেকে ২.৫৭ (প্রত্যাশিত) |
| ন্যূনতম বেসিক স্যালারি | ১৮,০০০ টাকা | ৫১,৪৮০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে |
ট্যাক্স এক্সপার্ট এবং অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সরকার এখনও সরকারিভাবে কোনো সংখ্যা ঘোষণা না করলেও, প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ১.৮৩ থেকে ২.৫৭-এর মধ্যে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি প্রায় ১ কোটি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীর আয়ে প্রভাব ফেলবে।
পেনশন ও ডিএ সংক্রান্ত বিভ্রান্তি ও আসল সত্য
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি দাবি ছড়িয়ে পড়েছিল যে, নতুন ফিনান্স অ্যাক্ট ২০২৫-এর অধীনে কেন্দ্রীয় সরকারি পেনশনভোগীদের ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে ভারত সরকার এই দাবিকে সম্পূর্ণ “ভুয়ো” বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
১৩ ডিসেম্বর ২০২৫-এ একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে সরকারের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে, অবসর পরবর্তী সুবিধা যেমন ডিএ বৃদ্ধি এবং পে কমিশন রিভিশন শুধুমাত্র তখনই বন্ধ করা হবে যদি কোনো কর্মচারী “অসদাচরণের জন্য বরখাস্ত” (Dismissed for misconduct) হন।
সিসিএস (পেনশন) রুলস, ২০২১-এর ৩৭ নম্বর নিয়ম সংশোধন করে বলা হয়েছে, যদি কোনো কর্মী অসদাচরণের জেরে চাকরি থেকে বরখাস্ত হন, তবেই তার অবসরকালীন সুবিধা বা বেনিফিট বাজেয়াপ্ত করা হবে। সাধারণ পেনশনভোগীদের জন্য ভয়ের কোনো কারণ নেই।
কতজন উপকৃত হবেন?
রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ৫০ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী (প্রতিরক্ষা কর্মী সহ) এবং প্রায় ৬৫ লক্ষ অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগী রয়েছেন। প্রতি দশ বছর অন্তর সরকার পে কমিশন গঠন করে বেতন ও পেনশন কাঠামো পর্যালোচনা করার জন্য। ২০১৫ সালে সপ্তম বেতন কমিশন গঠিত হয়েছিল এবং দীর্ঘ ১০ বছর পর মুদ্রাস্ফীতি, প্রকৃত আয়ের ক্ষয় এবং সরকারের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনা করে অষ্টম বেতন কমিশন নতুন সুপারিশ আনতে চলেছে।














