Bangla News Dunia : S. Datta Roy – সাড়ে ৫০ লক্ষ বছর ধরে এই বিচিত্র গুহাটি বাইরের জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। এই গুহাটি যেন অন্য জগতের অন্য এক পৃথিবী। এই গুহার প্রাণীরাও বিচ্ছিন্ন ও আলাদা। রোমানিয়ার কনসানটা কাউন্টির ম্যাঙ্গালিয়া অঞ্চলে এই গুহা ১৯৮৬ সালে আবিষ্কৃত হয়। বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান লাসকু রোমানিয়া -বুলগেরিয়া সীমান্তে কৃষ্ণসাগরের উপকূলের কাছাকাছি এই গুহা আবিষ্কার করেছিলেন।
সেসময় জনশুন্য ম্যাঙ্গালিয়ায় তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরী করার জন্য সয়েল টেস্ট করা হচ্ছিলো ,তখনই এই গুহা পাওয়া যায়। এখানে বিপুল পরিমানে কার্বন -ডাই -অক্সাইড যার পরিমান ২-৩.৫ % ও হাইড্রোজেন সালফাইড আছে কিন্তু অক্সিজেন খুব কম ,মাত্র ৭-১০ %। তার ফলে এখানে কেমোসিসথেসিস প্রক্রিয়া চলে। কেমোসিসথেসিসে প্রচুর পরিমানে সালফার উৎপন্ন হয় এবং কার্বন নির্গত হয় ,ফলে এই গুহাটি খুব বিষাক্ত। গুহাটির নাম মোভাইল গুহা।
এই গুহার জলে ও বাতাসে অনেক এমোনিয়া ও হাইডোজেন সালফাইড আছে। এখানে ৪৮ প্রজাতির প্রাণী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৩৩ টি প্রজাতিকে বাইরের পৃথিবীতে দেখা যায় না। শামুক ,জোক ,কাঁকড়াবিছা মাকড়সা পায় গেছে গুহায়। এখানে মিথেন ও সালফারের বিক্রিয়ার ফলে ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া পুষ্ট হয়। এই বিক্রিয়ার ফলে গুহার দেওয়ালে পুরু শ্যাওলার মতো মাইক্রোবিয়াল ম্যাটস তৈরী হয় যে থেকে তৃণভোজীরা খাদ্যগ্রহণ করে।
গবেষকদের ধারণা এই গুহায় প্রথমে ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয়েছিল তারপর প্রাণীর। বিজ্ঞানীরা মনে করেন -তুষারযুগে গোটা পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব না থাকলেও এই গুহার জীবনচক্র তার নিজের নিয়মেই চছিলো। সূর্যের আলো না পাওয়ার ফলে এখানকার অনেক প্রাণীই জন্মাবদ্ধ। রোমানিয়া সরকার এই গুহার মুখ বন্ধই রাখে। কোমরে দড়ি বেঁধে ২০ মাইটার গভীরে নামতে হয়। গুহার ভেতরে হ্রদের জলের গন্ধ পচা ডিমের মতো। বিজ্ঞানীদের ধারণা এই গুহায় এখনো অনেক অজানা রহস্য লুকিয়ে আছে।
Highlights
১. রোমানিয়ার কনসানটা কাউন্টির ম্যাঙ্গালিয়া অঞ্চলে এই গুহা ১৯৮৬ সালে আবিষ্কৃত হয়।
২. গুহাটির নাম মোভাইল গুহা।
৩. বিজ্ঞানীরা মনে করেন -তুষারযুগে গোটা পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব না থাকলেও এই গুহার জীবনচক্র তার নিজের নিয়মেই চছিলো।
# মোভাইল গুহা # রোমানিয়া