মাধ্যমিকে দশম হওয়া সোমদত্তার বাড়িতে গিয়ে শুভেচ্ছা জানালেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডঃ অনির্বাণ গাঙ্গুলি

By Bangla news dunia Desk

Published on:

Bangla News Dunia , আমিত :  ইতি মধ্যেই মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হয়েছে। আর মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পরেই দেখা গেল প্রতিবারের মতো এবারও জেলার ছাত্রছাত্রীদের জয়জয়কার। মাধ্যমিকে এবার কলকাতা থেকে প্রথম হয়েছে কমলা গার্লস্ স্কুলের সোমদত্তা সামন্ত। পুরো পশ্চিমবঙ্গে দশম স্থান অধিকার করেছে সে। সোমদত্তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৪।

তার দীর্ঘ তপস্যার ফল এই রেজাল্ট। সোমদত্তার পছন্দের বিষয় অঙ্ক হলেও ভবিষ্যতে সে অঙ্ক নিয়ে এগোবে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় সে। আপাতত উচ্চমাধ্যমিক নিয়ে ফোকাস করতে চায় সে। তবে সে জানিয়েছে বিজ্ঞান নিয়েই এগোনোর ইচ্ছে আছে তার। সোমদত্তার কথায়, ‘রুটিন ধরে কোনওদিনই পড়িনি। মা সবসময় বলত একটা রুটিন কর। কিন্তু আমার যখন যেমন ইচ্ছা করত তেমন পড়তে বসতাম। তবে রোজের পড়া রোজ শেষ করতাম। কখনও কোনও পড়া ফেলে রাখতাম না।’

তবে সোমদত্তার জীবনে মূল অনুপ্রেরণা কে এই প্রশ্ন তাকে জিজ্ঞেস করা হলে সে জানায় তার জীবনে তার মা-ই তার প্রধান অনুপ্রেরণা। তার মা তাকে কখনও বকতেন না। এমনকি কোনওদিন বেশি পড়ার জন্য জোরও করত না তার মা। পরীক্ষায় কখনও খারাপ ফল করলেও তার মা তাকে উৎসাহ দিতেন। পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর সময়ে ছবি আঁকা ও নাচ করতে ভালোবাসেন সোমদত্তা।

মূলত, টিভিতে মাধ্যমিকের ফলাফল ঘোষণার পর খুশির হাওয়া বয় কলকাতা পুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে সোমদত্তার বাড়িতে। রেজাল্ট প্রকাশের পর বাড়িতে সকাল থেকে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুরা শুভেচ্ছা জানায় তাকে। মেয়েকে সাংবাদিকদের সামনে মিষ্টি খাওয়াতে গিয়ে আবেগে চোখ ছলছল করে ওঠে সোমদত্তার বাবার। তার মা জানিয়েছেন, মেয়ের রেজাল্টে তিনি খুব খুশি এবং তিনি তার মেয়েকে নিয়ে গর্ববোধ করেন। যাদবপুর লোকসভার বিজেপির প্রাথী বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তথা শ্যামাপ্রসাদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ট্রাস্টি ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়  মাধ্যমিকের এই কৃতী ছাত্রীকে তার সাফল্যের জন্য তার বাড়িতে গিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান। তবে বিজেপির প্রাথী ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পিএইচডি করেছেন। আর সেই যাদবপুর কেন্দ্রেই তিনি এবারের বিজেপির প্রাথী। এদিন তিনি সোমদত্তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য তাকে আশীর্বাদ করেন। পাশাপাশি ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান তিনি। বেশ অনেকক্ষণ ধরে ছাত্রীর সাথে কথা বলেন ও ছাত্রীর সাথে পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা করেন। অনির্বাণবাবু সোমদত্তার বাড়িতে আসায় খুব খুশি মেধাবী ছাত্রীর পরিবার। তাদের মন্তব্য একজন শিক্ষিত ব্যক্তি আমাদের বাড়িতে আশায় আমরা খুশি। ওনার সাথে কথা বলে অনেক কিছুই জানা গেল , যা আগামী দিনে সোমদত্তার উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে কাজে লাগবে।

তবে এবার মাধ্যমিকে প্রথম দশে রয়েছে ৫৭ জন। দক্ষিণ ২৪ পরগণার ৮ জন, দক্ষিণ দিনাজপুরের ৭ জন, পূর্ব বর্ধমানের ৭ জন, পূর্ব মেদিনীপুরের ৭ জন, বাঁকুড়ার চার জন, বীরভূমের ৩ জন, উত্তর ২৪ পরগণার ২ জন, হাওড়ার ১ জন, মালদহের ৪ জন, পশ্চিম মেদিনীপুরের ৪ জন, কোচবিহারের ২ জন, হুগলি থেকে ২ জন, নদিয়ার ২ জন, ঝাড়গ্রামের ১ জন, পুরুলিয়ার ১ জন, এবং উত্তর দিনাজপুরের ১ জন আছে মেধা তালিকায়।

তবে তার আগে রেজাল্টের দিন দুপুর ৩টে নাগাদ সোমদত্তা বাড়ি থেকে স্কুলে আসতেই তাকে নিয়ে হইচই পড়ে যায়। অন্য অভিভাবকেরা প্রায় কোলে তুলে তাকে ভিতরে নিয়ে যান। কমলা গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মিঠু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সোমদত্তা ভাল ফল করবে জানতাম। মেধা তালিকায় স্থান পাওয়াটা খুবই আনন্দের। প্রতি বারই আমাদের স্কুলের খুব ভাল ফল হয়। কিন্তু একটুর জন্য হয়তো মেধা তালিকায় থাকতে পারি না। এবার সেই আক্ষেপ ঘুচল। আমি ভীষণ খুশি।”

এই দিকে সোমদত্তার বাবা গোপালচন্দ্র সামন্তর সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি পেশায় একজন স্কুলশিক্ষক। তিনি বললেন, “মেয়ে ওড়িশি নৃত্যও শেখে। কিন্তু মাধ্যমিকের জন্য গত দু’-তিন মাস তেমন ভাবে অনুশীলন করতে পারেনি। মেয়ে বলেছে, পড়াশোনার সঙ্গে নাচও চালিয়ে যাবে। ও যেটা নিয়ে পড়তে চায়, সেটাই পড়বে।”

 

Bangla news dunia Desk

মন্তব্য করুন