ট্রাম্প বা হ্যারিস- দু’দিকেই জয় ভারতের, কিন্তু কেন ? জানতে পড়ুন বিস্তারিত

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

trump and kamala-harris

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- হাতে আর মাত্র কয়েকঘণ্টা। তারপরই ভোট দেবে আমেরিকা। আরও কিছুক্ষণ বাদে জান যাবে হোয়াইট হাউজের বাসিন্দা কে হবেন? এখানেই প্রশ্ন ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি কমলা হ্যারিস কে জিতবেন নির্বাচনে ? আর সেই জয়ের কী প্রভাব ভারতের উপর পড়তে চলেছে?

কমলা হ্যারিসের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগের কথা সবাই জানে। তাঁর আগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কেউ মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী হননি । সেদিক থেকে বিশ্বের সমস্ত প্রান্তে থাকা ভারতীয়রা খুশি। আমেরিকায় থাকা ভারতীয়রদের একটা বড় অংশ তাঁর সমর্থনে পথেও নেমেছেন । অন্যদিকে, পাঁচ বছর আমেরিকার প্রথম নাগরিক থাকা ডোনাল্ড ট্রাম্পও ভারত নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশে পিছপা নন। এবারের নির্বাচনের প্রচারেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তাঁর বন্ধু বলে সম্বোধন করেছেন ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর হওয়া অত্যাচার নিয়েও সরব হয়েছেন । ভারতও বাংলাদেশে হিন্দু-সহ সমস্ত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার কথা বলে আসছে ।

বাইডেন প্রশাসন ভারত-আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিতে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে । গত পাঁচ বছরে আমেরিকা কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে । ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে হ্যারিস সেই সিদ্ধান্তের অংশ ছিলেন । সেদিক থেকে ভারতের রাজনৈতিক নেতারাও তাকিয়ে রয়েছেন আমেরিকার ভোটের দিকে ।

আরো পড়ুন:- পৃথিবীর চেয়ে ৫ গুণ বেশি বড়, থাকতে পারবে মানুষও! ভারতীয় বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার

ভারতের লাভ-ক্ষতি

যুযুধান দুই নেতার মধ্যে কে জিতলে ভারতের জন্য তা বেশি লাভজনক হতে চলেছে? এই প্রশ্নের জবাব চেয়ে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক বিশারদ মায়াঙ্ক চাণক্যর সঙ্গে কথা বলেছিল বাংলা নিউস দুনিয়া। শিকাগো থেকে তিনি জানান, ভারত ও আমেরিকার সম্পর্কের দুটি মূল ভিত্তি আছে। প্রথমত, এই সম্পর্কের সিংহভাগ নির্ভর করে ভূ-কৌশলগত দিক থেকে। এই প্রশ্নে ভারত ও আমেরিকা একে অপরের সঙ্গে সখ্য রাখে। তাছাড়া বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি এই দুটি ক্ষেত্রের অংশীদারিত্বও ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেয় ।

ভূ-কৌশলগত দিক হোক অথবা বাণিজ্য- গত চার দশকের মধ্যে চিন নিজের গুরুত্ব অনেকটাই বাড়িয়েছে । আমেরিকা চিনকে নিজের বিপদ হিসেবেই দেখে। ওয়াশিংটনের এই মানসিকতার বদল না হওয়া পর্যন্ত আমেরিকার সকলেই ভূ-কৌশলগত দিক থেকে ভারতকে পাশে চাইবে । এটা সবসময়ই ভারতের জন্য ইতিবাচক। কমপক্ষে আগামী দু’দশকের মধ্যে এই ভাবনায় বদল আসা সম্ভব নয়।

ভারতের গণতন্ত্র থেকে মজবুত অর্থনীতি ইন্দো-প্যাশিফিক অঞ্চলে আমেরিকাকে নির্ভরযোগ্যতা দেয় । তাছাড়া দুটি দেশই গণতন্ত্র এবং তার থেকে আসা মূল্যবোধকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয় । সেটাও দু’পক্ষের কাছাকাছি আসার একটা বড় দিক হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে আছে । আর সেদিক থেকে মায়াঙ্ক মনে করেন ট্রাম্প বা হ্যারিস- শেষ হাসি যাঁরই হোক না কেন তাতে ভারতের উপর তেমন বড় কোনও প্রভাব পড়বে না ।

হ্যারিস জিতলে কী হবে?

মায়াঙ্ক মনে করছেন হ্যারিস জিতলে তিনি ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ককে একটি নতুন স্তরে তুলে নিয়ে যাবেন অবশ্যই । তাঁর মা শ্যামলা গোপালন হ্যারিস ভারত থেকেই আমেরিকা গিয়েছিলেন। সেই টান দু’দেশের সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে তাতে সংশয়ের অবকাশ নেই ।

ট্রাম্প জিতলে কী হবে?

এ ব্যাপারে মায়াঙ্ক মনে করেন 2020 সাল পর্যন্ত আমেরিকা এবং ভারতের সম্পর্ক যেমন ছিল ফের তেমনটাই হতে চলেছে ।

সাম্প্রতিক অতীতের ইতিহাস?

এই দু’জন ছাড়া 2000 সাল থেকে এ পর্যন্ত আরও চারজন আমেরিকার প্রথম নাগরিকের দায়িত্ব সামলেছেন। বিল ক্লিনটন 2000 সালের মার্চ মাসে ভারত সফরে আসেন। সেই সময় ভারত-মার্কিন সম্পর্ক নিয়ে বিশ্বজুড়ে চর্চা শুরু হয়েছিল । এরপর একে জর্জ বুশ, ব্যারাক ওবামা এবং জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন । কারও সময়ই ভারত-মার্কিন সম্পর্কে তেমন উল্লেখযোগ্য অবনতিও হয়নি । ইতিমধ্যেই প্রায় 60 মিলিয়ন দেশবাসী ভোট দিয়েছেন । শেষমেশ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শেষ হাসি কে হাসবে তা বলা কঠিন । এখানেই মার্কিন ঐতিহাসিক অ্যালন লিঞ্চম্যানের কথা উল্লেখ করলেন মায়াঙ্ক ।

তিনি বলেন, “অ্যালন লিঞ্চম্যান 1984 সাল থেকে এ পর্যন্ত দশটির মধ্যে নটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল মিলিয়ে দিয়েছেন । 2016 সালে ট্রাম্পের পরাজয়ও মিলিয়ে দিয়েছিলেন তিনি । এবারের নির্বাচনে 13টি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলে তিনি মনে করেন। অ্যালন লিঞ্চম্যান আপও মনে করেন এই 13টি প্রশ্নের মধ্যে 6টির বেশি যদি মিথ্যা হয় তাহলে ক্ষমতায় থাকা দলের পরাজয় হয় । “

কী সেই 13টি বিষয়?

  • দলীয় অবস্থান: মধ্যবর্তী নির্বাচনের পরে ক্ষমতাসীন দলটি মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে আগের মধ্যবর্তী নির্বাচনের চেয়ে বেশি আসন দখল করতে পেরেছে কি?
  • প্রতিদ্বন্দ্বিতা: বর্তমানের শাসক দলের মনোনয়নের জন্য কোনও গুরুতর প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে কি না ?
  • ক্ষমতা: বর্তমান রাষ্ট্রপতি কি আবারও প্রার্থী হয়েছেন ?
  • তৃতীয় পক্ষ: কোনও উল্লেখযোগ্য তৃতীয় পক্ষ আছে ?
  • স্বল্পমেয়াদী অর্থনীতি: নির্বাচনী প্রচারের সময় অর্থনৈতিক মন্দা আছে?
  • দীর্ঘমেয়াদী অর্থনীতি: শেষ পাঁচ বছরে বার্ষিক প্রকৃত মাথাপিছু অর্থনৈতিক বৃদ্ধি আগের দুই মেয়াদে গড় বৃদ্ধির সমান বা তার চেয়ে বেশি নাকি কম ?
  • নীতিগত অবস্থান: বর্তমান প্রশাসনের জাতীয় নীতি কোনও বড় সামাজিক পরিবর্তনগুলিকে প্রভাবিত করেছে?
  • সামাজিক অস্থিরতা: গত পাঁচ বছরে কোনও স্থায়ী সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে?
  • কেলেঙ্কারি: বড় ধরনের কেলেঙ্কারিতে প্রশাসন কি নিষ্ক্রিয়?
  • বিদেশী/সামরিক ব্যর্থতা: প্রশাসন বিদেশি বা সামরিক বিষয়ে কোনও বড় ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়েছে কি?
  • বিদেশী/সামরিক সাফল্য: প্রশাসন বিদেশি বা সামরিক বিষয়ে বড় সাফল্য অর্জন করেছে কি?
  • বর্তমান প্রেসিডেন্টের ক্যারিশমা: বর্তমান দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর কি নিজস্ব ক্যারিশম্যা আছে? বা তিনি কি জাতীয় বীর ?
  • চ্যালেঞ্জারের ক্যারিশমা: প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দলের প্রার্থীর কি নিজস্ব ক্যারিশম্যা আছে? বা তিনি কি জাতীয় বীর?

আরো পড়ুন:- ১ নভেম্বর থেকে ট্রেনের টিকিট বুকিংয়ে বড় বদল, জানুন রিজার্ভেশনের নয়া নিয়ম

এই রকম খবর পেতে দয়া করে আমাদের চ্যানেল ফলো করুন

আরো খবর দেখুন :- বিনা সুদে 5 লাখ টাকা লোন দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। কিভাবে আবেদন করবেন জেনে নিন

আরো খবর দেখুন :- জানেন ভারতের পূর্বনাম কি ছিল ? কিভাবে এল আর্যরা ? জানুন অজানা ইতিহাস

আরো খবর দেখুন : শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যাথার সমস্যায় ভুগছেন ? দ্রুত মুক্তি দেবে হোমিওপ্যাথি

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন