রেজ়াল্টে মার্কসের বদলে ইমোজি? রাজ্যে প্রাথমিকের মূল্যায়নে বড় বদলের ইঙ্গিত

By Bangla News Dunia Rajib

Published on:

result

Bangla News Dunia , Rajib : রেজাল্ট বেরলেই পড়ুয়া থেকে বাবা–মায়েদের নজর থাকে রিপোর্ট কার্ডের নম্বরের উপরে। কোন সাবজেক্টে কত নম্বর এলো তা নিয়ে চলে আলোচনা, ভাবনা–চিন্তা। বেশি নম্বরে উচ্ছ্বাস আর কম নম্বরে মন খারাপ, বকাবকি— এই তো শিক্ষার চেনা ছবি। কিন্তু রেজাল্ট বেরলো আর নম্বরটাই যদি সেখানে না থাকে, বা নম্বর হয়তো থাকলো কিন্তু রেজাল্টে সেটা মুখ্য নয়, গৌণ হয়ে গেল।

ফার্স্ট বেঞ্চের মার্কস হয়তো রাতারাতি চলে গেল লাস্ট বেঞ্চে! অন্তত রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলের মূল্যায়ন নিয়ে এমনই বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। তিনি জানিয়েছেন, অচীরেই রাজ্যে এমন একটি মূল্যায়ন ব্যবস্থা প্রাইমারি স্কুলগুলির পড়ুয়াদের জন্য আনা হবে যা নম্বর কেন্দ্রীক হবে না।

তাঁর ভাষায়, ‘মার্কস সেখানে গৌণ হবে।’ কিন্তু কীভাবে তাহলে পড়ুয়াদের অ্যাসেসমেন্ট করা হবে তার নানা উপায় নিয়ে এক্সপার্টদের মতামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। গৌতমের আশা, আগামী কিছুদিনের মধ্যেই তা ঠিক করে শিক্ষা দপ্তরের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। তারপরে প্রকাশ্যে আনা হবে সেই ফর্মুলা।

গৌতম জানাচ্ছেন, বর্তমান সিস্টেমে বছরে তিন বার প্রাইমারির পড়ুয়াদের মূল্যায়ন করা হয়। পুরো মূল্যায়নটাই হয় পেন–পেপার ভিত্তিক। অর্থাৎ পরীক্ষার পর রেজাল্ট প্রকাশ করা হয়। সেখানে থাকে নম্বর বা মার্কস। কিন্তু আধুনিক শিক্ষা প্রণালীর কথা মাথায় রেখেই মার্কস ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন চাইছে পর্ষদ।

আরো পড়ুন:- ২১৩ কোটি জরিমানা, ৫ বছর ব্যান! ভারতে বড় ধাক্কা খেল Meta

এমনিতেই রাজ্যে হোলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। যেখানে মার্কস ছাড়াও পড়ুয়ারা ক্লাসে কতটা মেলামেশা করে, এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিতে তার কতটা আগ্রহ, বন্ধুদের সঙ্গে ব্যবহার কেমন, কতটা সে সৃজনশীল— এই সব বিষয়েই নানা মন্তব্য করে রেজাল্ট প্রকাশ করা হবে। কিন্তু তারপরও নম্বরটাই সেই রেজাল্টেও মুখ্য।

গৌতমরা চাইছেন, মার্কস বিষয়টা নিয়ে বাবা–মা থেকে শুরু করে বাচ্চাদের মধ্যে যে মানসিক উচাটন থাকে তার থেকেই মুক্ত করার প্রচেষ্টা। শিশুমনে যাতে একেবারে ছোটবেলা থেকেই ইঁদুর দৌড়ের মানসিকতা না তৈরি হয়, মার্কস নিয়ে বাবা–মায়েদের মধ্যেও যাতে প্রতিযোগিতা সুলভ মানসিকতা এত দ্রুত না তৈরি হয়, সেই কারণেই পর্ষদের এমন ভাবনা।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মার্কস যদি পিছনের সারিতেই চলে যায়, তাহলে মূল্যায়ন হবে কীভাবে?

এই প্রসঙ্গেই কেরালার একাধিক সিবিএসই স্কুল সম্প্রতি একটি অভিনব পদক্ষেপের কথা সামনে এনেছে। বোর্ডের গাইড লাইন অনুযায়ী কিন্ডারগার্ডেন থেকে ক্লাস টু থ্রি পর্যন্ত খুদে পড়ুয়াদের মার্কসের বদলে রেজাল্টে ইমোজি দেওয়া শুরু করেছে। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন, হোয়াটসঅ্যাপ, এমএসএসেক স্মাইলি, স্যাড, অ্যাংরি ইমোজির মাধ্যমেই পড়ুয়াদের এই মূল্যায়ন করা চলছে।

আরো পড়ুন:- ২৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ নবান্নর, উপকৃত হবেন ১ কোটি ৭ লক্ষ মানুষ, বড় প্রকল্প রাজ্য সরকারের

ধরা যাক কেউ খুব ভালো নম্বর পেল তাহলে সেই পড়ুয়া বিগ স্মাইলি পাচ্ছে, আবার ধরা যাক কেউ ততটা ভালো নম্বর পেল না তাহলে সে স্মল স্মাইল পাচ্ছে। কারও নম্বর হয়তো খুবই খারাপ এলো, তার রেজাল্টে স্যাড ফেস থাকল— এই ভাবেই পড়ুয়াদের মূল্যায়ন করার টোটকা খুঁজে বের করা হয়েছে।

কলকাতাতেও অনেক স্কুল ক্লাস টেস্টে বা প্রজেক্টে এই প্রথা অনুসরণ করে বলে শিক্ষা মহলের অনেকে জানাচ্ছেন। এমপি বিড়লা স্কুলের জুনিয়র সেকশনের ভাইস প্রিন্সিপাল শ্রাবণী রায়চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ক্লাস টেস্টে কখনও কখনও ইমোজি ব্যবহার করি। কিন্তু পরীক্ষার রেজাল্টে গ্রেড দেওয়া হয়। এ, বি, সি এই ভাবে পড়ুয়াদের মূল্যায়ন করা হয়।’

যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্যর কথায়, ‘অনেক দিন ধরেই আমরা পড়ুয়াদের খাতায় লাল কালির ব্যবহার কমিয়ে এনেছি। নম্বরের ভিত্তিতে রোল নম্বর বা সেকশন ঠিক করাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’ ফলে কলকাতাতেও অনেক স্কুলই ভাবতে শুরু করেছে নম্বরের দৌড় থেকে কীভাবে পড়ুয়াদের যতটা সম্ভব দূরে রাখা যায়।

এই রকম খবর পেতে দয়া করে আমাদের চ্যানেল ফলো করুন

আরো পড়ুন :- মণিপুর সংকটের অবসানে চাই হস্তক্ষেপ, রাষ্ট্রপতিকে চিঠি খাড়গের

আরো পড়ুন :- সরল বাধা, পার্পল লাইনে দুরন্ত গতিতে হবে মেট্রোর কাজ! জোকা-বিবাদী বাগ রুট নিয়ে সুখবর

আরো পড়ুন :- বন্দে ভারতের খাবারে পোকা! অভিযোগ উঠতেই ক্যাটারিং সংস্থাকে ৫০ হাজার ফাইন রেলের

Bangla News Dunia Rajib

মন্তব্য করুন