লাভ বেড়েছে ব্যবসায়, কিন্তু বেতন বাড়েনি কর্মীদের, টনক নড়ল সরকারেরও

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ধাক্কা খেয়েছে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি। জুলাই-সেপ্টেম্বরে দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার কমে এসেছে ৫.৪ শতাংশে। আর সেই তথ্যই এ বার ঘুম উড়িয়েছে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। আলোচনায় উঠে এসেছে বেতন বৃদ্ধির হার তলানিতে চলে যাওয়ার বিষয়টি। গত চার বছরে কর্পোরেট সেক্টরে বেসরকারি সংস্থাগুলির লাভ অনেকটা বাড়লেও সেখানকার কর্মীদের বেতন তেমন বাড়েনি। তার জেরেই ধাক্কা লেগেছে চাহিদায়। FICCI এবং Quess Corp Ltd-এর তৈরি একটি রিপোর্টেই উঠে এসেছে এমন তথ্য। সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৬টি সেক্টরে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির হার,বাজারে মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় অতি সামান্য।

রিপোর্টে যা উঠে এসেছে তা উদ্বেগের জন্য যথেষ্ট। বেশ কিছু সেক্টরে বেতন বৃদ্ধি এতটাই নগণ্য হয়েছে যে, তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে জীবনযাপনের মানে। মূল্যবৃদ্ধি বা মুদ্রাস্ফীতির তুলনায় বেতন বৃদ্ধি অনেকটাই কম হওয়ায়, কর্মীদের প্রকৃত আয় কার্যত প্রায় নগণ্য হয়েছে। কোথাও কোথাও প্রকৃত আয় কমেও গিয়েছে। ২০১৯-২০ থেকে ২০২৩-২৪ সাল পর্যন্ত খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার যথাক্রমে ছিল ৪.৮%, ৬.২%, ৫.৫%, ৬.৭%, ৫.৪%। সেই তুলনায় বেতনই বাড়েনি।

সম্প্রতি FICCI-Quess রিপোর্ট উদ্ধৃত করে একাধিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছেন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরণ। ভারতীয় ব্যবসায়ী মহলকেও বিষয়টি নিয়ে ভাবতে বলেছেন।

আরো পড়ুন:- মাশরুমের উপকারিতা জুরি মেলা ভার ! কি জানালেন পুষ্টিবিদ?

ইন্ডিয়ার এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন সূত্রের খবর, কম আয়ের কারণেই চাহিদায় ধাক্কা লেগেছে। বিশেষ করে শহরে এই প্রবণতা অনেকটাই বেশি। কোভিডের পরে চাহিদা বেশ কিছুটা বাড়লেও, বেতন বৃদ্ধির হার কম থাকায় সময়ের সঙ্গে তা কমে এসেছে। FICCI-Quess-এর রিপোর্ট গণমাধ্যমে নেই। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সেই রিপোর্ট হাতে পেয়ে তার ভিত্তিতে যে প্রতিবেদন করেছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে ২০১৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত বেতনের কম্পাউন্ড অ্যানুয়াল গ্রোথ রেট ঠিক কী রকম। FMCG সেক্টরে এটা সবচেয়ে বেশি ৫.৪ শতাংশ, BFSI অর্থাৎ ব্যাঙ্কিং, আর্থিক পরিষেবা, বিমা সেক্টরে এই অঙ্কটা ২.৮ শতাংশ, রিটেল সেক্টরে ৩.৭ শতাংশ, আইটি-তে ৪ শতাংশ, লজিস্টিকে ৪.২ শতাংশ, EMPI অর্থাৎ ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যানুফাকচারিং, প্রসেস অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সেক্টরে সবচেয়ে কম, মাত্র ০.৮ শতাংশ। আর যদি গড় বেতনের অঙ্ক ধরা হয়, সেটা সবচেয়ে কম FMCG সেক্টরে, গড় বেতন সবচেয়ে বেশি আইটি সেক্টরে।

৫ ডিসেম্বর অ্যাসোচ্যামের একটি অনুষ্ঠানে নাগেশ্বরণ জানান, কোনও সংস্থার মোট আয়ের ভাগাভাগিতে আরও বেশি ভারসাম্য আনা উচিত। লাভের খাতের সঙ্গেই কর্মীদের বেতনেও তার অংশ যাওয়া উচিত। এমন না হলে বাজারে ওই কর্পোরেট সংস্থাগুলির তৈরি জিনিসের চাহিদাও থাকবে না বলে সতর্ক করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘কর্মীদের ঠিকমতো টাকা না দিলে বা যথেষ্ট কর্মী নিয়োগ না করলে আদতে ব্যবসার জন্যই ক্ষতি হবে।’ ২০২৪ সালের মার্চে কর্পোরেট সংস্থাগুলির প্রফিটিবিলিটি ১৫ বছরে সর্বোচ্চ ছিল বলেও জানান তিনি।

২০০৮-এর সঙ্গে তুলনা টেনে তিনি জানান, ওই সময়টা মার্কেট বুম ছিল। তারপরে কোভিড সময়কাল এবং আনুষাঙ্গিক বিশ্ব পেরিয়ে ২০২৪ সালে যা হয়েছে, তাতেই বোঝা যায় প্রফিটেবিলিটি কতটা বেড়েছে। অন্যদিকে ভারতীয় সংস্থাগুলিতে ক্রমশ কমেছে কর্মী সংক্রান্ত খরচ। কর্মীদের আয়ও ক্রমশ কমেছে। আর এই বিষয়টি নিয়েই ভাবছে সরকারও।

আরো পড়ুন:- খাচ্ছি খাবার, গিলছি ‘বিষ’! শহরের খাবারের পুর–রিপোর্ট, কি জানা গেলো? 

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন