‘এক দেশ এক নির্বাচন’ চালু হলে কী ভাবে ভোট দেবেন নাগরিকরা? সুবিধা-অসুবিধা জেনে নিন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পেশ করা হলো ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ বিল। ২৬৯-১৯৮ ভোটাভুটিতে লোকসভায় জয় কেন্দ্রের। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল এই বিল পেশ করেন লোকসভায়। তীব্র বিরোধিতা জানায় ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরামর্শ অনুযায়ী এই বিল এ বার সংসদের যৌথ কমিটিতে যাবে। সেখানে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভার স্পিকারদের সঙ্গে আলোচনা করে, বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শ এবং জাতীয় নির্বাচন কমিশনের মতামত নিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর পরিকল্পনা কেন্দ্রের। এর পর বিল পাশ হলে পৌঁছবে রাজ্যসভায়। সেখানে পাশ হলে সই করবেন রাষ্ট্রপতি। তবে সেটি পরিণত হবে আইনে। কিন্তু জানেন কি এই ‘এক দেশ এক ভোট’ পদ্ধতি চালু হলে কী ভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ভোটাররা?

এক দেশ এক নির্বাচন কী?

সহজ কথায় এর অর্থ হল গোটা দেশে একই সময়ে হবে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন। অর্থাৎ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মেয়াদ শেষ হবে একই সময়ে। বর্তমানে আমাদের দেশে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন ভিন্ন ভিন্ন সময়ে হয়। যে রাজ্যে যখন সরকারের মেয়াদ শেষ হয়, তখন সেই রাজ্যে হয় বিধানসভা নির্বাচন।

আরো পড়ুন:- সুখবর! ১৯,৯০০ টাকা বেতন, মাধ্যমিক পাশে ভারতীয় পোস্ট অফিসে প্রচুর কর্মী নিয়োগ! শীঘ্রই এভাবে আবেদন করুন

এক দেশ এক নির্বাচনের সুবিধা কী কী? কী কী যুক্তি দিচ্ছে কেন্দ্র?

> প্রথমত, এই নিয়ম চালু হলে কমবে নির্বাচনের খরচ। প্রতি নির্বাচনে বিপুল টাকা ব্যয়ের বোঝা হালকা হবে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে খরচ হয়েছিল ৬০ হাজার কোটি টাকা। বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিটি রাজ্য বিপুল অর্থ ব্যয় করে। যদি এক দেশ এক নির্বাচন ব্যবস্থা হয় তবে এই খরচ অনেকটাই কমবে বলে আশাবাদী কেন্দ্র।

> দ্বিতীয়ত, এক দেশ এক নির্বাচন হলে প্রশাসনিক দক্ষতা ও কার্যক্ষমতাও অনেকাংশে বাড়বে। লোকসভা বা বিধানসভা প্রতিটি নির্বাচনের সময়ে বহু সরকারি কর্মীকে কাজে লাগানো হয়। এতে প্রভাব পড়ে প্রশাসনিক কাজে। যদি একই সময়ে নির্বাচন হয়, তবে প্রশাসনিক কাজে প্রভাব কম পড়বে। লোকবল ও সময় বাঁচবে।

> তৃতীয়ত, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নীতি এবং কর্মসূচির বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও এই নীতি সহায়ক হবে। প্রতিটি নির্বাচনের আগেই লাগু হয় আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধি। এর ফলে ঘোষণা করা যায় না নতুন কোনও সরকারি প্রকল্প। যদি এক সময়ে গোটা দেশে নির্বাচন হয়, তবে বিভিন্ন সময়ে নতুন প্রকল্প চালু করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা তৈরি হবে না।

> চতুর্থত, বিলের সমর্থনে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের দাবি, গোটা দেশে একসঙ্গে নির্বাচন হলে ভোটারদের মধ্যে তার ভালো প্রভাবই পড়বে। সকলে একসঙ্গে ভোট দেবেন। এতে বাড়বে ভোটের হারও।

এক দেশ এক নির্বাচনের সমস্যাগুলি কী কী?

> প্রথম প্রতিবন্ধকতাই হলো সংবিধান সংশোধন। রাজ্যের বিধানসভা ও লোকসভার মেয়াদকে একই সময়ের মধ্যে বাঁধতে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন করতে হলে বদল আনতে হবে সংবিধানেও। পাশাপাশি পরিবর্তন করতে হবে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন এবং সংসদের কার্যপ্রণালীতেও।

> দ্বিতীয়ত, এক দেশ এক নির্বাচনের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলির সব থেকে বড় চিন্তা হলো, তারা আঞ্চলিক সমস্যাগুলিকে তুলে ধরতে পারবেন না। কেন্দ্রীয় ইস্যুগুলিই গুরুত্ব পাবে প্রচারে। নির্বাচনী পরিকল্পনাতেও সমস্যা তৈরি হবে। আঞ্চলিক দলগুলির পুঁজিও কম। তাই সে ক্ষেত্রে জাতীয় স্তরের দলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রচার বা খরচ করাও সম্ভব হবে না আঞ্চলিক দলগুলির পক্ষে।

> তৃতীয়ত, একই সময় রাজ্য ও কেন্দ্রের ভোট হলে প্রভাবিত হতে পারেন ভোটাররা। এ নিয়ে ২০১৫ সালে একটি সমীক্ষা হয়েছিল। সেই সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, একই সময়ে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন হলে, ৭৭ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে ভোটাররা একই দলকে দুই নির্বাচনে সমর্থন করবেন। তার বদলে যদি ছয় মাসের ব্যবধানে দুই নির্বাচন হয়, তবে ৬১ শতাংশ ভোটাররা বেছে নিতে পারে আলাদা আলাদা দলকে।

আরো পড়ুন:- দেশি’ এবং ‘বিদেশি’ মুসলমানদের লড়াই, বিস্ফোরক দাবি যোগীর

 

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন