Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- চিকেনস নেক–এ দীর্ঘদিন ধরেই নজর রয়েছে চিনের। বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই এলাকায় গোলমাল পাকিয়ে উত্তর–পূর্বের সেভেন সিস্টার্স অর্থাৎ সাত রাজ্যকে অশান্ত করাই ছিল ধৃত আনসারুল্লা বাংলা টিম (এবিটি)–এর জঙ্গিদের উদ্দেশ্য। এর বাইরে বাংলা এবং পড়শি রাজ্যগুলিকে অশান্ত করার নির্দিষ্ট অ্যাসাইনমেন্ট ছিল এবিটি–র জঙ্গিদের।
গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ধৃত জঙ্গিদের বেশ কিছু ধর্মীয় নেতা এবং প্রভাবশালীদের তালিকা দেওয়া হয়েছিল। এই খতম–তালিকায় এমন কিছু নাম ছিল, যা জেনে চোখ কপালে উঠেছে এসটিএফ কর্তাদের। খুন করে এলাকা অশান্ত করার পাশাপাশি জাতি দাঙ্গা বাধানোর ব্লু–প্রিন্টও তৈরি করেছিল জঙ্গিরা।
আরো পড়ুন:– বিনামূল্যে রেশন সামগ্রীর সঙ্গে 1000 টাকা পাবেন? বিস্তারিত জানতে পড়ুন
পালা বদলের পরে বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যকলাপের দায়ে ধৃতরা বর্তমানে মুক্ত। এই অবস্থায় বাংলা–সহ পড়শি রাজ্যগুলিকে অশান্ত করে ফায়দা তোলা বাংলাদেশের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির মূল উদ্দেশ্য। এসটিএফ জানতে পেরেছে, ধৃতেরা যে বিশেষ ফোন অ্যাপের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখত তাতে পাকিস্তানের কিছু জঙ্গির উপস্থিতিও ছিল। তবে অভিযুক্ত পাক–জঙ্গিদের পরিচয় এখনও স্পষ্ট নয়।
অসম পুলিশের এসটিএফ এ বিষয়ে যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ধৃত নুর ইসলাম এবং তাঁর সঙ্গীরা গত দু’মাসে ফরাক্কা, ধুলিয়ান, ভগবানগোলায় একাধিক গোপন বৈঠক করেছিলেন। তাতে একটি ধর্মীয় সংগঠন এবং বেশ কিছু হিন্দু নেতাকে খতম করার স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। যা কার্যকর করার কথা বলা হয়েছিল। এই কাজে বেশ কয়েকজনকে আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করার ভার দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:– হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা পাকিস্তানের ২০ গুণ বাংলাদেশে, তথ্য বিদেশ মন্ত্রকের
ওই বৈঠকে নুর ইসলাম এবং অন্যরা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন নিজেদের গেমপ্ল্যান। অসম এসটিএফের রিপোর্টে বলা হয়েছে, জঙ্গিদের মূল উদ্দেশ্য ছিল, জাতিগত ঐক্য নষ্ট করে দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি করা। এর ফলে সীমান্তবর্তী এলাকায় টেনশন তৈরি হবে। আর সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলি অশান্ত হলে আখের লাভ জঙ্গি গোষ্ঠীদের। সেই সুযোগে নতুন করে ও পার থেকে আরও জঙ্গিদের এ পারে আসার ছক ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে বাংলাদেশের বেশ কিছু সংগঠন। এর আড়ালে রাজনৈতিক দলও থাকতে পারে বলে মত গোয়েন্দাদের। এবিটি–র মাধ্যমে সেই কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। গোয়েন্দাদের এই ধারণা আরও দৃঢ় হয়েছে কারণ, ধৃতদের কাছ থেকে যে সব নথি মিলেছে, তাতে স্পষ্ট যে, ভারত সরকারের বিরুদ্ধে জিহাদকে তারা নিজেদের যুদ্ধ বলেই বর্ণনা করেছে।
গত দু’বছরে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ এবং পড়শি রাজ্যের পুলিশের হাতে ‘আল কায়দার ইন্ডিয়ান সাব কন্টিনেন্ট’ (আকিস) এবং এবিটি–র বেশ কিছু জঙ্গি গ্রেপ্তার হয়েছে। এদের মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় ২০। সেই ধরপাকড়ের পরে জঙ্গিদের ওই মডিউল অনেকটাই ধাক্কা খায়। ফলে নতুন করে আবার সংগঠন বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েছিল ওই দুই জঙ্গি সংগঠন। রাজ্য পুলিশের এসটিএফ সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত মণিরুল শেখ সম্প্রতি একটা ছোট মাদ্রাসা চালু করেছিলেন। যেখানে পড়ুয়া ছিল ১০–১২ জন খুদে। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, এলাকার সমমনস্কদের সংগঠনে টেনে আনা। আপাতত ধৃতদের সহযোগী কারা, তাঁদের খোঁজে রয়েছেন গোয়েন্দারা।