Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- মাছ দিতে এসে দুয়ারে চাপ চাপ রক্ত পড়ে থাকতে দেখে চমকে উঠেছিলেন ব্যবসায়ী। দুয়ারে একটি চিঠিও পেয়েছিলেন তিনি। যেখানে লেখা, ‘বাবাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য চেন্নাইয়ে যাচ্ছি’। ২ সদস্যের সংসারে কেউ না থাকলে দরজায় তালা দেওয়া থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মন মানছিল না মাছ বিক্রেতার। তিনি পাড়ার লোকজনকে ডেকে দরজা ভাঙতেই শিউরে উঠেছিলেন সকলে। বাড়ির কর্তার দেহ কম্বলে মুড়ে রাখা আলমারিতে। মেঝেতে চাপ চাপ রক্ত। এখানেই শেষ নয়, পুলিশ সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার করে আরও একটি দেহ।
সোমবার সকালে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহারের ডাউয়াগুড়ির বৈশ্যপাড়ায়। মৃতদের নাম বাবুল চন্দ্র বৈশ্য (৬০) এবং গোপাল রায় (৪০)। তাঁরা সম্পর্কে আত্মীয়। বাবুলের ছেলে প্রণব বৈশ্যই নিজের বাবা এবং পিসতুতো দাদাকে খুন করে এলাকা ছেড়েছেন, দৃঢ় সন্দেহ পুলিশের। অভিযুক্ত এখনও পলাতক।
স্থানীয়দের দাবি, বৈশ্য পরিবারের ৩ সদস্য। বাবা বাবুল চন্দ্র বৈশ্য ও তাঁর স্ত্রী এবং তাঁদের একমাত্র ছেলে প্রণব। তবে প্রণবের পিসতুতো দাদা গোপাল রায়ও তাঁদের সঙ্গে থাকতেন।
কিছুদিন আগেই বাবুলের স্ত্রীর মৃত্যু হয়। পরিবারের ছিলেন বাবুল, প্রণব এবং গোপাল। কিন্তু এরই মধ্যে রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে যান গোপালও। সেই সময়েই প্রণবই থানায় দাদার নামে ‘মিসিং ডায়েরি’ করেছিলেন। এরপর বাবার সঙ্গে থাকতেন প্রণব। কোভিডের সময়ে থেকেই নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন প্রণব, দাবি স্থানীয়দের। মা, বাবা এবং পিসতুতো দাদার সঙ্গে হামেশাই অশান্তি করতেন তিনি।
আরো পড়ুন:– সবুজ হচ্ছে ভারত, দেশে বৃদ্ধি পেয়েছে বনাঞ্চল, কোন রাজ্যে সবথেকে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে জানুন
এক মাছ বিক্রেতাকে সোমবার বাড়িতে মাছ দিয়ে যেতে বলেছিলেন বাবুল। কিন্তু ওই বিক্রেতা বাড়িতে গিয়ে দেখেন দরজায় তালা ঝুলছে। কিন্তু মেঝেতে রক্ত পড়ে থাকতে দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। স্থানীয়দের ডাকাডাকি করেন তিনি। সকলে মিলে দরজা ভেঙে বাড়ির মধ্যে ঢুকে বাবুলের দেহ উদ্ধার করেন। তাঁরাই খবর দেন পুলিশ। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে গোটা বাড়িতে তল্লাশি চালায়। সেই সময়েই সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হয় গোপাল রায়ের দেহ। কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য-সহ পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। দু’টি দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি প্রণবের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, প্রণবই দাদা এবং বাবাকে খুন করেছেন। সকলের নজর এড়ানোর জন্য ওই চিঠিও সেই লিখেছিলেন বলে অনুমান তদন্তকারীদের। তাঁর মায়ের মৃত্যুও অস্বাভাবিক বলে দাবি এলাকাবাসীর।
এই গোটা ঘটনায় হতবাক গ্রামবাসীরা। তাঁদের কথায়, ‘প্রণব শিক্ষিত ছেলে। বৈশ্য পরিবারের আর্থ-সামাজিক অবস্থান ভালো। লকডাউনের সময় নেশায় ডুব দিতে শুরু করেন তিনি। তবে তাঁর পরিণতি যে এই হবে, তা ভাবতেও পারিনি।’ তবে তাই খুনের কারণ কি না, তা স্পষ্ট নয়।
আরো পড়ুন:– ভারতীয়দের প্রিয় পানীয়কে এতদিনে ‘স্বাস্থ্যকর’ বলে অনুমোদন দিল US FDA