Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পশ্চিমবঙ্গের দোরগোড়ায় নতুন ভাইরাস। উদ্বেগে চিকিৎসকমহলও। ভরা শীতে প্রতিবেশী বাংলাদেশে খোঁজ মিলেছে রিওভাইরাসের। এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনের শরীরে এই ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে বলে খবর। এই রোগে এখনও পর্যন্ত কারও মৃত্যু না হলেও ভবিষ্যতে ভাইরাসটি চরিত্র বদল করে কিনা, সে দিকে নজর রাখছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, যে পাঁচ রোগীর দেহে রিওভাইরাস মিলেছে—তাঁরা প্রত্যেকেই খেজুরের রস পান করেছিলেন। তার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁদের দেহে ব্যাট রিওভাইরাসের সন্ধান মেলে।
মনে করা হচ্ছে, খেজুরের রস থেকেই রিওভাইরাসের সক্রমণ ঘটেছে তাঁদের শরীরে। মূলত বাদুড় থেকে এই ভাইরাস মানবদেহে সংক্রমিত হয়। শীতের সময়ে খেজুর রস সংগ্রহে অনেকে গাছে মাটির কলসি বেঁধে রাখেন। খেজুর রস পান করার জন্যে বাদুড় এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখিও তাতে মুখ দেয়। তার সুবাদে সহজেই বাদুড় থেকে মানবদেহে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। আর সেটাই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে চিকিৎসকদের।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বাংলাদেশের মতো পশ্চিমবঙ্গেও শীতের সময়ে বহু মানুষ খেজুরের রস পান করেন। তাই এ রাজ্যেও রিওভাইরাসের অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। তবে একই সঙ্গে তাঁরা এই বলে আশ্বস্ত করছেন, রিওভাইরাসে আক্রান্ত হলেও এখনও পর্যন্ত ভয়ের কারণ নেই। রিওভাইরাসে আক্রান্ত হলে কিছু সাধারণ উপসর্গ দেখা যায়। যেমন, শ্বাস–প্রশ্বাসের সমস্যা, জ্বর, মাথাব্যথা, বমি ও ডায়েরিয়া। আলাদা কোনও চিকিৎসা নেই। সাধারণ ফ্লু অর্থাৎ জ্বর–সর্দি–কাশির যা চিকিৎসা, এ ক্ষেত্রেও তাই।
আরও পড়ুন:– লস অ্যাঞ্জেলেসে ছড়ানো হচ্ছে পিঙ্ক পাউডার, কী ভাবে রাক্ষুসে আগুন সামলাচ্ছে এই উপাদান?
সারা পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত চারটি রিওভাইরাসের সন্ধান মিলেছে। মূলত দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে প্রাদুর্ভাব বেশি। চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরির ব্যাখ্যা, ‘এই রোগটা প্রথম ধরা পড়েছিল টেক্সাসে। সাধারণত বাদুড়ের লালাগ্রন্থীর মধ্যে ভাইরাসটা পাওয়া যায়। এটাকে আগে বলা হতো ‘ইউএস ব্যাট সালাইভারি গ্ল্যান্ড ভাইরাস’ অথবা ‘ক্যালিফোর্নিয়া ব্যাট স্যালাইভারি ভাইরাস’।
এই ভাইরাস বাদুড়দের তেমন ক্ষতি করে না। বাদুড়রা যদি কাউকে কামরায় সে ক্ষেত্রে তাঁর শরীরে সংক্রমিত হতে পারে। বাদুড়রা যদি খেজুর রসে মুখ দেয়, সে ক্ষেত্রে লালা তাতে মিশে যায়। সেই রস পান করলে ভাইরাস মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ভাইরাল ফিভারের মতো হয়। খুব বাড়াবাড়ি হলে কোমা, প্যারালিসিস পর্যন্ত হতে পারে।’
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজির ভাইরোলজিস্ট সৌরীশ ঘোষ বলেন, ‘আমাদের দেশে এক সময়ে লিচি ভাইরাসের প্রকোপ হয়েছিল। সেটাও বাদুড় থেকে ছড়িয়েছিল। বাদুড়ের শরীরে অনেক ধরনের ভাইরাস থাকে। বাংলাদেশের পর এখানেও ভাইরাস ছড়াতে পারে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা বেশি।’
আরও পড়ুন:– অবশেষে সিদ্ধান্ত হয়ে গেল! ডিএ পাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। কবে, কতটা বাড়ছে ডিএ ? জেনে নিন
আরও পড়ুন:– বঙ্গে বাল্যবিবাহ রোধে বাধা পঞ্চায়েত-রাজনীতি?