Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- চলতি বছরের মার্চের মধ্যে চার লক্ষ প্রিপেড স্মার্ট মিটার বসানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। গোটা রাজ্যে কেন্দ্রের ‘রিভ্যাম্পড ডিস্ট্রিবিউশন সেক্টর স্কিম’ (আরডিএসএস)–এর আওতায় ৪৫ লক্ষ প্রিপেড স্মার্ট মিটার বসানোর যে কর্মসূচি বণ্টন সংস্থা নিয়েছে, তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৬০ হাজারের মতো মিটার বসেছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, সরকারি সংস্থার অফিস, কলকারখানা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মতো বণ্টন সংস্থার বড় গ্রাহকের ঠিকানায় ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ ১০ হাজারের মতো প্রিপেড স্মার্ট মিটার বসিয়েছে ইসক্রামেকো ইন্ডিয়া। এ ছাড়া বারাসত, মধ্যমগ্রাম ও কল্যাণীতে ৫০ হাজারের কিছু বেশি গার্হস্থ্য গ্রাহকের ঠিকানায় প্রিপেড স্মার্ট মিটার বসিয়েছে বণ্টন সংস্থা। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ইসক্রামেকো আরও ৫০ হাজার ও বণ্টন সংস্থা দেড় লক্ষের মতো মিটার বসানোর লক্ষ্যে কাজ করছে।
এক প্রশাসনিক সূত্র বলেন, ‘বণ্টন সংস্থা যে ৫০ হাজারের মতো প্রিপেড স্মার্ট মিটার বসিয়েছে, তার মধ্যে ২৩ হাজার গ্রাহককে প্রিপেডে কনভার্ট করা হয়েছে। অর্থাৎ, তাঁরা এখন মোবাইলে রিচার্জের মতো বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে আগাম টাকা ভরছেন। বিদ্যুৎ খরচ করার পর সেই টাকা ফুরিয়ে গেলে তাঁদের আবার রিচার্জ করতে হবে। ন্যূনতম রিচার্জ অ্যামাউন্ট ১০০ টাকা।’
আরও পড়ুন:– লস অ্যাঞ্জেলেসে ছড়ানো হচ্ছে পিঙ্ক পাউডার, কী ভাবে রাক্ষুসে আগুন সামলাচ্ছে এই উপাদান?
হঠাৎ করে অ্যাকাউন্টে জমা থাকা টাকা ফুরিয়ে গেলে কি গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ তৎক্ষণাৎ চলে যাবে?
অন্য এক সূত্র জানিয়েছেন, না, সেটা হবে না। কারণ, বণ্টন সংস্থা সব প্রিপেড গ্রাহককেই ৩০০ টাকা ক্রেডিট দিচ্ছে। ফলে, ওই ৩০০ টাকা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারেন্ট যাবে না। আর গ্রাহকও অ্যাকাউন্ট রিচার্জ করার জন্য সময় পাবেন।
বণ্টন সংস্থা প্রিপেড স্মার্ট মিটারের গ্রাহকদের পোস্টপেড গ্রাহকদের তুলনায় ৩ শতাংশ অতিরিক্ত রিবেটও দিচ্ছে। অর্থাৎ, ১০০ টাকা রিচার্জ করলে গ্রাহক ১০৩ টাকার বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন। এ ছাড়া তাঁরা মোবাইল ডাউনলোড করা অ্যাপের মাধ্যমে রিয়েল টাইম বিদ্যুৎ ব্যবহার ও কত টাকা অ্যাকাউন্টে ব্যালান্স রয়েছে, তা জানতে পারবেন।
তবে যে সমস্ত পোস্টপেড মিটার বদলে প্রিপেড স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছে, সেগুলিতে গ্রাহকদের কোনও টাকা দিতে হয়নি। বণ্টন সংস্থাই নিখরচায় মিটার বদলে দিয়েছে। বণ্টন সংস্থার জন্য ৩৭ লক্ষ প্রিপেড স্মার্ট মিটার বসানোর বরাত পেয়েছে তিনটি সংস্থা। প্রতি স্মার্ট মিটার ভাড়া বাবদ বণ্টন সংস্থা মাসে ৬০ টাকা মতো দেবে। ইসক্রামেকো ও আরও একটি সংস্থা যে বাকি ৮ লক্ষ প্রিপেড স্মার্ট মিটার বসানোর বরাত পেয়েছে, সেখানে তারা মূলধন বাবদ বণ্টন সংস্থার কাছ থেকে কিছু অর্থ পাবে।
ভাড়া হোক বা মূলধন, অর্থ তো বণ্টন সংস্থাকেই দিতে হচ্ছে। কেন তারা এই অতিরিক্ত খরচ করছে?
রাজ্যের বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের এক বিশেষজ্ঞের ব্যাখ্যা, ‘চলতি অর্থবছরের প্রথম ন’মাসে বণ্টন সংস্থার নগদ ঘাটতি প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, আয়ের তুলনায় আড়াই হাজার কোটি টাকা বেশি ব্যয় হয়েছে। তার উপর বিদ্যুৎ বণ্টন ও বাণিজ্যিক খাতে ক্ষতি প্রায় ২০ শতাংশ। অনেক জায়গায় বিলিংয়ের ক্ষেত্রেও দক্ষতার অভাব রয়েছে। পোস্টপেডের বদলে প্রিপেড করলে এই সমস্যাগুলির অনেকাংশে সমাধান হবে।’
আরও পড়ুন:– অবশেষে সিদ্ধান্ত হয়ে গেল! ডিএ পাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। কবে, কতটা বাড়ছে ডিএ ? জেনে নিন
আরও পড়ুন:– বঙ্গে বাল্যবিবাহ রোধে বাধা পঞ্চায়েত-রাজনীতি?