ছাত্রীদের জন্য ৫৫% সংরক্ষণ, ছাত্রভোটের বিধি বদলাচ্ছে রাজ্যে?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

vote

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- আট বছর আগে, ২০১৭ সালে রাজ্যের সর্বত্র শেষ ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। এর বছর দুয়েক বাদে, ২০১৯–এ চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোট হলেও তারপরে আর এ নিয়ে সবুজ সঙ্কেত দেয়নি উচ্চশিক্ষা দপ্তর। ফলে থমকেই আছে কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস ইউনিয়ন ইলেকশন।

কিন্তু এ বার সম্ভবত নির্বাচনের পথে বাধা কাটতে চলেছে। নির্বাচনী বিধিতে কিছু বদল আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। ২০১৭–য় নির্বাচনের যে আইন তৈরি হয়েছিল, তাতে বেশ কিছু অ্যামেন্ডমেন্ট আনা হবে বলে খবর। এবং এ ক্ষেত্রে অন্যতম উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনটি আসন সংরক্ষণ নিয়ে।

বস্তুত, গত বছর ২৮ অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ছাত্র সংসদে ছাত্রীদের জন্য অন্তত ৫৫ শতাংশ সংরক্ষণ থাকা উচিত। সূত্রের দাবি, অভিষেকের এই বক্তব্যকে মান্যতা দিয়েই কাজ শুরু করেছে দপ্তর। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রান্তিক জনজাতি, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ছাত্র সমাজেরও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে চাইছে তারা। তা ছাড়া, প্রেসিডেন্ট, জেনারেল সেক্রেটারি–সহ ইউনিয়নের মূল পদগুলিতেও সরাসরি নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সব ক’টি বিষয়ই আপাতত বিকাশ ভবনের ল সেলের বিবেচনাধীন।

আরও পড়ুন:– বিপাকে দিঘার ২৪টি হোটেল, বাসি খাবার বিক্রি, ধরা পড়ল আরও অনেক কিছুই

যাদবপুরের স্টুডেন্টরা সম্প্রতি নির্বাচনের দাবিতে কর্তৃপক্ষের উপরে চাপ সৃষ্টি করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। গত ৭ জানুয়ারি বিকাশ ভবন থেকে ই–মেলে যাদবপুরকে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়। যার নির্যাস — ২০১৭ সালের আইনে বেশ কিছু বদল আসবে। তাই আপাতত অপেক্ষা করা হোক।

এই সূত্রেই সংরক্ষণ, প্রতিনিধিত্ব ইত্যাদি ক্ষেত্রে বদলের কথা জানা যাচ্ছে। কিন্তু কাজটা এগোনোর আগে কিছু আইনি পরামর্শ প্রয়োজন দপ্তরের। এমনিতে মাধ্যমিক–উচ্চ মাধ্যমিকের সঙ্গেই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি। সে দিক থেকে এঁদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো প্রয়োজন। কিন্তু সেটা ৫৫ শতাংশ করার আগে আলোচনা করে নিতে চায় ডিপার্টমেন্ট। দ্বিতীয়ত, শুধু ছাত্রীদের জন্য, নাকি এসটি, এসসি, ওবিসি পড়ুয়াদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতেও সংরক্ষণ দরকার? এই প্রশ্নগুলি নিয়েই আইনি পরামর্শের প্রয়োজন বলে দপ্তরের মত।

এতদিন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে দু’রকম পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়ে এসেছে। যাদবপুর, প্রেসিডেন্সির মতো কিছু ইনস্টিটিউশনে ক্লাস রিপ্রেজ়েন্টেটিভের পাশাপাশি সরাসরি প্রেসিডেন্ট, জেনারেল সেক্রেটারি ইত্যাদি পোস্টে প্রার্থী হতে পারেন পড়ুয়ারা। নির্বাচনও হয় সরাসরি।

কিন্তু বাকি বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই ক্লাস রিপ্রেজ়েন্টেটিভ বাছাইয়ের পর যে দলের সিআর–সংখ্যা বেশি, তারা ইউনিয়ন দখল করে পদাধিকারীদের বেছে নেয়। এতে ইলেকশন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়। প্রচুর প্রার্থীরও প্রয়োজন পড়ে। তাই সার্বিক ভাবে ইউনিয়নের মূল পদাধিকারীদের ক্ষেত্রেও সরাসরি নির্বাচনের ব্যাপারে আইন ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। ২০১৭–র নিয়মে, প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট ঠিক করে প্রিন্সিপালের নেতৃত্বাধীন শিক্ষকদের কমিটি। এতেও বদল আনা হবে বলে সূত্রের খবর।

আরও পড়ুন:– মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশে ভারতীয় কোস্ট গার্ডে প্রচুর নাভিক নিয়োগ চলছে! মাসিক বেতন ২১,৫০০ টাকা

তা ছাড়া, নয়া শিক্ষানীতির ফলে কলেজে এখন চার বছরের কোর্স। ফলে প্রতিনিধিত্বের বহরও বাড়ানো দরকার। নির্বাচিত সংসদের মেয়াদ এক থেকে বাড়িয়ে দু’বছর করা হয় ২০১৭–য়। কিন্তু ফের এক বছরের মেয়াদে ফিরে যাওয়া হবে কি না, আলোচনা চলছে তা নিয়েও।

রাজ্যে এখন কোথাও বৈধ ভাবে তৈরি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন নেই। বহুদিন ধরেই নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি। এ নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু হওয়ায় কী বলছে তারা? এসএফআই–এর রাজ্য কমিটির সদস্য শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্রীদের সংরক্ষণের বিষয়টিকে স্বাগত জানাচ্ছেন। একই সঙ্গে ট্রান্সজেন্ডার এবং বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জন্যও সংরক্ষণের দাবি তাঁর। ছাত্র সংগঠন ডিএসও–র রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘বিধি পরিবর্তনের পাশাপাশি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করাতে হবে।’

টিএমসিপি–র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুদীপ রাহা এই উদ্যোগের জন্য রাজ্যকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ছাত্রীদের যোগদান বাড়ানোর এই উদ্যোগ দেশের কাছে মডেল হতে পারে।’

এখন প্রশ্ন হলো, নির্বাচনটা হবে কবে? শিক্ষামহলের একাংশের বক্তব্য, ২০২৬–এ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে, এ বছরই ছাত্রভোট হতে পারে। যদিও এ ব্যাপারে শিক্ষাকর্তারা মন্তব্য করতে চাননি। প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুরও।

আরও পড়ুন:– প্রথম দিনেই সাবস্ক্রিপশনের ঢল, এই IPO-তে লগ্নি করলে বাম্পার লাভ হতে পারে

 

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন