Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- 15 হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি হাতছাড়া হতে পারে পতৌদি পরিবারের ৷ ফের একবার বিপাকে সইফ আলি খান ৷ শনিবারই তিনি ছাড়া পেয়েছেন হাসপাতাল থেকে ৷ তারপরেই তিনি পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন ৷ ভোপালে পতৌদি পরিবারের 15 হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে ৷ সূত্রের খবর, ‘শত্রু সম্পত্তি আইন’-এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সেই সম্পত্তি দখল নেওয়া হতে পারে ৷ এমনটাই জানিয়েছেন আইনজীবী ৷
বুধবার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ভারতের শত্রু সম্পত্তি আইনের অধীনে ভোপাল নবাবের উত্তরসূরিরা যদি সম্পত্তির আপিল না করেন, তাহলে তা কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে। 13 ডিসেম্বর, 2024-এ মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের আদেশের পর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা মুম্বই-ভিত্তিক শত্রু সম্পত্তির কাস্টোডিয়ান অফিসে এই বিষয়ে কোনও আপিল করা হয়েছে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
বেশ কয়েক বছর ধরেই এই সম্পত্তি দখল নেওয়ার সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ ছিল । ২০২৪-এর ডিসেম্বরে হাই কোর্টের তরফ থেকে সেই স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হয়। আসলে ভোপাল নবাবের সম্পত্তিকে ‘শত্রু সম্পত্তি’ হিসাবে অভিহিত করা হয়েছিল। এরপর সইফ আলি খানের মা তথা অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর (পতৌদি) এবং অন্যান্যরা হাইকোর্টে 2015 সালের 24 ফেব্রুয়ারী সেই আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন ৷
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কর্তৃপক্ষ এই রায় দিয়েছে যে নবাব মুহাম্মদ হামিদুল্লাহ খানের জ্যেষ্ঠ কন্যা আবিদা সুলতান বেগম দেশভাগের পর পাকিস্তানে চলে যান। অতএব, তাঁর উত্তরাধিকারী হওয়ার কথা ছিল এমন সমস্ত সম্পত্তি শত্রু সম্পত্তি হিসাবে কেন্দ্রের হাতে চলে আসবে ৷ সেই আদেশের ওপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ ছিল 13 জানুয়ারি পর্যন্ত। ফলে এ বার পতৌদিদের 15 হাজার কোটির সম্পত্তি দখলের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রদেশ সরকারের সেক্ষেত্রে আর কোনও বাধা রইল না।
নবাব সম্পত্তি দেখাশোনা করা সিনিয়র আইনজীবী এবং বিশেষজ্ঞ জগদীশ ছাভানি 1962 সালের 10 জানুয়ারীর একটি আদেশ উদ্ধৃত করেছেন ৷ যেখানে বলা হয়েছে, 1960 সালে হামিদুল্লাহ খানের মৃত্যুর পর, ভারত সরকার সাজিদা সুলতান বেগমকে একজন শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দেযন ৷ যিনি নবাব হামিদুল্লাহর সমস্ত স্থাবর ও অস্থাবর ব্যক্তিগত সম্পত্তির একমাত্র উত্তরসূরি। এই ধরনের সম্পত্তি সাজিদা সুলতান বেগমের কাছে হস্তান্তরে ভারত সরকারের কোনও আপত্তি নেই। সাজিদা সুলতান বেগম নবাব হামিদুল্লাহর দ্বিতীয় কন্যা এবং জ্যেষ্ঠ কন্যা (আবিদা) পাকিস্তানে চলে যাওয়ার কারণে, সাজিদা এই সমস্ত সম্পত্তির মালিক হন।
পরবর্তীতে, সাজিদার ছেলে মনসুর আলী খান পতৌদি (টাইগার পতৌদি) এই সম্পত্তির উত্তরসূরি হন ৷ তারপরে সইফ আলি খান এই সম্পত্তির মালিক হন, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় 15 হাজার কোটি টাকা। কিন্তু শত্রু সম্পত্তির অধিকারের আদেশের পর, মালিকানা স্বত্ব নিয়ে বিতর্ক হয় ৷ এরপর 2015 সালে শর্মিলা ঠাকুর (সইফের মা এবং মনসুর আলী খান পতৌদির স্ত্রী) হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। সইফ আলি খান এবং তাঁর পরিবারের উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে নূর-উস-সাবাহ প্রাসাদ, দার-উস-সালাম, হাবিবির বাংলো, আমেদাবাদের প্রাসাদ এবং ফ্ল্যাগ স্টাফ হাউস।
কী এই শত্রু সম্পত্তি আইন
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের (1965) পর পার্লামেন্টে ‘শত্রু সম্পত্তি আইন’ পাস হয়, যাতে পাকিস্তানে অভিবাসীদের ভারতে রেখে যাওয়া সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আইনজীবী ছাভানি বলেন, যদি সইফ আলি খানের পরিবার আদেশের তারিখ থেকে 30 দিনের মধ্যে আপিল না করে, তাহলে তাঁরা (খান পরিবার) কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে পারে ৷ পাশাপাশি সাম্প্রতিক ঘটনা (মুম্বইয়ের বাড়িতে সইফের উপর হামলা)-সহ বিভিন্ন জরুরি অবস্থার কথা উল্লেখ করে সময় বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করতে পারে। যদিও, ভোপালের কালেক্টর কৌশলেন্দ্র বিক্রম সিং জানিয়েছেন যে তিনি হাইকোর্টের নির্দেশ দেখেননি ৷ আদালতের প্রাসঙ্গিক সমস্ত বিবরণ পাওয়ার পরেই মন্তব্য করবেন।
আরও পড়ুন:– প্রথম দিনেই সাবস্ক্রিপশনের ঢল, এই IPO-তে লগ্নি করলে বাম্পার লাভ হতে পারে
আরও পড়ুন:– মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশে ভারতীয় কোস্ট গার্ডে প্রচুর নাভিক নিয়োগ চলছে! মাসিক বেতন ২১,৫০০ টাকা