সহায় সিপ্যাপ, হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরল একরত্তি, জানুন বিস্তারিত

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- বয়স তার মাত্র পাঁচ মাস। তবে আর পাঁচটা একরত্তির এই সময়ে যেমন ধারাবাহিক বাড়বৃদ্ধি হয়, তার তেমনটা হয়নি। জন্ম হওয়া ইস্তক বেশির ভাগ সময় তার কেটেছে হাসপাতালে। দীর্ঘদিন ধরেই ওই শিশুকন্যার ঠিকানা রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠান। জন্ম থেকেই শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা তার। সেই অবস্থায় তাকে ভেন্টিলেটর–সাপোর্ট থেকে সরানোই যাচ্ছিল না। বাড়িতে নিয়ে যেতে হলে তার দরকার ছিল এমন একটি যন্ত্র, যা তার দুর্বল শ্বাসযন্ত্রটিকে সচল রাখবে। সিপ্যাপ।

কিন্তু সেই যন্ত্র কেনার সামর্থ্য ছিল না শিশুটির বাবার। এমনকী, মেয়ের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল-বাড়ি করতে গিয়ে নিজের কাজটিও খুইয়েছেন ওই ব্যক্তি। শেষ পর্যন্ত সহায় হলেন একটি সংস্থার কর্ণধার। বৃহস্পতিবার শিশুটির পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হলো সিপ্যাপ ডিভাইসটি। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, টানা এই যন্ত্রের ব্যবহারে শিশুটির ফুসফুস ধীরে ধীরে সবল হবে। শিশুটির বাবা সৌরভ মণ্ডল এ দিন জানান, ওই যন্ত্র না–পেলে মেয়েকে তিনি বাড়িতে নিয়ে যেতে পারতেন না।

উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া থানা এলাকার ব্রাহ্মণচক গ্রামে সৌরভ মণ্ডলের বাড়ি। ভবানীপুরের একটি ক্যাফে–তে তিনি কাজ করতেন। মাস পাঁচেক আগে বারুইপুর হাসপাতালে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তাঁর স্ত্রী। মেয়েকে নিয়ে তার মা–বাবা প্রথমে বাড়ি ফিরলেও কোনও দিনই সুস্থ থাকেনি সে। সর্দি, তার পর নিউমোনিয়া হয় তার। প্রথমে তার চিকিৎসা চলে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু কোনও ভাবেই সুস্থ করা যায়নি তাকে। সেখান থেকে তাকে আনা হয় রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ পল্লব চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘শিশুটির ফুসফুস খোলা অবস্থায় থাকছিল না। শ্বাস ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুসফুস বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। ফলে, কোনও ভাবেই ভেন্টিলেটর–সাপোর্টের বাইরে আনা যাচ্ছিল না তাকে।’ পল্লব জানান, শেষ পর্যন্ত শিশুটিকে সিপ্যাপের সাপোর্টে রাখা হয়। দেখা যায়, সে এই যন্ত্রের সাহায্যে ভালো থাকছে, তার ফুসফুস ঠিক মতো কাজ করছে। এমনকী, যন্ত্রটির সাপোর্টে থাকলে তাকে অক্সিজেনও দিতে হচ্ছে না।

এই অবস্থায় চিকিৎসকেরা সিপ্যাপ ডিভাইসের সাপোর্টে পাঁচ মাসের ওই একরত্তিকে বাড়িতে রাখার পরামর্শ দেন। কিন্তু সৌরভ জানিয়ে দেন, লক্ষাধিক টাকা দামের ওই যন্ত্র কেনার সামর্থ্য তাঁর নেই। এমনকী, সেই যন্ত্র ভাড়ায় নিতে যা খরচ, সেটাও তাঁর পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকদের কাছে এ কথা জানতে পেরে এগিয়ে আসেন ‘ইনস্টিটিউট অফ স্লিপ সায়েন্সেস’-এর অধিকর্তা সোমনাথ মাইতি। তিনি ওই যন্ত্রটি দান করেন রামকৃষ্ণ মিশনের মাধ্যমে। সোমনাথ বলছেন, ‘আমরা প্রতি বছর জানুয়ারি থেকে ‘ওয়ার্ল্ড স্লিপ-ডে’ উদযাপন পর্ব শুরু করি। এটা চলে মার্চ পর্যন্ত। এ বার আমরা এই শিশুটির পাশে দাঁড়িয়ে সেই উদযাপন শুরু করলাম।’ তিনি এ–ও জানান, শিশুটি সুস্থ হলে তার বাবা সৌরভ মণ্ডলের কাজের ব্যবস্থাও তাঁদের সংস্থা করে দেবে।

আরও পড়ুন:– কপিল শর্মা, রাজপাল যাদব-সহ ৪ তারকাকে প্রাণে মারার হুমকি, পাকিস্তান থেকে ই-মেল

আরও পড়ুন:– লক্ষ্মীবারে লক্ষ্মীলাভ এই দুই IT কোম্পানির, কেন এক লাফে এতটা বাড়ল শেয়ার দর ?

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন