আইন নিয়ে পড়াশোনা করেও চা-এর দোকান সামলাচ্ছেন অর্পিতা, কিন্তু কেন ?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

 

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:-  ঠিক যেন ‘গীতা এলএলবি’। তবে কোনও মেগা সিরিয়ালের দৃশ্য নয়, বাস্তবে আইনজীবী হওয়ার জন্য অনেকটা পথ হাঁটতে হচ্ছে তমলুকের অর্পিতা মাইতিকে। সকালে হলদিয়া ল কলেজে পড়াশোনা। সন্ধ্যা হলেই বাবা-মায়ের চা-পাকোড়ার দোকান সামালানো। ব্যস্ততার মাঝে তমলুকের এই তরুণীর একটাই স্বপ্ন, একদিন কালো কোট পরে ভরা আদালতে মক্কেলের হয়ে সওয়াল করা, বলবেন ‘ইওর অনার…’।

ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় করে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখেন প্রত্যেক ছাত্রছাত্রী। তবে তাঁদের এই স্বপ্ন পূরণের পথে নানা বাধা আসে। নিম্ন মধ্যবিত্ত বা গরিব পরিবারের ছেলেমেয়েদের কাছে উচ্চ শিক্ষা বর্তমানে অনেকটাই কষ্টসাধ্য। কারণ, বর্তমানে উচ্চশিক্ষা অনেকটাই ব্যয়বহুল। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বা আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও সেই স্বপ্ন অনেকের কাছে স্বপ্নই থেকে যায়, বাস্তবে রূপ পায় না।

তবে তমলুকের এই আইনের পড়ুয়া তাঁর নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সমস্ত প্রতিকূলতা দূরে সরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে অবিচল। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্রী তমলুকের অর্পিতা মাইতি। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল আইনজীবী হওয়ার। তমলুক শহরের স্বনামধন্য রাজকুমারী সান্ত্বনাময়ী স্কুল থেকে ৭৫ শতাংশ নম্বার পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করছেন অর্পিতা।

আরও পড়ুন:– ভরসা কমছে মিউচুয়াল ফান্ডে ! ডিসেম্বরে বন্ধ হয়েছে 45 লক্ষ SIP অ্যাকাউন্ট, রইলো বিস্তারিত

উচ্চমাধ্যমিকের পরেই নিজের স্বপ্নের কথা বাবা-মাকে জানান তিনি। কিন্তু নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে আইন নিয়ে কারও পড়াশোনা চালানোর খরচ অনেকটাই। চা-পকোড়ার ছোট্ট দোকান চালিয়ে সংসারের খরচ জোগানো। তবুও অর্পিতার আইনজীবী হওয়ার স্বপ্নে বাধা পড়তে দেননি তাঁর বাবা-মা।

হলদিয়া ল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী তিনি। কোন রকমে হাজার টাকা জোগাড় করে অর্পিতা নিজেই নেমে পড়ে ময়দানে। প্রতিদিন কলেজে যাওয়ার আগে বাবা-মায়ের চা দোকানে বসে দোকান সামলান অর্পিতা। প্রতিদিন সকাল আটটায় ট্রেনে কলেজে যান। আবার বিকেল চারটায় ফিরে এসে তমলুকের রূপনারায়ণ নদীর পাড়ে চা-পাকোড়ার দোকান সাজিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে বসে পড়েন দোকান সামলাতে। রাতে দোকান গুছিয়ে বাড়ি ফিরে পড়তে বসা। নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে প্রতিদিন এই রুটিন অর্পিতার।

বর্তমানে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড থেকে প্রায় ২ লক্ষ টাকার বেশি ব্যাঙ্ক লোন নিয়েছেন অর্পিতা। একদিকে পড়াশোনার চাপ, অন্যদিকে মাথার উপর ব্যাঙ্ক লোনের বোঝা। সঙ্গে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চা-পকোড়ার দোকান সামলে নিজের লক্ষ্যপথে এগিয়ে যাচ্ছেন অর্পিতা।

মা তপতী মাইতি জানান, ‘মেয়ের সহযোগিতা পেয়ে খুশি হলেও মেয়েকে পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য করতে না পারায় মনে কষ্ট হচ্ছে। মেয়ে স্বপ্ন পূরণ করবে তার লড়াইয়ের মাধ্যমে।’ অর্পিতা কি নিজের লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে? সেটাই দেখার।

আরও পড়ুন:– ৫০,০০০ টাকা বেতনে রাজ্যের বিদ্যুৎ দপ্তরে সরাসরি ইন্টারভিউর মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ চলছে! শীঘ্রই আবেদন করুন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন