চিনকে চাপে ফেলে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সখ্য বাড়ানোর পথে ভারত! জানুন বিস্তারিত

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ভারতের ৭৬তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি তিনি। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিন দিনের ভারত সফরে এসেছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তো। সেই অবসরে শনিবার নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে সুবিয়ান্তোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সেরে ফেললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে উন্নতি থেকে সমুদ্র–সুরক্ষার ব্যাপারে হাতে হাত রেখে চলার বার্তা— বিভিন্ন বিষয়ই উঠে এল দু’পক্ষের আলোচনায়। ইন্দো–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলভাগে চিন যে ভাবে তাদের দাদাগিরি বাড়াচ্ছে, সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র–সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা এবং চুক্তি নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। ১০টি সদস্য–দেশের আসিয়ান ব্লকের মধ্যে ইন্দোনেশিয়াকে ভারতের ‘গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার’ বলে উল্লেখ করেছেন মোদী।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘আমরা দুই দেশই একটি বিষয়ে একমত হয়েছি যে, সমুদ্রপথে কোন দেশের জাহাজ কোন পথে যাবে, সেই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ীই নির্ধারিত হবে।’

আরও পড়ুন:– ভরসা কমছে মিউচুয়াল ফান্ডে ! ডিসেম্বরে বন্ধ হয়েছে 45 লক্ষ SIP অ্যাকাউন্ট, রইলো বিস্তারিত

ইন্দো–প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় চিনের পেশিশক্তির প্রদর্শন যে মুখ বুজে মেনে নেওয়া হবে না, সেটা মোদীর কথায় স্পষ্ট। প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত উৎপাদন এবং সাপ্লাই চেনের ক্ষেত্রেও একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে সহমত হয়েছে ইন্দোনেশিয়া ও ভারত। মেরিটাইম সিকিউরিটি অর্থাৎ সমুদ্রপথে অপরাধ দমন, তল্লাশি ও উদ্ধার সংক্রান্ত ব্যাপারে সহযোগিতা বাড়াতে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে।

এর পাশাপাশি বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নত করা এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর আলোচনাও হয়েছে বলে খবর। মোদীর কথায়, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সাইবার সিকিউরিটি, সন্ত্রাস দমনের ব্যাপারেও সহযোগিতা বাড়ানোর আলোচনা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার বরোবুদুর বৌদ্ধ মঠ এ বার প্রমবানন হিন্দু মন্দিরের সংরক্ষণেও সাহায্য করবে, এই বার্তা পেয়ে আমি উচ্ছ্বসিত। ২০২৫ সালকে ইন্ডিয়া–আসিয়ান ইয়ার অফ ট্যুরিজ়ম হিসেবে পালন করা হবে। সেখানে ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক আদান–প্রদান বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। ইন্দো–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি, নিরাপত্তা রক্ষা এবং উন্নয়নের ব্যাপারে আমরা দুই দেশই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

সম্প্রতি ব্রিকসের সদস্যপদ পেয়েছে ইন্দোনেশিয়া। এই অন্তর্ভুক্তি চিনের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার টক্করের পথ প্রশস্ত করলেও ভারত এর জন্য শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছে। তাতে আপ্লুত ইন্দোনেশীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে আমাদের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছি। যাতে আমলাতন্ত্র, নিয়ম–নীতির ফাঁস এড়িয়ে ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার দ্বিপাক্ষিক স্বার্থকে গুরুত্ব দেওয়া যায়, সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে।’

দক্ষিণ চিন সাগরে চিন যে ভাবে নিজেদের উপস্থিতি বাড়াচ্ছে এবং পেশিশক্তির আস্ফালন দেখাচ্ছে— তাতে আমেরিকা, ভারত সব দেশেরই চিন্তা বাড়ছে। তিক্ত হচ্ছে চিনের সঙ্গে সম্পর্কও। দক্ষিণ চিন সাগরের অংশীদারিত্ব ও দখলদারি নিয়ে চিনের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার সরাসরি সংঘাত নেই, কিন্তু ইন্দোনেশিয়ার ‘এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জ়োন’–এর একাংশকে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে চিন। একাধিকবার আলোচনায় বসেও দুই দেশ সেই সমস্যার মীমাংসা করতে পারেনি। ফলে, দক্ষিণ চিন সাগর ইন্দোনেশিয়া–চিন সম্পর্কের ক্ষেত্রেও একই রকম স্পর্শকাতর একটা ইস্যু। এই পরিস্থিতিতে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ভারতের সখ্য বৃদ্ধির পদক্ষেপ কূটনীতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।

২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর এটাই সুবিয়ান্তোর প্রথম ভারত সফর। শনিবার সকালে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীকে শ্রদ্ধাও জানান সুবিয়ান্তো। তাঁর কথায় ‘ভারত সেই দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম, যারা প্রথম আমাদের স্বাধীনতার লড়াইকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ভারতের সাহায্য আমরা ভুলতে পারব না।’

আরও পড়ুন:– ৫০,০০০ টাকা বেতনে রাজ্যের বিদ্যুৎ দপ্তরে সরাসরি ইন্টারভিউর মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ চলছে! শীঘ্রই আবেদন করুন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন