Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- 2025-’26 সালের কেন্দ্রীয় বাজেটের আর মাত্র চার দিন বাকি ৷ আগামী 1 ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেট ঘোষণার দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ ৷ কেন্দ্রীয় বাজেটে ভারতের স্বাস্থ্য খাতের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ডিজিটাল স্বাস্থ্য পরিষেবা, টেলিমেডিসিন, ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্য রেকর্ড (EHR) এবং AI-চালিত সমাধানের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের উপর কেন্দ্র সরকার আরও বেশি মনোযোগ দেবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আন্তর্জাতিক জরুরি চিকিৎসা ফেডারেশনের ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিস কমিটির চেয়ারম্যান এবং বিখ্যাত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ তমোরিশ কোলে বলেন, “আমি আশা করি সরকার সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান এবং জনস্বাস্থ্যের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য স্বাস্থ্যের খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করবে। ডিজিটাল স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ! এর মধ্যে টেলিমেডিসিন, ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্য রেকর্ড (EHR) এবং AI-চালিত সমাধানে জোর দেওয়া হয়েছে যাতে তথ্য ও পরিষেবার সহজ প্রাপ্যতা এবং দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। এই অগ্রগতিগুলি স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় ডিজিটাল স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবধান দূর করতে সাহায্য করতে পারে ।”
তিনি জানান, চিকিৎসক, নার্স এবং সহযোগী স্বাস্থ্যকর্মী-সহ স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রের পেশাদারদের প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তহবিল বৃদ্ধির মাধ্যমে দক্ষ কর্মীর ঘাটতির পূরণের প্রচেষ্টাকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
ডাঃ কোলে আরও বলেন, “বাজেটে বরাদ্দের লক্ষ্য জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা, ট্রমা কেয়ার সেন্টারের পাশাপাশি দুর্যোগ প্রস্তুতি জোরদার করাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ, যাতে দেশের জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এবং সংকটের মোকাবিলার ক্ষমতা কার্যকরভাবে বৃদ্ধি পায়। উদ্ভাবন, স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়ন এবং নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়নের (R&D) জন্য অতিরিক্ত তহবিল বরাদ্দ করা অপরিহার্য।” তাঁর মতে, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ও উন্নয়ন সহযোগী উপাদানে বিনিয়োগ করা উচিত।
তিনি বলেন, “গবেষণা ও উন্নয়নে বৃহত্তর বিনিয়োগ নতুন চিকিৎসা প্রযুক্তি এবং সাধারণ রোগ এবং জনস্বাস্থ্যের জরুরি অবস্থার মোকাবেলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা পরিকাঠামো তৈরি করতে পারে। পাশাপাশি, এটি চিকিৎসা ক্ষেত্রে গবেষণায় ভারতকে বিশ্বে অগ্রণী হিসেবে স্থান দিতে পারে, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বকে উৎসাহিত করতে পারে এবং জৈবপ্রযুক্তি ও ওষুধ প্রস্তুতকারক শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে ৷”
ডাঃ তমোরিশ কোলের মতে, গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বাস্থ্য পরিষেবার সহজলভ্যতা উন্নত করার জন্য উপর বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি। এর জন্য সম্ভাব্য প্রকল্পগুলি টেলিমেডিসিন প্ল্যাটফর্ম এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রযুক্তির একীকরণের মতো স্বাস্থ্য খাতে সহায়ক ডিজিটাল উদ্যোগগুলি সম্প্রসারণ জরুরি ৷
ডাঃ কোলের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সহমত ব্যক্ত করে, অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথকেয়ার প্রোভাইডারস-এএইচপিআই (ইন্ডিয়া) এর ডিরেক্টর জেলারেল ডাঃ গিরিধর জ্ঞানী বলেন, “বাজেটে সুস্থতার উপর জোর দেওয়া উচিত ৷ কারণ, এর সঙ্গে দেশের উৎপাদনশীলতার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে এবং এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিও প্রভাবিত হবে। প্রথমত, প্রচারমূলক এবং প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য। স্যানিটেশন, নিরাপদ পানীয় জল এবং পুষ্টির উন্নতিতে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে স্বচ্ছ ভারত অভিযানগুলি সুন্দরভাবে শুরু করেছিলেন, সেগুলিকে পুনরায় চালু করা দরকার। দ্বিতীয়ত, তৃতীয় স্তরের শহরগুলিতে উন্নত মানসম্পন্ন চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করা প্রয়োজন। এটি তখনই সম্ভব হবে, যদি আমরা তৃতীয় স্তরের শহরগুলিতে 100 শয্যার হাসপাতাল খোলার জন্য বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিকে উৎসাহিত করি ৷ এ ছাড়া আমরা আমাদের দেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে পারব না। বাজেটে এর বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা উচিত ৷”
ডাঃ গিরিধর জ্ঞানী বলেন, “আয়ুষ্মান ভারত এবং জাতীয় ডিজিটাল স্বাস্থ্য মিশন দুটি চমৎকার প্রকল্প ৷ কিন্তু, এতে বাজেট সহায়তার অভাব রয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় 3 শতাংশ না হলেও একে জিডিপির অন্তত 2.5 শতাংশে উন্নীত করতে হবে।
আরও পড়ুন:– কার্তিক মহারাজকে কেন পদ্ম সম্মান? জানতে বিস্তারিত পড়ুন
আরও পড়ুন:– দশ বছরের চুক্তির ভিত্তিতে সরকারি বাসে চালক-কন্ডাক্টর পদে নিয়োগ, সিদ্ধান্ত ক্যাবিনেটে