Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ধবধবে সাদা গায়ের রং, মাঝে মাঝে হলুদ ছোপ। প্রথম যেদিন সেনগুপ্ত বাড়িতে এসেছিল, একেবারে মাটির তাল, একটুখানি। কুতকুতে দু’টো চোখ মায়ায় ভরা। সেনগুপ্ত বাড়ির গিন্নি আদর করে নাম দেন টমটম। যদিও পরে আদর আহ্লাদে টমটম হয়ে ওঠে বাড়ির সকলের টমু। টমু হুলো বিড়াল হতে পারে, কিন্তু চুঁচুড়া জোড়াঘাটে গঙ্গাপারের আবাসনের বাসিন্দা ঋতব্রত সেনগুপ্ত-রূপা সেনগুপ্তর কাছে কোলের সন্তানের মতো। ১৭ জানুয়ারি থেকে সেই টমু নিখোঁজ। নাওয়া খাওয়া ভুলে সারাদিন কেঁদে চলেছেন রূপা। স্বামী, ছেলে বেরিয়ে গেলে ফাঁকা ঘরে টমুর খাবারের থালা, শোওয়ার বিছানা, খেলার বল দেখলেই বুকের ভিতরটা ছ্যাঁৎ করে উঠছে, গলার কাছে দলা পাকিয়ে আসছে কান্না।
বছর খানেক আগে টমুর সেনগুপ্ত বাড়িতে আসা। রূপা বলেন, ‘প্রথমে ভাত, মাছ খেতো টমু। কিন্তু মাঝে ওর খুব অসুখ করে। ডাক্তার বলেছিলেন, ক্যাট ফুড খাওয়াতে। সেই থেকে টমু ভাত দেখলেই ছুট লাগায়। মাছ-মাংসও খেতে চায় না।’
টমুর ১১ কেজি ওজন। বাড়িতে বিরাট আদর তার। আলাদা বিছানা রয়েছে, এসিতে ঘুমোতে ভালবাসে সে। চেহারাই বড়সড়, টমু কিন্তু খুবই ভীতু প্রকৃতির। বাড়িতে অচেনা কেউ এলেই, এক ছুটে খাটের তলায় ঢুকে পড়ে। সেই টমু ১২ দিন ধরে ঘরছাড়া। কোনও খোঁজ নেই। রূপার চিন্তা, ও তো ক্যাট ফুড ছাড়া কিছু খায় না। আর রাস্তাঘাটও চেনে না। কী ভাবে আছে, কোথায় আছে, কে জানে!
টমুকে খুঁজতে রাস্তায় পোস্টার দিয়েছেন, এনজিওকে জানিয়েছেন। এমনকী যাঁরা রোজ বাড়ি বাড়ি ঘুরে ময়লা নেন, ডোম— সকলকে জানিয়েছেন, কেউ যদি টমুকে ফেরাতে পারেন।
রূপা সেনগুপ্ত বলেন, কয়েকদিন আগে টমুর শরীর খারাপ হয়েছিল। রক্ত পরীক্ষা, ইসিজি সব করানো হয়। ওষুধ চলছে। তার মধ্যেই ১৭ তারিখ বিকালে ঘরের বাইরে ঘোরাঘুরি করছিল টমু। ঋতব্রত ঘরে এসে শুয়েছিলেন। চোখ লেগে যায়। ঘুম ভাঙতে দেখেন ৬টা ১৫।
এর পরই টমু, টমু খোঁজ। টমু উধাও। সেই যে গেলো, এখনও ফেরেনি। ঋতব্রত-রূপাদের বিশ্বাস, ঠিক যে ভাবে তাঁরা আদরের টমুকে খুঁজছেন, টমুও পাগলের মতো খুঁজছে তাঁদের।
আরও পড়ুন:– কার্তিক মহারাজকে কেন পদ্ম সম্মান? জানতে বিস্তারিত পড়ুন
আরও পড়ুন:– দশ বছরের চুক্তির ভিত্তিতে সরকারি বাসে চালক-কন্ডাক্টর পদে নিয়োগ, সিদ্ধান্ত ক্যাবিনেটে