Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- নৃশংস ভাবে খুন করলেও, দোষীকে ফাঁসির সাজাই দিতে হবে, এমন কোনও বাঁধাধরা নিয়ম নেই বলে জানাল সুপ্রিম কোর্ট। প্রায় নজিরবিহীন ভাবে স্ত্রী ও চার সন্তান খুনের আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে সম্প্রতি আজীবন কারাবাসের সাজা দিল শীর্ষ আদালত। এ ক্ষেত্রে কোর্ট যেমন যুক্তি হিসেবে অপরাধীর সম্ভাব্য সংশোধনের তত্ত্বে গুরুত্ব দিয়েছে, তেমনই অপরাধের ‘রেয়ারেস্ট অফ দ্য রেয়ার’ বা ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ সংজ্ঞার উপরেও তাৎপর্যপূর্ণ আলোকপাত করেছে।
এই আবহেই আরজি কর হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকের নৃশংস ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির দাবি আদালতের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এত দিন ফাঁসির প্রসঙ্গ এলেই আইনজ্ঞরা বচ্চন সিং বনাম পাঞ্জাব সরকার মামলার (১৯৮০) উদাহরণ টানতেন (গ্রাফিক্স দ্রষ্টব্য)। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি বিক্রম নাথের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ (বাকি দু’জন বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতা) সম্প্রতি যে রায় দিয়েছে, তা ফাঁসির ক্ষেত্রে এত দিনের যাবতীয় রেফারেন্স নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে বলে মত আইনজীবীদের একটা বড় অংশের।
সংশ্লিষ্ট মামলায় তিনটি বিষয় সামনে রেখে সাজা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত। বেঞ্চের যুক্তি, একাধিক হত্যায় যুক্ত থাকলেও এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আগে কোনও অপরাধমূলক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ নেই। তবে তার থেকেও বড় কথা, কোনও অপরাধীর মধ্যে যদি সংশোধনের সুযোগ থাকে এবং সম্ভাবনা দেখা যায়, তা হলে সে ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যায় না। এই মামলাটির ক্ষেত্রে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের তরফে অপরাধীর সম্পর্কে ইতিবাচক রিপোর্টই পেয়েছে কোর্ট। রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, ‘মৃত্যুদণ্ড বিধি নয়, ব্যতিক্রম— আদালত এই তত্ত্বকে বরাবরই স্বীকৃতি দিয়ে এসেছে। তাই একাধিক হত্যা করা হলেও অপরাধীর সংশোধনের যদি সামান্যতম সম্ভাবনাও থাকে, তুলনায় লঘু শাস্তিই বেছে নেওয়া উচিত।’
আইনজীবীদের বক্তব্য, আরজি কর মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সঞ্জয়েরও কোনও অতীত অপরাধের রেকর্ড নেই। সে বয়সেও যুবক। ফলে, সংশোধনাগারে শৃঙ্খলার মধ্যে থাকলে তার শুধরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে কি না, বিচারের সময়ে হাইকোর্ট এটাও মাথায় রাখবে। সুপ্রিম কোর্টের মামলায় অভিযুক্তের দাবি ছিল, তার ঘটনা ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ নয়।
তাই ফাঁসির সাজা মকুব করা হোক। নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের যুক্তি, কোনও অপরাধকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ শ্রেণিতে ফেলতে হলে কতগুলি বিষয় ধর্তব্যের মধ্যে আনা প্রয়োজন— অপরাধের মোটিভ, অপরাধের ধরন, অপরাধের ভয়াবহতা এবং অপরাধীর সংশোধনের সম্ভাবনা। আর সর্বোচ্চ আদালতের বক্তব্য, সংশোধন যদি সম্ভব হয়, তা হলে ফাঁসি নয়, সাজা হবে যাবজ্জীবনই। আইনজীবীরা বলছেন, আরজি কর মামলার ক্ষেত্রেও সঞ্জয়ের এই বিষয়গুলি, বিশেষ করে সংশোধনের সম্ভাবনার বিষয়টি হাইকোর্টে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুন:– কোন লক্ষণগুলি দেখে বুঝবেন আপনি ডায়াবিটিসে আক্রান্ত? রইলো বিস্তারিত
আরও পড়ুন:– Jio Coin বাজারে আনলো আম্বানি। থাকছে একাধিক সুবিধা। কিভাবে কাজ করবে এই কয়েন? জেনে নিন