Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- সমস্যায় পড়েছেন হোয়াইট হাউসের স্টেনোগ্রাফাররা। গত চার বছর, প্রাক্তন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাংবাদিকদের সঙ্গে খুব একটা কথা বলতেন না। যতটা না বললে নয়, ততটাই বলতেন তিনি। এতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন হোয়াইট হাউসের স্টেনোগ্রাফাররা। কিন্তু, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে বকেই চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একেক দিনে দুই-তিনটি করে সাংবাদিক সম্মেলন করছেন তিনি। এত বেশি কথা বলছেন তিনি যে, তাঁর জনসমক্ষে বলা সকল বক্তব্য লিখতে গিয়ে তাল মেলাতে পারছেন না হোয়াইট হাউসের স্টেনোগ্রাফাররা।
শপথ গ্রহণের দিন, ২২,০০০-এরও বেশি শব্দ উচ্চারণ করেন ট্রাম্প। যে দিন উত্তর ক্যারোলিনা এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় বিপর্যয় স্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি, সেই দিন বলেছিলেন ১৭,০০০ শব্দ। চার বছর আগে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করার পর, প্রথম সপ্তাহে ক্যামেরার সামনে ২ ঘন্টা ৩৬ মিনিট কথা বলেছিলেন বাইডেন। শব্দ ব্যবহার করেছিলেন ২৪,২৫৯টি। সেখানে ট্রাম্পের তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম সপ্তাহে প্রায় ৭ ঘন্টা ৪৪ মিনিট কাটিয়েছেন ক্যামেরার সামনে। বলেছেন ৮১,২৩৫টি শব্দ। এত কিছু লিখতে গিয়ে চাপ পড়ছে হোয়াইট হাউসের স্টেনোগ্রাফারদের আঙুলে। এই অবস্থায় অতিরিক্ত কর্মী নেওয়ার কথা চলছে।
আরও পড়ুন:– WEBCSC দপ্তরে চাকরির বিশাল সুযোগ! আবেদন পদ্ধতি সহ বিস্তারিত দেখেনিন
আট বছর আগে, প্রথম মেয়াদেও ট্রাম্প বেশি কথা বলতেন, তবে এতটাও না। প্রথম মেয়াদের প্রথম সপ্তাহে ট্রাম্প ক্যামেরার সামনে ছিলেন মাত্র ৩ ঘন্টা ৪১ মিনিট। বলেছিলেন ৩৩,৫৭১টি শব্দ। তবে এখন শব্দের বন্যা বইছে। এত কথা বলছেন যে, ভিন্নমত পোষণকারীদের কণ্ঠস্বর আর শোনাই যাচ্ছে না। বিরোধীদের তাঁদের নিজেদের কথা শোনানোর জন্য রীতিমতো সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
ট্রাম্পের প্রায় সব মন্তব্যই অবশ্য মিথ্যাচারে ভরা। কখনও ভোটে জালিয়াতির ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন। কখনও দাবি করছেন ক্যালিফোর্নিয়ার জল সরবরাহ নীতির জন্যই সাম্প্রতিক দাবানলের সময়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছিল। কখনও দুম করে বলে দিচ্ছেন, গাজ়া ভূখণ্ড থেকে সমস্ত প্যালেস্তিনীয়দের বের করে দেওয়া উচিত। কখন যে তিনি মজা করছেন, কখন যে মজা না করে কথা বলছেন, তা বোঝাও কঠিন। যেমন তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি তৃতীয় মেয়াদেও দায়িত্ব পালনের কথা ভাবছেন। যদিও মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, কেউ দুই মেযাদের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকতে পারে না। কিন্তু, তিনি আমেরিকান রাষ্ট্রপতি। তাঁর কথা-বার্তা উপেক্ষা করাও কঠিন। তাই সমস্যায় হোয়াইট হাউসের স্টেনোগ্রাফাররা।
প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের মুখপাত্র ছিলেন মাইকেল লারোসা। তাঁর মতে, কয়েক দশক ধরে টেলিভিশনে কাজ করতে করতে মানুষের মনোযোগকে কী করে তাঁর দিকে টেনে রাখতে হয়, তার উপায় ভালোই রপ্ত করেছেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান দলের অন্যতম স্ট্র্যাটেজিস্ট, কেভিন ম্যাডেনের মতে, টেলিভিশনের কার্যনির্বাহী প্রযোজকদের মতো, ট্রাম্প আগে থেকেই পরের ঘণ্টার প্রোগ্রাম ঠিক করে ফেলেন। কী করে দর্শকদের ব্যস্ত রাখা যায়, তা চিন্তা করেন।
ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের সহযোগী, মার্গো মার্টিনের দাবি, মার্কিন প্রশাসনে নাকি স্বচ্ছতা ফিরে এসেছে। কোনও রাখ-ঢাক না করে ট্রাম্প সব কিছুই প্রকাশ্যে জানিয়ে দিচ্ছেন। তবে পেনসিলভ্যানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানেনবার্গ পাবলিক পলিসি সেন্টারের ডিরেক্টর ক্যাথলিন হল জেমিসনের মতে, ‘কাউকে হাতের কাছে পাওয়া গেলেই যে তিনি স্বচ্ছ হবেন, তা নাও হতে পারে।’ তাঁর দাবি, কখনও কখনও বেশি কথা বলা আরও অস্পষ্টতা তৈরি করে। ট্রাম্প যেমন কোনও একটি বিষয় নিয়েই, দুই সময়ে দুই রকমের মতামত দিয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন:– নিষিদ্ধ ঘোষণা ! রাজ্যে 17টা ওষুধ উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিল স্বাস্থ্যভবন, দেখে নিন তালিকা