Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- টার্গেট আসানসোল? ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর নামে প্রতারণার ছক, মাত্র ২ সপ্তাহে শিকার তিনজন। তদন্তে নেমে ব্যারাকপুর এবং কেরালার অপরাধ চক্রের সূত্র খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া টাকা পাঠানো হচ্ছে চিন, দুবাইয়ের মতো দেশে? তদন্তে উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সাইবার প্রতারকদের নয়া টোপ ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’। এক্ষেত্রে ফোন করে বা হোয়াটসঅ্যাপ কল করে কোনও ব্যক্তিকে প্রতারকরা গ্রেপ্তারির মিথ্যে ভয় দেখায়। সেই গ্রেপ্তারি এড়ানোর জন্য চাওয়া হয় মোটা টাকা। আর এই প্রতারণা চক্রে পা দিয়ে সম্প্রতি আসানসোলের চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায় ১ কোটি ৩ লক্ষ, পরেশ রঞ্জন সাহু ৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ৮১ টাকা, দুর্গাপুরের বাসিন্দা তরুণ কুমার কেশ ৯ লক্ষ ৬০ হাজার ৪৯৮ টাকা খুইয়েছেন।
অভিযোগ, গত ১৮ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আসানসোল সাইবার থানায় ৩টি ডিজিটাল অ্যারেস্টের অভিযোগ জমা পড়েছিল। গত ১৮ জানুয়ারি আসানসোল দক্ষিণ থানার সমীরণ রায় রোডের বাসিন্দা চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায় সাইবার থানার দ্বারস্থ হন। তিনি দূরদর্শনের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক। তাঁর অভিযোগ ছিল, গত ১০ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি তাঁকে ফোন করে সাইবার প্রতারকরা ডিজিটাল অ্যারেস্ট করার হুঁশিয়ারি দেয়। তাঁর সঙ্গে দাউদ ইব্রাহিমের স্লিপারসেলের যোগসূত্র থাকার নথি রয়েছে সিবিআই এবং দিল্লি পুলিশের কাছে, এই হুমকি দেওয়া হয়। এরপর সাত দিনে ধাপে ধাপে তাঁর থেকে এক কোটির বেশি টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা।
অন্যদিকে, গত ২৮ জানুয়ারি ডিজিটাল অ্যারেস্টের অভিযোগ তুলে আসানসোল সাইবার থানার দ্বারস্থ হন বার্নপুরের বাসিন্দা পরেশ রঞ্জন সাহু। তিনি অভিযোগ করেন তাঁকে ২০ দিন ‘ডিজিটাল গ্রেপ্তার’ দেখিয়েছিল সাইবার জালিয়াতরা।
আরও পড়ুন:– কোনও অনুশোচনা নেই, চুম্বন বিতর্কে আর কী বললেন উদিত নারায়ণ?
পাশাপাসি দুর্গাপুরের বাসিন্দা তরুণকুমার কেশ জানিয়েছেন, তাঁর কাছে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন এসেছিল গত ২৫ জানুয়ারি। যেখানে এক ব্যক্তি নিজেকে মুম্বাইয়ের ডুগড়ি থানা সাব-ইন্সপেক্টর আকাশ বর্মা বলে পরিচয় দেয়। তিনি আর্থিক দুর্নীতি চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ তোলে প্রতারকরা এবং টাকা না দিলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে ভয়ও দেখানো হয়। এরপর প্রতারকরা তাঁর থেকে ৯ লক্ষের বেশি টাকা হাতিয়ে নেয়। গত ৩১ জানুয়ারি তিনিও সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে নেমে ব্যারাকপুর এবং কেরালার চক্রের যোগ পান তদন্তকারীরা। এই ঘটনায় দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ এবং বাংলা থেকে মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় জানা গিয়েছে, কলকাতা এবং দিল্লিতে ডিজিটাল অ্যারেস্টের নামে গ্রেপ্তার করে সেই টাকা পাঠানো হচ্ছিল বিদেশে।
আর এই সাইবার অপরাধ ব্যারাকপুর এবং কেরালা থেকে অপারেট করা হচ্ছে। কে বা কারা এই চক্রের মাথা? তলিয়ে দেখছে পুলিশ।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারের ডিসি (সদর) অরবিন্দ আনন্দ জানান, ডিজিটাল অ্যারেস্ট নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:– আরও বড় বিপর্যয়ের অপেক্ষায় কলকাতা? জানতে বিস্তারিত পড়ুন