Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- মুম্বইয়ে কাজ করতে যাওয়ার পথে হারিয়ে গিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শেখ ইসমাইল। মাঝে কেটে গিয়েছে ১৭ বছর। নিয়ম মোতাবেক এতদিন নিখোঁজ থাকায় তাঁকে আইনত মৃত বলে ঘোষণাও করা হয়। পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় ‘ডেথ সার্টিফিকেট’-ও। কিন্তু, বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির দরজা খুলে অবাক হয়ে যান শেখ ইসমাইলের দিদি গুলান বিবি। দরজার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর সেই হারিয়ে যাওয়া ভাই ইসমাইল। আনন্দে তখন তাঁর চোখে জল।
এ দিকে ১৭ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ইসমাইলের ফেরত আসার খবরে তাঁকে দেখার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন তাঁর আত্মীয়-পরিজনরা। শেখ ইসমাইলের বর্তমানে বয়স ৫৩।
২০০৫ সালে বাবার মৃত্যুর পরে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন। স্থানীয় চিকিৎসায় সামান্য উন্নতি হয়েছিল তাঁর মানসিক পরিস্থিতির। এরপর ২০০৭ সালে ট্রেনে করে তিনি মুম্বই যাচ্ছিলেন কাজের জন্য। যাওয়ার পথে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান।
তাঁকে খোঁজার জন্য পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিল পরিবার। কিন্তু খুব একটা লাভ হয়নি। সাত বছর পর নিয়ম মেনে পুরসভার তরফ থেকে তাঁর মৃত্যু শংসাপত্রও দেওয়া হয়েছিল পরিবারকে। ইসমাইল অবিবাহিত। ফলে তাঁর জায়গা-জমিও ভাইয়েদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে যায়।
১৭ বছর পরে যে ইসমাইল ফেরত আসবেন, তা ভাবতেও পারেননি পরিবারের সদস্যরা। এই বছরগুলি কোথায় ছিলেন ইসমাইল? জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইসমাইলকে উদ্ধার করে তাঁর চিকিৎসা করে। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পরে বাড়ির ঠিকানা জানিয়েছিলেন ইসমাইল। আর সেই সংস্থার সদস্যরাই ইসমাইলকে বাড়ি ফিরিয়ে দেয়।
ভাইকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা ইসমাইলের দিদি গুলান বিবি। তিনি বলেন, ‘বাবা মারা যাওয়ার পরে ও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিল। নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ১৭ বছর পরে ওকে ফিরে পাব তা ভাবিনি। এ প্রাপ্তির আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।’ ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শেখ সাবুল জানান ইসমাইলের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য সরকারি নথি সংক্রান্ত যা যা সাহায্য প্রয়োজন, তা করা হবে।