Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- কুম্ভে পুণ্যস্নান সেরে ফেরার পথে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হুগলির শ্রীরামপুরের একটি দলের। রিজার্ভেশন টিকিট কেটে গিয়েছিলেন, অথচ এমন বিশৃঙ্খলা যে ট্রেনে উঠতেই পারলেন না। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে, তীব্র যানজট কাটিয়ে বাড়ি ফিরতে হলো। রেলের বিরুদ্ধে চরম অব্যবস্থার অভিযোগ তুলল শ্রীরামপুরের ২০ জনের ওই পুণ্যার্থীর দল। তাঁদের অভিযোগ, রেল পুলিশ কোনও রকম সদর্থক ভূমিকা নেয়নি। অভিযোগ জানানোয় বলেছে, ‘নিজেদের ব্যবস্থা নিজেরা করে নিন।’
গত ৯ ফেব্রুয়ারি ট্রেনে অযোধ্যায় পৌঁছন শ্রীরামপুরের ২৯ জনের দলটি। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই বয়স্ক মহিলা। অযোধ্যা ঘুরে বারাণসীতে কাশী বিশ্বনাথের মন্দির হয়ে ১৪ তারিখ প্রয়াগরাজে যান। ত্রিবেণী সঙ্গমে পুণ্যস্নান সেরে ১৫ তারিখ ট্রেন ধরে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। বারাণসী থেকে দুন এক্সপ্রেসে ফেরার কথা থাকলেও, পুণ্যার্থীদের অভিযোগ, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ প্ল্যাটফর্মে ঢোকে ট্রেন। অনেকটাই পরে ছাড়ে। কিন্তু এমন ভিড়, ঠেলাঠেলি, বহু মানুষ উঠতে পারেননি। ট্রেনে ওঠা তো দূর, ট্রেনের কামরার সামনেই পৌঁছতে পারেননি।
শ্রীরামপুরের বাসিন্দা তরুণ কোলে জানান, কুম্ভে যাচ্ছেন বলে ২ মাস আগে টিকিট কেটেছিলেন। স্লিপারে ২০ জনের টিকিট পাওয়া যায়। বাকি ৯ জনের এসিতে। ৯ জন কোনও ভাবে ট্রেনে উঠলেও, বাকিরা উঠতে পারেননি। সারা রাত বারাণসী স্টেশনে কাটিয়ে পর দিন বহু কাঠখড় পুড়িয়ে কুম্ভ স্পেশালে মুঘলসরাই স্টেশন পৌঁছন। ভেবেছিলেন, সেখান থেকে যদি কোনও ট্রেন পান। তবে সে স্টেশনের অবস্থা আরও ভয়াবহ ছিল বলে দাবি তরুণের।
বাস স্ট্যান্ডেও কাতারে কাতারে মানুষ। বুড়ো, বাচ্চা, মহিলার মাথা দেখা যাচ্ছে শুধু। বাধ্য হয়ে ৩টি গাড়ি ভাড়া করেন। ৭২ হাজার টাকা খরচ পড়ে। তাতেই সোমবার ভোরে শ্রীরামপুর ফেরেন। তরুণের কথায়, ‘ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা! ১৫ তারিখ টিকিট ছিল আমাদের। বারাণসী থেকে হাওড়া। ট্রেনের সময় ছিল বিকাল ৪টে। আমরা আড়াইটের মধ্যে স্টেশনে পৌঁছে যাই। ট্রেন প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা লেট। এস ফোর কামরায় টিকিট ছিল আমাদের। ট্রেন আসার পর দেখি ততক্ষণে প্রায় ৪ হাজার লোক সেখানে ঢুকে বসে আছে। কামরার ধারে কাছে ঘেঁষতেই পারলাম না। ট্রেনে ওঠার ২টো গেট ব্লক। কোনও পুলিশ নেই সেখানে। বুঝলাম, কোনও ভাবেই ট্রেনে উঠতে পারব না। আরপিএফকে বলায়, ওরা বলছে কিছু করার নেই, নিজেরা যে ভাবে পারেন উঠুন। এত খারাপ অভিজ্ঞতা, বলে বোঝাতে পারব না। বয়স্ক লোকজন নিয়ে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছি। রিজার্ভেশনের টিকিট হাতে আমাদের, অথচ টিকিট ছাড়া লোকজন ট্রেনের ভিতরে বসে।’
এই পুণ্যার্থীদের দলে ছিলেন সুজাতা ঘোষাল নামে এক মহিলা। তিনি বলেন, ‘হেঁটে ঘুরতে হয়েছে। তার যে কষ্ট, তার থেকে অনেক বেশি কষ্ট সহ্য করেছি ট্রেনে উঠতে গিয়ে। এত টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে ফিরতে হবে ভাবিনি।’
শুধু স্লিপারে টিকিট কাটা যাত্রীরাই নন, তরুণ জানালেন, যাঁরা এসি কামরায় উঠতে পেরেছিলেন, তাঁরা খেয়ে হাত ধুতে পারেননি। জল খাননি ভয়ে, বাথরুম পেলে যাওয়া সম্ভব নয়। তাঁদের অভিজ্ঞতাও বিভীষিকাময়! তবে এত কিছুর মধ্যে প্রয়াগে স্নান করতে পারাটাই প্রাপ্তি বলে মনে করছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন:- উচ্চ মাধ্যমিকের পর এই পরীক্ষা পাশ করলেই MSc অবধি নিশ্চিন্ত, কবে থেকে আবেদন করবেন দেখে নিন
আরও পড়ুন:- বিরাট বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে অন্ধকারে ডুবল শ্রীলঙ্কা, সৌজন্যে রয়েছে একটি হনুমান, জানুন বিস্তারিত