মেয়েদের বিক্রি মায়ের, অর্কেস্ট্রার আড়ালে ধর্ষণে তিন বার অন্তঃসত্ত্বা, জানুন বিস্তারিত

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- আগের দিন রাতে যে গাঢ় করে কাজল পরেছিল তা বেশ বোঝা যাচ্ছে পরদিনও। একটা চোখে কিছুটা আবছা হয়ে এলেও অন্য চোখটা বুঝিয়ে দিচ্ছে অনেক কিছুই। আগের দিনের লাগাতার ধর্ষণ, মার, অত্যাচার। লিপস্টিক হাল্কা হয়ে আসায় বোঝা যাচ্ছে ঠোঁটের উপর কামড়ের তাজা দাগ। পরনে ফুলহাতা টি-শার্ট, জিন্স।

মেয়েটির নাম ধরা যাক রাবেয়া। বয়স মেরেকেটে ১৫ বছর। ইতিমধ্যেই সে তিন বার গর্ভবতী হয়েছে। দু’বার প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এই কিশোরীর ‘পেট গিরানো’ হয়েছে। বর্তমানে সে এক মাসের অন্তঃসত্ত্বা!

কী ভাবে রাবেয়ার এমন অবস্থা হলো?

খানিকটা ভাবলেশহীন ভাবেই বলে চলেছে বর্ধমানের এই কিশোরী। তার দাবি, চার বছর আগে তাদের জন্মদাত্রী কী ভাবে তাকে ও তার আট বছরের বোনকে বিক্রি করে দিয়েছিল পিঙ্কি নামে এক মহিলার কাছে। বড় মেয়ের জন্য ‘দাম’ নিয়েছিল ১০ হাজার টাকা, ছোট মেয়ের জন্য ৫ হাজার! সেই পিঙ্কি আবার তাদের দাম কয়েক হাজার বাড়িয়ে বিহারের বেতিয়ার এক অর্কেস্ট্রা মালিক রামসাগর নামে একটি লোকের হাতে তুলে দেয়। সে রাবেয়াকে নিয়মিত ধর্ষণ করত বলে অভিযোগ। পাশাপাশি একেবারে স্বল্প বাসে নাচানো, বিয়েবাড়ি-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথিদের ‘খুশ’ করতে বাধ্য করত। ফলে সেই কিশোরীর সারা দেহে অজস্র ক্ষতচিহ্ন। মেয়েটি জানায়, এর পর তাদের আরও তিন বার হাতবদল হয়েছে। একটি সূত্রে দাবি, শেষ বারে নাকি দুই বোনের দাম উঠেছিল ৩৭ লক্ষ টাকা!

তাই শুক্রবার ভোরে যখন এই দুই বোনকে বিহার পুলিশের টিম, মিশন মুক্তি ফাউন্ডেশন ও রেসকিউ ও রিলিফ ফাউন্ডেশন-এর যৌথ অভিযানে বিহারের বেতিয়ার জামুনিয়া থানার ‘জুলি অর্কেস্ট্রা’ থেকে উদ্ধার করল, তখন তার ধাতস্থ হতে সময় লেগেছিল। একটি সূত্রে দাবি, রাবেয়ার প্রশ্ন ছিল, ‘আমরা কোথায় যাব? কার কাছে থাকব?’

মেয়েরা যে হেতু মায়ের বিরুদ্ধেই তাদের বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ করেছে, তাই প্রথামতো তাদের মেডিক্যাল টেস্টের পরে ‘সেফ হোম’-এ রাখা হয়েছে বাকিদের সঙ্গেই। সে দিন মোট ৬টি অর্কেস্ট্রা টিমে রেড করা হয়। সেখান থেকে যে ১৬ জন কিশোরী উদ্ধার হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৪ জনই বাংলার বিভিন্ন জেলার!

 

পুলিশ সূত্রে খবর, রামসাগরের ভোগ করা হয়ে গেলে রাবেয়াকে জিতেন্দ্র নামে আর একটি লোকের কাছে মোটা দামে বিক্রি করে সে। রাবেয়ার বোনেরও ঠাঁই হয় সেখানে। জিতেন্দ্রর ‘ইনকাম’-এর রাস্তাই হলো ‘প্রাইভেট প্রস্টিটিউশন’ থেকে। ফলে সে নিজে তো রাবেয়াকে যেমন খুশি ধর্ষণ করতই, সঙ্গে বিভিন্ন লোকের কাছে তাকে ঘণ্টার হিসেবে ‘ভাড়া’ দিত! আর সব টাকা পকেটে পুরত। বছর খানেক আগে রাবেয়া সুযোগ পেয়ে পালিয়ে বাড়ি চলে যায়। কিন্তু তার মা-ই তো মেয়ের সওদা করেছে বলে অভিযোগ। ফলে সে মেয়েকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে আবার সেই রামসাগরের কাছেই পৌঁছে দেয়!

এ বার আর সে নিজের কাছে রাখেনি রাবেয়াকে। লক্ষ লক্ষ টাকায় এই দুই বোনকে বেচে দেয় ‘জুলি অর্কেস্ট্রা’র মালিক রাজেশ কুমার ওরফে রবির কাছে। সে-ও একই ভাবে রাবেয়ার শরীরে থাবা বসাত। তাকে প্রায় নগ্ন করিয়ে ‘লওন্ডা ডান্স’ করানো থেকে শরীর বেচতে বাধ্য করা — বাদ থাকত না কিছুই। রাবেয়ার কথায়, ‘ছেড়ে দিতে বললেই বলত তোকে লক্ষ লক্ষ টাকায় কিনেছি। আগে তার লাভ তুলি!’ রাবেয়ার বোনও জানিয়েছে, তাকে ধর্ষণ করা না হলেও মলেস্টেশন, মারধর, ছেঁকা ছিল রোজ-এর ঘটনা। প্রতিবাদ করলেই দিদির উপরে অত্যাচার আরও বাড়ত!

কিন্তু যে মা নিজের মেয়েদেরই বিক্রি করে দিতে পারে, সে তো মানবপাচারের র‍্যাকেটও চালাতে পারে? কথাটা অস্বীকার করেনি পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। তারা জানতে পেরেই এই মহিলার সন্ধানে নেমেছে। পাশাপাশি, মেয়েদের দাবি ঠিক কি না, খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।

তবে জেলার এক পদস্থ কর্তা বললেন, ‘বর্ধমান থেকে বিহারের এই অর্কেস্ট্রা দলে নাচতে যাওয়ার প্রবণতা বেশ কয়েক বছর ধরেই তৈরি হয়েছে। তাই এই মেয়েদের দাবির সত্যতাও খতিয়ে দেখা হবে।’ ইঙ্গিত দেন, অনেক কিশোরীই টাকার জন্য ও ‘ফেমাস’ হতে চলে যায় নিজেও। ফলে দেখা হবে পুরোটাই।

আপাতত গর্ভপাতের অপেক্ষায় রাবেয়া। ভবিষ্যতে কী অপেক্ষা করে আছে, অজানা তা-ও। শুধু এক আকুল প্রশ্ন পুলিশকেও, ‘মা-ই তো বিক্রি করেছে। তা হলে কাছে টানবে কে?’

আরও পড়ুন:- দারুন খবর! এই কার্ড থাকলেই মাসে মাসে পাবেন 3000 টাকা। আবেদন করুন এভাবে

আরও পড়ুন:- অষ্টম শ্রেণী পাশে রাজ্যের সরকারি হোস্টেলে কর্মী নিয়োগ চলছে! শীঘ্রই আবেদন করুন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন