Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- এখন অনেকেই উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পরে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছায় ইঞ্জিনিয়ারিং লাইনে পড়াশোনা করার জন্য ইচ্ছুক হয়ে থাকেন। ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করলে বিভিন্ন স্তরে চাকরির সুযোগ রয়েছে এমনটাই মনে করেন অনেকে। বিভিন্ন জায়গায় উন্নত প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আরো উন্নততর জিনিস বা পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো চলছে।
ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার যোগ্যতা ও প্রস্তুতির তথ্য
কিন্তু একটা প্রশ্ন থাকে, ইঞ্জিনিয়ার হতে গেলে ঠিক কি কি প্রয়োজন? এর অনেক রকম লাইন রয়েছে, কোন লাইন নিয়ে পড়াশোনা করলে সব থেকে বেশি চাকরির সুযোগ রয়েছে? যে সমস্ত ছাত্র ছাত্রী HS পরীক্ষা পাশ করে ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তাদের জন্য আজকের এই প্রতিবেদনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে পড়ে ফেলুন।
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা ও ক্যারিয়ার
বিভিন্ন যন্ত্রের নকশা অঙ্কন, নির্মাণ ও পরিকল্পনার মতো কাজ গুলি করে থাকেন। বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতেও ইঞ্জিনিয়ারদের দরকার পড়ে, উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, পানীয় জল সরবরাহ থেকে, গৃহ নির্মাণ, মহাকাশ যান তৈরি থেকে কম্পিউটারের খুঁটিনাটি, রাস্তা নির্মাণ, সেতু নির্মাণ তাঁদের কাজের মধ্যে পড়ে। শুধু নির্মাণ নয়, নির্মিত বিষয় গুলির রক্ষণাবেক্ষণেও এনাদের প্রয়োজন পড়ে। কোনও একটি যন্ত্র বিকল হলে বা কোনও সফটওয়্যারে সমস্যা দেখা দিলে, সে গুলি একজন ইঞ্জিনিয়ারকেই চিহ্নিত করে ঠিক করে দিতে হয়।
আরও পড়ুন:- হার্ট অ্যাটাক থেকে বাঁচার উপায় কি? জেনে নিন
কত ধরণের ফিল্ডে আপনারা যেতে পারবেন?
ইলেকট্রিক্যাল – ইলেকট্রিক্যাল শব্দটি থেকে বোঝা যাচ্ছে ইলেকট্রিক জাতীয় কোন কিছু সঙ্গে জড়িত। এই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে ইঞ্জিনিয়াররা বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নির্মাণ এবং সেই সম্পর্কিত সমস্যার সমাধান করেন। আর এখন এই সকল জিনিসের চাহিদা অনেক বেশি তাই চাকরিও অনেকেই পাচ্ছেন।
মেকানিক্যাল – এই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে ইঞ্জিনিয়াররা বিভিন্ন যন্ত্রের নকশা বানন বা বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরি করেন। ট্রেন বাস বা যে কোনো ধরনের যান ও অন্যান্য ভারের যন্ত্রাংশের সমস্যার সমাধানে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের দরকার পড়ে। এছাড়াও চাকরি না করে অনেকেই এই নিয়ে নিজেদের ব্যবসাও করতে পারেন।
কেমিক্যাল – এই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে ইঞ্জিনিয়াররা পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগ, জ্বালানি এবং অন্যান্য উপাদানের কাঠামো এবং সে গুলি প্রস্তুত করার উপায় গুলি নির্ণয় করেন। বিভিন্ন ল্যাবরেটরীতে যে ওষুধপত্র তৈরি হয় সেখানেও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর দরকার হয়।
মেরিন – এই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে ইঞ্জিনিয়াররা বিভিন্ন জলযানে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির নির্মাণ, পরিচালনা করা ও জাহাজ বা অন্যান্য জলযানের যে কোনো সমস্যার সমাধান করেন। এই ফিল্ডে মুলত সকলকে নিজেদের বাড়ি থেকে দুরে গিয়ে থেকে কাজ করতে হয়।
সফটওয়্যার – এই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে ইঞ্জিনিয়াররা কম্পিউটার সফটওয়্যার সংক্রান্ত কাজ করেন। কম্পিউটার তৈরি করা বা কম্পিউটারের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে থাকেন। কিন্তু যবে থেকে AI এসেছে তবে থেকে এই সকল ফিল্ডে কাজের সুযোগ অনেকটাই কমে যাচ্ছে এবং TCS ও Infosys এর মত সকল কোম্পানি গুলো কিছুদিন আগে অনেক কর্মী ছাঁটাই করে দিয়েছেন, সেই নিয়েও চিন্তায় অনেকে।
ইঞ্জিনিয়ারিং এর আরও অন্যান্য শাখা রয়েছে, যেমন – ইলেকট্রনিক্স, পাওয়ার, এনার্জি, ফ্লাইট, লোকোমোটিভ, ন্যানো সিস্টেম, নিউক্লিয়ার, পেট্রোলিয়াম, পলিমার, রোবোটিক্স, সিভিল, প্রোডাকশন, ইন্সট্রুমেন্টেশন, টেক্সটাইল, জিওথার্মাল, এগ্রিকালচারাল, এরোস্পেস, উইন্ড, ওয়াটার, সেলস, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইত্যাদি।
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পর চাকরির সুযোগ কেমন?
ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক বা স্নাতকোত্তর করে আপনি সরকারি বা বেসরকারি চাকরি পেতে পারেন। আপনি যদি জনসেবামূলক কাজ করতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে, ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (UPSC) দ্বারা আয়োজিত ‘ইন্ডিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস’ পরীক্ষায় বসতে পারেন অথবা পরীক্ষা দিয়ে বিভিন্ন রাজ্য সরকারি দফতরে চাকরি করতে পারেন।
দেশের বা বিদেশের বড় শিল্প সংস্থা গুলিতে ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ করা হয়। এছাড়াও যারা উচ্চ শিক্ষায় গিয়ে গবেষনা করতে চান ও শিক্ষকতা করতে চান, তাঁদেরও যথাযথ যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়। আপনি যদি বেশি সেলারি দিকে লক্ষ্য রাখেন তাহলে কম্পিউটার সায়েন্স, মেকানিক্যাল, ইলেক্ট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স ও কমিউনিকেশন, কেমিক্যাল ও ডিজাইন চাকরিতে বেশি বেতন দেওয়া হয়।
ইঞ্জিনিয়ার হতে পারলে সুবিধা
১) আপনি দেশের মধ্যে চাকরি করার সুযোগ পাচ্ছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে, এছাড়াও দেশের বাইরে বিদেশে চাকরি করার অনেক সুযোগ রয়েছে।
২) ইঞ্জিনিয়ারিং লাইনে চাকরি করলে আপনি পার্ট টাইম কাজ কম পাবেন কারণ ইঞ্জিনিয়ারিং লাইনে ফুল টাইম কাজ দেওয়া হয়।
৩) ইঞ্জিনিয়ারিং লাইন নিয়ে পড়াশোনা করলে এবং চাকরি পেলে আপনি কর্মক্ষেত্রে হিসেবে অফিস বেছে নিতে পারেন, এছাড়াও ফিল্ডেও কাজ করার সুযোগ পাবেন। বিশেষ করে সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা বা এগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়াররা ফিল্ডে বেশি কাজ করে থাকেন।
৪) ইঞ্জিনিয়ারদের মোট মাট দিনে ১০ ঘন্টা কাজের সময় বরাদ্দ থাকে।
৫) ডেডলাইনে কাজ জমা করার ব্যাপার থাকায় ইঞ্জিনিয়ারদের অনেক ক্ষেত্রেই সাপ্তাহিক ৪০-৪৫ ঘন্টা কাজ করতে হয়।
ইঞ্জিনিয়ার হতে গেলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও অঙ্ক নিয়ে ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে কোনও স্বীকৃত বোর্ড থেকে পাশ করতে হবে। এরপর বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তির জন্য জয়েন্ট এন্ট্রাস মেন্স পরীক্ষা, জয়েন্ট এন্ট্রাস অ্যাডভান্সড পরীক্ষা, ভিআইটিইইই এবং বিটস্যাট পরীক্ষায় বসতে পারেন ছাত্র ছাত্রীরা। পরীক্ষায় যদি পাশ করে প্যানেলে নাম থাকে, তাহলে আপনার পছন্দ অনুযায়ী যে কোনো একটি ইঞ্জিনিয়ারিং লাইন নিয়ে আপনি পড়াশোনা করার সুযোগ পাবেন।
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য ভারতের সেরা কলেজ
- IIT Madras
- IIT Delhi
- IIT Bombay
- IIT Kanpur
- IIT Kharagpur
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গে সেরা কলেজ
- IIT Kharagpur
- Jadhavpur University
- NIIT Durgapur
- IIEST Shibpur
- Dr.B.C.Roy College
আর প্রত্যেককে যে কোন ফিল্ডে যাওয়ার আগে ভালো করে সকল দিক বিচার করে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। কারণ এখন এই ফিল্ডে অনেক বেশি মানুষ চলে আসার জন্য চাকরির বাজার খুব একটা ভালো না এমনকি একটাও দেখতে পাওয়া যায় অনেক মানুষ আছেন যারা B.Tech করেও অন্য কোন চাকরি করছেন এবং কিছু বড় বড় টেক কোম্পানি গুলো মাঝে মধ্যেই কর্মী ছাঁটাই করছে, তাই চাকরির ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তা থাকে অনেকের।
আরও পড়ুন:- কিভাবে মাত্র 50 টাকায় পাবেন নতুন QR যুক্ত Pan Card! এক ক্লিকে জেনে নিন
আরও পড়ুন:- ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব নিলেন পলাতক ললিত মোদী, কোন সুবিধা পাওয়ার জন্য এই কাজ করলেন ? জানুন