Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- রবিবার ভোর তিনটের সময় তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী অ্যাশগাবাত পৌঁছোনোর পর রীতিমতো ‘বন্দি’ ইষ্টবেঙ্গল। বিমানবন্দরে নেমেই হেনস্থার শিকার হতে হল লাল-হলুদ ফুটবলারদের। প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও নানা অজুহাতে ইমিগ্রেশনের জন্য প্রায় আড়াই ঘণ্টা বিমানবন্দরে আটকে রাখা হয় সবাইকে। নোংরা জলে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে।
খাওয়া নিয়ে সমস্যা
ভীষণ সমস্যা খাবার নিয়েও। ইস্টবেঙ্গলের পক্ষ থেকে আগেই ফুটবলারদের সারাদিনের খাবারের তালিকা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্রেকফাস্ট করতে গিয়ে দেখা যায় ডায়েট মেনে কোনও রান্নাই হয়নি। বেশিরভাগ ফুটবলার সেই খাবার খাননি। দুপুরে হোটেলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় মাত্র তিনটি পদ। মোটা চালের ভাত, পাতলা ডাল এবং একটি করে মাছ ভাজা। আগে বলা সত্ত্বেও ছিল না মাংস বা ডিমের কোনও পদ। যথেস্ট বড় হোটেল, তাও নোংরা জলের বালতি থেকে জল নিয়ে রান্না করা হচ্ছে। হোটেলের কল খুললে প্রথমে কাদা জল বেরোচ্ছে। ইস্টবেঙ্গলের চারপাশে তৈরি করা হয়েছে একটা ভয়ের বলয়। হোটেলে ওয়াইফাই থাকলেও তা অত্যন্ত স্লো। আবার সেখানে সব সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ব্লক করা।
আরও পড়ুন:- কালো জল: কেন ক্রমে বাড়ছে এর জনপ্রিয়তা ? জানতে বিস্তারিত পড়ুন
বাড়ির মানুষের সঙ্গে কথাও বলতে পারছেন না ফুটবলাররা
ফুটবলাররা যে সামান্য বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলবেন, তাও পারছেন না। অন্য পদ্ধতিতে মাঝেমধ্যে কেউ কেউ শুধু হোয়াটসঅ্যাপ করতে পারছেন। স্থানীয় সিম চাওয়াতে গোটা দলের জন্য মাত্র চারটি সিম কার্ড বরাদ্দ করা হয়। আগেই ইস্টবেঙ্গল জানিয়েছিল, ফুটবলাররা বিকেলবেলা হাঁটতে যাবেন। কিন্তু সেখানেও জারি নিষেধাজ্ঞা। অনেকক্ষণ কথা বলার পর জানানো হয়, বিকেল ৪টের সময় একটি বাস আসবে।
পাসপোর্ট নিয়ে নেওয়া হয়েছে ফুটবলারদের
সে দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের দল এই আর্কমায়। পুরো শহর তাঁর নিয়ন্ত্রণে। এলাকা কার্যত মানবশূন্য। পর্যটকদের প্রবেশের অধিকার নেই। রাস্তায় শুধুই পুলিশ এবং সেনা। ইস্টবেঙ্গল দল হোটেলে ঢোকার পরেই সবার পাসপোর্ট জমা নিয়ে নেওয়া হয়। রাত পর্যন্ত সেগুলো ফেরত দেওয়া হয়নি কাউকে। পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, হোটেলের বাইরে আর্কাদাগের প্রতিনিধি ছাড়া কেউ বেরোতে পারবেন না। রুমে
সামান্য টুথপেষ্ট, ব্রাশ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
নজরদারির মুখে ইস্টবেঙ্গল
ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা নির্দিষ্ট সময়ের আগে চলে এলেও, বাস আসে ৪টে ৫০ মিনিটে। ইস্টবেঙ্গলের বাস যখন স্টেডিয়ামে যাচ্ছে, তখন পুরো রাস্তা পিছু নেয় একটি গাড়ি। অথচ সেই গাড়ির কথা নাকি কিছুই জানে না আর্কাদাগ ম্যানেজমেন্ট। মূল মাঠের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। গোটা জমি উঁচু-নিচু। কোনও জায়গায় ঘাস বড়, কোথাও ছোট। চোট লাগার সমূহ সম্ভাবনা। বাইরে ছবি তোলার ক্ষেত্রেও জারি হয় নিষেধাজ্ঞা। সবমিলিয়ে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের ম্যাচ খেলতে গিয়ে ঘোরতর সমস্যায় ইস্টবেঙ্গল।