Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- হতাশা ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উপায় (Overcome Anxiety and Depression) খুঁজে বেড়াচ্ছেন অনেকেই। মানুষ মাত্রই মাথায় নানা রকমের চিন্তাভাবনা আসবে। এই চিন্তা ভাবনার পরিমাণ যদি স্বাভাবিক পরিমাণে হয় তাহলে ঠিক আছে, কিন্তু বাড়াবাড়ি ধরনের চিন্তাভাবনা আপনার মনে এমনকি শরীরে গুরুতর প্রভাব ফেলে। অনেক ব্যক্তি আছেন, যারা প্রয়োজনের তুলনায় অধিক চিন্তাভাবনা করেন।
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উপায় প্রাকৃতিক সমাধান
যে চিন্তাভাবনার কোন সূত্রই নেই সেই রকম চিন্তাভাবনা আপনার মননে এবং শরীরে প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে আপনার মানসিক সমস্যা এমনকি শারীরিক সমস্যার সূত্রপাত হতে পারে। আর আমরা অনেক বড় বড় নায়ক নায়িকার নামও জানি যে তারা কীভাবে এর শিকার হয়েছিলেন এবং অনেকে চিন্তাকে টাকার সঙ্গে যোগ করেন কিন্তু এমনটা নয়!
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে কি সমস্যা হয়?
কাজের পরিমাণ কমে যায় :- অহেতুক দুশ্চিন্তা আপনাকে সারাদিন রাত একটা ভাবনার মধ্যে ডুবিয়ে রাখবে। এই ভাবনার মধ্যে থাকলে আপনি আপনার দৈনন্দিন যে কাজকর্ম গুলো থাকে সেই গুলোতে ঠিকভাবে মন সংযোগ করতে পারবেন না। বিশেষ করে আপনি যদি ফ্রি টাইমে বসে থাকেন তাহলে এই সমস্ত চিন্তাভাবনা আরও জাকিয়ে বসে। প্রথমদিকে এই ফাকা সময় গুলোতে হয়তো ভাবনা এসে আপনাকে উচাটন করে তুলবে, ধীরে ধীরে যখন এর মাত্রা বৃদ্ধি পাবে, তখন কাজের মধ্যেও এই সমস্ত ভাবনা আপনার মনে প্রভাব সৃষ্টি করবে।
How to Overcome Anxiety and Depression?
ঘুম কমে যাওয়া:- অহেতুক দুশ্চিন্তা আপনার ঘুম কমিয়ে দিতে পারে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুমানো অত্যন্ত জরুরী। রাত্রিবেলা ভালো ঘুম হলে পরের দিন সকালে নিজেকে খুব চাঙ্গা মনে হয়, এর ফলে সারাদিন খুব ভালো করে কাজে মনোনিবেশ করা যায়। যদি আপনি অতিরিক্ত চিন্তা করেন তাহলে রাত্রিবেলা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে। কারণ ঘুমানোর জন্য দরকার পড়ে শান্ত মনের।
আরও পড়ুন:- 3 বছরেও চালু হল না মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের ‘পথক্ষণিকা’ প্রকল্প, কারণ কি ?
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও হতাশা কাটিয়ে উঠুন
চিন্তা যুক্ত মন নিয়ে কখনো ঘুম আসা সম্ভব নয়। অনেক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায় রাত্রিবেলা ভালো করে ঘুম হয় না, এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো অনেক দুশ্চিন্তা। টানা কয়েক দিন ঘুম না হলে তার প্রভাব শরীরে পড়বে। আপনাকে খুবই ক্লান্ত দেখাবে, কোন কাজেই সঠিক ভাবে করতে পারবেন না। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজলে এই সমস্যা থেকে বাঁচুন।
অলসতা:- অহেতুক দুশ্চিন্তা আপনাকে অলস করে তুলবে। চিন্তা একবার মনের গভীরে প্রবেশ করলে তার শিকড় অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। কোন রকম চিন্তা ভাবনা নিয়ে আপনি কোন কাজ করতে পারবেন না। আপনার শুধু শুয়ে বসে থাকতে ইচ্ছা করবে। এই জন্য অহেতুক দুশ্চিন্ত আপনাকে ধীরে ধীরে অলস করে তুলবে। আর অলস মস্তিস্ক শয়তানের ঘর! সেটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উপায় কি কি?
মানুষের মনে চিন্তা আসা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু দেখতে হবে এই চিন্তা আসার প্রক্রিয়াটি যাতে কোন ব্যাধিতে পরিণত না হয়ে যায়। মানুষের জীবনে প্রত্যেক দিন কোন না কোন ভাবে সমস্যা আসতেই থাকে। সমস্যা আসলেই মানুষের মনে নানা রকম চিন্তা ভাবনা সৃষ্টি হয়। কিন্তু অনেক সময় আমরা চিন্তার বাইরে গিয়েও অতিরিক্ত চিন্তা করে ফেলি যেটার কোন প্রয়োজন নেই।
মন ভালো রাখার উপায় জেনে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজুন
কিংবা একই বিষয় নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে অনেক দিন ধরে একই ভাবনা যদি কোন মানুষ ভাবতে থাকে তাহলে সেটি ডিপ্রেশনের আকার নিতে পারে। এর জন্য আপনার চিন্তাভাবনার গতি প্রকৃতি অহেতুক বা অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে কখন সে বিষয়ে বুঝতে হবে। তাহলেই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে পাবেন।
সমস্যার সমাধান খুঁজুন:- সমস্যা আসলে সেটাকে সমাধানের পথ বার করার চেষ্টা করুন। মানুষের জীবনে সমস্যা আসবেই কিন্তু সেই সমস্যা থেকে বের হওয়ার পথ নিশ্চয়ই থাকবে। এই জন্য একই ব্যাপার নিয়ে চিন্তা না করে সমস্যা থেকে কিভাবে সমাধান আসবে সেই চিন্তা করুন। যেটা হয়ে গেছে সেটা নিয়ে ভেবে মনকে শান্ত করা উচিত কাজ।
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উপায় জেনে জীবনকে উপভোগ করুন
নিজের জন্য সময় বরাদ্দ রাখুন:- মানুষকে ব্যাস্ত সিডিউলে থাকতে থাকতে অনেকেই নিজের জন্য সময় রাখতেই ভুলে যান। সারাদিনের কাজ, বাদ দিয়েও নিজের পছন্দের কাজকর্ম নিয়ে এক ঘন্টা হলেও নিজেকে সময় দিন, আপনার শখ অনুযায়ী যে কোন কাজ মনোযোগ সহকারে করুন। আপনার নিজের জন্য দেওয়া এই সময় আপনাকে অনেকটা শান্ত করে তুলবে ও আপনাকে হাসিখুশি রাখবে। সব সময় চেষ্টা করবেন নিজের পছন্দের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখার।
আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন:- অহেতুক দুশ্চিন্তা আপনাকে একটা সময় গিয়ে মানসিক সমস্যা সৃষ্টি করবে। এর ফলে আপনি অল্পতেই রেগে যাবেন। এই রাগ অনেক সময় নিজের কাছে ব্যক্তিদের উপর গিয়েও পড়ে। এই জন্য আপনি নিজেকে আবেগকে সংবরণ করার চেষ্টা করুন। আপনার মনের রাগের উদ্বেগ প্রকাশ পেলেও সেটাকে যতটা পারবেন সংযত রাখার।
অতীতকে অতীতের জায়গায় থাকতে দিন:- অতীতে যা ঘটে যায় সেটাকে নিয়ে নাড়াচাড়া করলে মনের মধ্যে আরও ভাবনা চিন্তার সৃষ্টি হয়। কেন ভুল করলাম, কেন এই কাজ করলাম এই রকম ভাবনা ভাবতে ভাবতে মন আরো বিষন্নতায় ভরে যায়। এই জন্য অতীত নিয়ে ভাবা বন্ধ করুন। মনে রাখবেন ‘যা হয় ভালোর জন্যই হয়’! আর সঠিক সময়ে সেটা বুঝতেও পারে সকলে। অতীতকে অতীতের জায়গায় রেখে বর্তমানকে সুন্দর করার চেষ্টা করুন যাতে ভবিষ্যৎ সুন্দর হয়।
আর সঠিক সময়ের অপেক্ষা করুন সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে এবং সকলের যা চাহিদা আছে সেটা সম্পন্ন হবে। আর যেই ধর্মকে বিশ্বাস করেন সেই ভগবানের শরণাপন্ন হন অনেক শান্তি পাবেন মনের দিক থেকে। কারণ আমরা জানি যে কর্মের ফল সকলকেই ভোগ করতে হয় সেই কারণের জন্য লাফালাফি না করে যা হচ্ছে হতে দিন ও অপেক্ষা করুন এর থেকে ভালো দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উপায় নেই।
আরও পড়ুন:- ফোন হ্যাক করা হয়েছে কি না, কেমন করে বুঝবেন? জেনে নিন
আরও পড়ুন:- গুগল ম্যাপে লেখা ‘পুলিশ এখানে ধরে, টাকা নেয়’ ! নেপথ্যে কারা ?