স্বচ্ছতা বাড়াতে রেশন কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্ত, বিস্তারিত জানুন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- রেশন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে এবং প্রকৃত উপভোক্তাদের সুবিধা নিশ্চিত করতে দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। 2021 সালে এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর লক্ষাধিক কার্ড বাতিল হয়। এর ফলে খাদ্য সামগ্রীর অপচয় রোধ হয় এবং সরকারি তহবিলের সাশ্রয় হয়। এবার কেন্দ্রীয় সরকারও পশ্চিমবঙ্গের এই মডেল অনুসরণ করতে চাইছে ৷

2024 সালের অগস্টে চালু হওয়া রাজ্যের নতুন ‘পিডিএস কন্ট্রোল অর্ডার’ অনুযায়ী, যদি কোনও গ্রাহক পরপর দুই মাস রেশন না নেন, তবে তার কার্ড সাময়িকভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। যদি তিনি পরবর্তী 6 মাসের মধ্যে আধার ভিত্তিক বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের মাধ্যমে ‘ই-কেওয়াইসি’ সম্পন্ন না করেন, তবে তার কার্ড স্থায়ীভাবে বাতিল হয়ে যাবে।

কেন্দ্রীয় সরকারও এই নীতি অনুসরণ করে সমস্ত রাজ্যে অনুরূপ ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে ৷ কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী, যেসব গ্রাহক টানা ছয় মাস রেশন সংগ্রহ করবেন না, তাদের কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। এরপর অতিরিক্ত তিন মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিয়ে এবং ‘ই-কেওয়াইসি’ সম্পন্ন করে কার্ড পুনরায় সক্রিয় করার সুযোগ দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন:- ‘ভূতুড়ে ভোটার’ তাড়াতে বড় সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের, জানতে বিস্তারিত পড়ুন

খাদ্য দফতর জানিয়েছে, রেশন কার্ড সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় করার জন্য আধার ভিত্তিক বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের ব্যবস্থা স্থানীয় খাদ্য দফতর অফিস এবং রেশন দোকানের ই-পস মেশিনের মাধ্যমে করা হয়েছে। ফলে গ্রাহকরা তাদের নিকটস্থ রেশন দোকানে গিয়েই আধার যাচাই করিয়ে কার্ড পুনরায় চালু করতে পারবেন।

তবে এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে কিছু বিতর্কও দেখা দিয়েছে ৷ রেশন ডিলারদের সর্বভারতীয় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানান, রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় করার আগে গ্রাহকদের অবহিত করার কোনও সরাসরি ব্যবস্থা নেই। ফলে অনেকে না-জেনেই রেশন সুবিধা হারাচ্ছেন। তিনি মনে করেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সমন্বয় থাকা উচিত, যাতে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত না হন।

এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর ইতিমধ্যে প্রায় দেড় কোটি নিষ্ক্রিয় কার্ড বাতিল করা হয়েছে ৷ খাদ্য দফতরের মতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব কার্ডের প্রকৃত মালিক তাদের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে আসেননি, যা বোঝায় যে তারা হয় এই সুবিধার প্রয়োজন নেই, নয়তো কার্ডটি অপ্রয়োজনীয় ছিল। এর ফলে সরকারের খাদ্য ভাণ্ডারের অপচয় রোধ হয়েছে এবং প্রকৃত সুবিধাভোগীদের জন্য সংস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, রেশন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বৃদ্ধির জন্য এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ হলেও, বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরও জনবান্ধব নীতি গ্রহণ করা দরকার। অনেক ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল জটিলতা, তথ্যের অভাব এবং প্রশাসনিক সমস্যার কারণে প্রকৃত সুবিধাভোগীরাও বঞ্চিত হতে পারেন। তাই খাদ্য দফতর ও প্রশাসনের উচিত রেশন গ্রাহকদের সচেতন করা এবং তাদের জন্য সহজতর প্রক্রিয়া তৈরি করা, যাতে তারা কোনও ধরনের জটিলতা ছাড়াই এই সুবিধা পেতে পারেন।

রাজ্যের এই পদক্ষেপ রেশন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে সাহায্য করেছে এবং সরকারি খরচ কমিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ৷ কেন্দ্রীয় সরকারও এই নীতি অনুসরণ করতে চাইছে, যা সামগ্রিকভাবে দেশের খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থাকে আরও সুশৃঙ্খল করতে পারে। তবে, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং কার্যকর বাস্তবায়ন ছাড়া এই উদ্যোগের সফলতা পুরোপুরি নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা ৷

আরও পড়ুন:- জীবিত মেয়ের শ্রাদ্ধ করলেন বাবা-মা, কারণ জানলে চমকে যাবেন

আরও পড়ুন:- বাইক কতদিন অন্তর সার্ভিস করাবেন? ইঞ্জিন অয়েল কত কিমি অন্তর বদলাতে হয়? জেনে নিন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন