Bangla News Dunia, Pallab : গত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদ জেলার একাধিক এলাকা। সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে মুসলিম সম্প্রদায়ের একাংশ আন্দোলনে শামিল হয়েছে। আর এর ফলেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি জেলার জঙিপুর, সুতি, সামসেরগঞ্জ, ধুলিয়ান সহ বহু এলাকা। ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় মোতায়েন রয়েছে আধাসেনা। বেশ কয়েকটি এলাকায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন হিন্দুরা। প্রাণের ভয় নিজের ভিটে মাটি ছেড়ে পালাচ্ছেন বহু হিন্দুরা। শনিবার রাতে এমনই কিছু খণ্ড চিত্র দেখা গেল ধুলিয়ান ফেরিঘাট এলাকায়। সেখানে এলাকা এলাকা ছাড়ার আগে তাঁদের বক্তব্য, হিন্দুদের ঘরে ঘরে গিয়ে মা বোনেদের ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি বলছে হিন্দুদের টিকতে দেবে না।
আরও পড়ুন : এই ৫ সস্তার খাবার ভিটামিন সি-এর ভাণ্ডার, শরীরকে রোগমুক্ত রাখে
সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে মুসলিম সম্প্রদায়ের একাংশের আন্দোলনের ফলে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর, সুতি, সামসেরগঞ্জ, ধুলিয়ান সহ আরও বেশ কয়েকটি মুসলিম অধ্যুসিত এলাকা। এই ঘটনায় গুলি বিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক কিশোরের। এক হিন্দু পরিবারের বাবা ও ছেলেকে ঘরে ঢুকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে ধুলিয়ানে। সেখানে মুসলিমদের আন্দোলনের জেরে আতঙ্কিত সেখানকার বসবাসকারি হিন্দুরা। ইতিমধ্যেই আতঙ্কে এলাকা ছাড়তে শুরু করেছেন হিন্দুরা। এলাকায় যানচলাচল বন্ধ থাকায় নদীপথে এলাকা ছাড়তে দেখা গিয়েছে বহু মানুষকে। ধুলিয়ান ফেরিঘাটে জমায়েত হওয়া হিন্দুরা সাফ জানিয়ে দেন, ‘কিছুই নেই আর। সব শেষ। সোনার গয়না, ভাল জিনিস ঘর থেকে নিয়ে ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে আমাদেরই প্রতিবেশী কিছু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। মারধর করছে। পুলিশ আসছে যখন পালিয়ে যাচ্ছে। তারপর আবার। কিছুই নেই আমাদের আর। মাথা গোঁজার জায়গাটাও নেই।’
অপর এক মহিলা বলেন, ‘সব বোমাবাজি করছে। আমাকে বলছে মোদি বিল পাশ করেছে, একটা হিন্দুকেও টিকতে দেব না। হিন্দুদের রাহাজানি করব। সোনা-দানা নিয়ে নিয়েছে, পয়সা নিয়ে নিয়েছে। তারপর আগুন লাগিয়ে দেয়। মালদহে ঠাঁই নিচ্ছি প্রাণ বাঁচানোর জন্য। মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে মেরে। আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। বাচ্চারা সব না খেয়ে আছে। তিনবার করে ঘর পুড়িয়েছে। মেয়েদের বলছে ধর্ষণ করব। হাত ধরে টানছে। দাদা দাদা বলছি, তাও মানছে না। বলছে হিন্দুদের ছাড়ব না।’
এতটাই সেখানে ভয়াবহ পরিস্থিতি যে, ভিটেমাটি হারিয়ে মুর্শইদাবাদ জেলার পাঁচ শতাধিক হিন্দু আশ্রয় নিয়েছে মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার পারলালপুর হাইস্কুলে। পারলালপুরের স্থানীয়রাই জল ও শুকনো খাবার দিয়ে সাহায্য করছেন। প্রশাসনিক স্তরে এই বিপদগ্রস্ত মানুষের জন্য প্রশাসনিক স্তরে কিছু করা হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
তবে, প্রশাসন সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। মোটের ওপর শান্ত রয়েছে। সারারাত পুলিশি টহল চলেছে। এলাকায় উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। সকাল থেকেও স্থানীয় পুলিশ ও বিএসএফ টহল দিচ্ছে। বিএসএফর উচ্চপদস্থ আধিকারিকও উপস্থিত রয়েছেন এলাকায়। বাড়ানো হয়েছে আধাসেনা।