Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- দিল্লির লক্ষ্মীবাই কলেজের অধ্যক্ষ প্রত্যুষ ভাটসালা সম্প্রতি একটি গবেষণা প্রকল্পের অংশ হিসেবে কলেজের কয়েকটি ক্লাসরুমের দেওয়ালে গোবরের প্রলেপ দেওয়ার উদ্যোগ নেন। গোবর লেপের উদ্দেশ্য—প্রাচীন ভারতীয় পদ্ধতি অনুসারে গরমকালে ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা এবং জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্যের কারণে ক্লাসরুমকে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে রূপান্তর করা। অধ্যক্ষ নিজেই এক কর্মচারীর সঙ্গে মিলে সেই কাজ করেন এবং কাজের একটি ভিডিও কলেজ শিক্ষকদের গ্রুপে শেয়ার করলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
সমর্থন–সমালোচনা দু’পাশেই ঝড়
ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমর্থন ও সমালোচনার বন্যা বইতে শুরু করে। সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছেন, “এমন ‘আজগুবি’ কাজে অধ্যক্ষ ব্যস্ত থাকলে কলেজে পড়াশোনা করার পরিবেশ কি উপযুক্ত হবে?” কেউ কেউ লেখেন, “গোবরের পর কী গোমুত্র পান করাতে বলবেন?” অন্যদিকে, অনেকেই অধ্যক্ষের এই প্রাথমিক প্রয়াসের প্রশংসা করেছেন। বিশেষ করে তার হাতেকলমে গবেষণা কাজে নিজে অংশ নেওয়ার মনোভাব উদাহরণযোগ্য বলে মন্তব্য করেন অনেকে।
অধ্যক্ষের ব্যাখ্যা
সমালোচনার মুখে অধ্যক্ষ ভাটসালা স্পষ্ট করেন, “এটি কোনো ধর্মীয় প্রচেষ্টা নয়, বরং একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রকল্প। আমরা প্রাচীন পদ্ধতি অনুসরণ করে দেখতে চাই গোবরের প্রলেপ ক্লাসরুমের তাপমাত্রা কতটা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এক সপ্তাহের মধ্যে গবেষণার বিস্তারিত ফলাফল এবং পরবর্তী পরিকল্পনা প্রকাশ করব।”
গোবরের বৈজ্ঞানিক প্রেক্ষাপট
গ্রামাঞ্চলে বরাবরই মাটির সঙ্গে গোবর মিশিয়ে বাড়ি নির্মাণে তার তাপ নিরোধক ও জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্য কাজে লাগানো হয়। উত্তর ভারতে গরমে ছাদে গোবরের প্রলেপ দেওয়া হয়, শীতে তাপ ধরে রাখতে গোবর সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এহেন ঐতিহ্যভিত্তিক জ্ঞানই লক্ষ্য–বস্তুনিষ্ঠভাবে পরীক্ষায় আনতে চাইছেন অধ্যক্ষ।
কলেজের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
কলেজ প্রশাসন জানায়, লেপানো ক্লাসরুমে পর্যবেক্ষণ শুরু হয়েছে। তাপমাত্রা–আর্দ্রতা পরিমাপের পাশাপাশি ছাত্র–শিক্ষকদের স্বাচ্ছন্দ্য যাচাই করা হবে। প্রাথমিক ফল ভালো হলে অন্য ক্লাসরুমেও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি, প্রলেপের দেহে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য প্রভাব ও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার বিষয়েও গবেষণা চলবে।
১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং সরাসরি দিল্লি রাজ্য সরকারের অধীনে পরিচালিত এই কলেজের উদ্যোগ প্রশংসিত হলেও, গবেষণার বৈজ্ঞানিক মান নিশ্চিত করতে নিয়মিত ফলাফল প্রকাশ এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখা জরুরি—এমনই মত শিক্ষাবিদদের। আগামী সপ্তাহে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশের পরই এ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ রূপ–পরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে।
আরও পড়ুন:- এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম জায়গা, যেখানে মানুষ পৌঁছলে আর ফিরতে পারবে না