Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- আগামী রবিবার, 20 এপ্রিল সিপিএমের চারটি গণসংগঠনের ডাকে ব্রিগেড সমাবেশ ৷ তার প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে । কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় এই চার সংগঠনের পতাকায় ছেয়ে ফেলা হচ্ছে । ব্রিগেড ময়দানে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ । কয়েকশো বাঁশের মাথায় লাগানো হচ্ছে মাইক-আলো ।
অন্যদিকে, সারা ভারত কৃষক সভা, সারা ভারত ক্ষেতমজুর সংগঠন, পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতি ও সিটুর নেতারা এখন ফোনাফুনিতে ব্যস্ত । কোন জেলা থেকে কত লোক আসবে ? কোন জেলা থেকে কত বাস ঢুকবে ? কোথায় রাখা হবে তার যাবতীয় তথ্য-দায়িত্ব ধাপে ধাপে বিভিন্ন গণসংগঠনের কাছে তুলে দিচ্ছেন ।
সিপিএমের ব্রিগেড সমাবেশের প্রস্তুতি
তবে অন্যান্য বার ব্রিগেডের মতো উত্তরবঙ্গ কিংবা দূরের জেলা থেকে আগের রাতে আসা কর্মী-সমর্থকদের জন্য সিপিএমের তরফে কোনও খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না । প্রাথমিকভাবে ওয়াই চ্যানেলে আগের রাতে আসা কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করতে চেয়ে কলকাতা পুলিশকে চিঠি দিলেও তা অনুমতি মেলেনি ।
পরিবর্তে মৌলালির রামলীলা ময়দানে দূরের জেলা থেকে আগত কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে । সেখানে পানীয় জল ও শৌচালয়ের ব্যবস্থা থাকবে । আলো বা বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে দলীয় তরফে । কিন্তু কোনোভাবেই রাতের বা পরের দিন সকালের খাবারের ব্যবস্থা করছে না দল ।
সিটু নেতা অনাদি সাহু বলেন, “পর্যাপ্ত পানীয় জল ও থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে । রাতে রান্নার কোনও ব্যাপার নেই । যে যাঁর খাবার নিজেই জোগাড় করে নেবেন । সেভাবেই আমাদের বলা আছে । শহর কলকাতা তো আর খাওয়ার জায়গার অভাব নেই । তবে হ্যাঁ দূরের জেলা থেকে আগত মহিলা কর্মীদের পার্টির বিভিন্ন শাখা সংগঠনের অফিসগুলোতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে । কোনোরকম সমস্যা হবে না । পুরুষদের জন্য রামলীলা ময়দানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে । সেখানে পানীয় জল ও বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা থাকবে । আলো ও পাখা ব্যবহার করা হবে । থাকবে শৌচালয়ের ব্যবস্থাও ।”
সিপিএমের ব্রিগেড সমাবেশের প্রস্তুতি
সিপিএম সূত্রে খবর, আর দশ লক্ষ মানুষের সমাবেশে ঘটার আশা করা হলেও সাড়ে চার থেকে পাঁচ লক্ষ মানুষ ব্রিগেডের উদ্দেশে কলকাতায় আসবেন বলে মনে করছে তারা । শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গের সাতটি জেলা থেকেই প্রায় লক্ষাধিক মানুষ আসবে বলে বাস-ট্রেনের টিকিট বুক করা হয়েছে । মূলত, তারাই আগেরদিনকে এসে হাজির হবেন কলকাতায় । তাঁদের জন্য সিটু, কৃষক সভা, এসএফআই অফিস, সিপিআইএম কলকাতা জেলা অফিস, বস্তির উন্নয়ন সমিতির অফিস-সহ বিভিন্ন গণসংগঠনের অফিসে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে ।
আর কী ব্যবস্থা থাকছে ? অনাদি সাহু জানান, মূলত কৃষক খেটে খাওয়া দিনমজুরেরা এই ব্রিগেডে আসবেন । যাঁদের প্রখর রৌদ্রে থাকার অভ্যাস আছে । ফলে বৈশাখের এই গরমেই বা রোদে তাদের গামছা টুপি ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে । গামছা মাথায় এই মহানগরের পথে মিছিল করে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছাবেন তাঁরা । মঞ্চের সামনে প্রায় 40-50 হাজার রেড ভলেন্টিয়ার লাল টুপি মাথায় ঝড়-রোদ-বৃষ্টি যাই হোক না কেন, সবার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বসে থাকবেন ।
সিপিএমের ব্রিগেড সমাবেশের প্রস্তুতি
তিনি আরও জানান, সমাবেশ শুরুর আগে শিয়ালদা হাওড়া পার্ক সার্কাস মিলিয়ে মোট আটটি জায়গা থেকে বড় মিছিল ময়দানমুখী হবে । মুর্শিদাবাদ, নদিয়া ও উত্তর 24 পরগনা জেলাগুলো থেকে আগত কর্মী সমর্থকরা শিয়ালদায় মিছিলে সামিল হবেন । দক্ষিণ 24 পরগনা থেকে আসা মানুষ পার্ক সার্কাসের মিছিলের শামিল হবেন । বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া ও হুগলির মানুষ হাওড়ার মিছিলে যোগ দেবেন । প্রত্যেকটি মিছিল বেলা একটায় ব্রিগেডের উদ্দেশে রওনা দেবে । সমাবেশ শুরু হবে বেলা তিনটেয় । প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম । এবং উদ্যোক্তা চারটি সংগঠনের পদাধিকারীরা বক্তৃতা করবেন ।
সিপিএমের ব্রিগেড সমাবেশের প্রস্তুতি
বস্তির উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুখরঞ্জন দে বলেন, “কলকাতা, হাওড়া, আসানসোল, দুর্গাপুর-সহ গোটা রাজ্যের বিভিন্ন বস্তি থেকে প্রায় 50 হাজার মানুষ এই ব্রিগেডের শামিল হবেন । তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা জানানো হবে ।”
ব্রিগেডের মাঠে কী কী ব্যবস্থা থাকছে ? অনাদি সাহু বলেন, “তৃণমূল-বিজেপির মতো আমাদের বিপুল টাকা নেই । তাই আমরা সভামঞ্চ জুড়ে সামিয়ানার ব্যবস্থা করতে পারি না । খোলা আকাশের নিচেই সভামঞ্চ ও সভাস্থল হবে । শুধুমাত্র মেডিক্যাল ক্যাম্প বা বুকস্টল গুলোতে ছাউনির ব্যবস্থা থাকবে ।”
আর কী হবে —
- 48 ফুট চওড়া ও 28 ফুট লম্বা ত্রিস্তর মঞ্চ তৈরি হচ্ছে ৷ মঞ্চের সামনের অংশটি হবে 12 ফুট লম্বা ৷
- পিছনে 8 ইঞ্চি উচ্চতায় আরেকটি মঞ্চ ৷ যা 8 ফুট লম্বা হবে ৷
- তৃতীয় ধাপে 8 ইঞ্চি উচ্চতার আরেকটি 8 ফুট লম্বা মঞ্চ তৈরি হচ্ছে ৷
- মঞ্চের সামনে 8 ফুট লম্বা ও 8 ফুট চওড়া একটি অংশ তৈরি হচ্ছে ৷
- সিপিএমের ছাত্র, যুব ও মহিলা সংগঠনের তরফে একাধিক মেডিক্যাল ক্যাম্প ও জলের প্যাকেট বিতরণের ব্যবস্থা থাকছে ৷
পিআরসি বা পিপলস রিলিফ কমিটির দু’টি মেডিক্যাল ক্যাম্প থাকবে । - এনবিএ দু’টি বুকে স্টল ।
- ছোটখাটো অনেকগুলো জলের স্টল ।
- মিডিয়াকে লাইভ ফুটেজ দেওয়ার জন্য আলাদা মিডিয়া সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে ।
- পিসিআর ভ্যান রাখার আলাদা জায়গা তৈরি করা হচ্ছে ।আরও পড়ুন:- ১ ও ২ টাকার কয়েন বাতিল? দেখুন RBI এর নির্দেশিকা