কেমন হল CPIM-এর ‘প্রতিরোধের ব্রিগেড’? কি বললেন সেলিম ?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ভোট এখনও অনেক দেরিতে। তার আগেই শ্রমিক, কৃষক মেহনতী মানুষের ব্রিগেড ডাকল বামেরা। শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর ও বস্তি ফেডারেশনের ডাকে বামেদের এই ব্রিগেড সমাবেশে তৃণমূল ও কংগ্রেসকে একযোগে আক্রমণ করলেন সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেলিম বলেন, সেলিম বলেন, ‘‘যাঁরা দূরবীন দিয়ে লাল ঝান্ডা দেখতে পাচ্ছিল না, তাদের বুকে কাঁপন ধরাবে এই ব্রিগেড। কাজের জায়গা ছোট হয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্র, রাজ্যে কোথাও নিয়োগ হচ্ছে না। যেখানে নিয়োগ হচ্ছে, সেখানে দুর্নীতির পাহাড়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাকে ঝামা ঘষে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ২৬ হাজার মানুষের চাকরি গিয়েছে। আমাদের দাবি, সাম্প্রদায়িক হিংসা যে ছড়াবে, পুলিশকে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। না হলে আমরা রাজ্যের সব থানায় এফআইআর করব। লাল ঝান্ডা কোনও কাপড়ের টুকরো না। চিটফান্ডের টাকা দিয়ে তা কেনা হয়নি। এত রোদে কী ভাবে লাখ লাখ মানুষ বসবেন, অনেকে চিন্তা করছিলেন। কিন্তু আমাদের প্রতি প্রকৃতিও সহায়। তপ্ত রোদ ওঠেনি। আমি মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে গিয়েছিলাম, সুতিতে গিয়েছিলাম। কোথাও পুলিশের গুলিতে কোথাও হামলাকারীদের আক্রমণে মানুষ মারা গিয়েছেন। আমি সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে তাঁদের কাছে গিয়েছিলাম। হিংসা দেখলে ডান্ডাগুলোকে মোটা করতে হবে। দেশ বাঁচাতে হলে আবার লাল ঝান্ডাকে মজবুত করতে হবে।’’

সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক বলেন, মুর্শিদাবাদে যা হল, রামনবমী, ইদ, জুম্মার নামাজ, হনুমান জয়ন্তীতে খালি দেখলাম এ বলে ঠুসে দেব ও বলে ঠুসে দেব। আসলে কেউই কিছু করছে না। বিজেপি-তৃণমূলের নেতাদের স্ক্রিপ একজনই লিখেছেন মোহন ভগবত। উনি এসেছিলেন কয়েকদিন আগে এখানে। ২০২৬-এর নির্বাচনে বিজেপি-তৃণমূলকে কী করতে হবে বলে দিয়েছেন। বিরোধী দলের নেতা তৃণমূলের সাজানো আছে। উনি এখন মহান সাজতে চাইছেন। যারা ঘৃণার ভাষণ দিচ্ছে কেন পুলিশ মামলা করছে না? নয়ত, আমরা গোটা রাজ্যজুড়ে এফআইআর করব। চিট ফান্ডের টাকা দিয়ে লাল-ঝান্ডা কেনা হয়নি। আমাদের কর্মীদের জন্য কোনও AC ক্যাম্প করতে হয়নি। কোনও খাবারের ব্যবস্থা নেই। মিডিয়া ভাবছিল লোক হবে কি না। কিন্তু হয়েছে। প্রকৃতি আমাদের সহায়।

আরও পড়ুন:- বড় খবর! এবার থেকে মাতৃভূমি লোকালে উঠতে পারবেন পুরুষরাও ।

যাঁরা বলেছিল সিপিএম শেষ। তাঁদের বলছি, আমরা আছি। আধপেটা খেয়েও আমার কর্মীরা লাল ঝান্ডা ছাড়েনি। আমাদের নীতি-আদর্শ আছে। আমি ফুটবল পছন্দ করি। একটু নেমে খেলতে হয়। আমাদের একটু নেমে খেলতে হবে। যাতে চোরগুলোকে টেনে নামাতে পারি। গরিবের লড়াই গরিবকে লড়তে হবে। মোদী বলছেন সবকা সাথ সবকা বিকাশ। এখন ধরে ধরে সবকা বিনাস। ব্রিগেড মঞ্চে বন্যা টুডু সম্পর্কে সেলিম বলেন, ‘‘লড়াইয়ের ময়দান থেকে উঠে এসেছে বন্যা। আমাদের নেতানেত্রী টালিগঞ্জ বা বলিউড থেকে উঠে আসে না। শ্রমিক, কৃষকদের প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছেন। ক্রিকেটের ভাষায় ও বলেছে, উইকেট ফেলে দেব। তার জন্য ফুটবলের ভাষায় ‘নেমে খেলতে হবে’। যাতে দুর্নীতিবাজদের চোদ্দ তলা থেকে মাটিতে টেনে নামাতে পারি।’’

সেলিম বলেন, “লাল ঝান্ডা শুধু একটা কাপড়ের টুকরো না। এই পতাকা চিটফান্ডের টাকা দিয়ে কেনা হয়নি।”  এরপরই রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বলতে শুরু করেন তিনি। উপস্থিত জনতার উদ্দেশে পরামর্শ দিয়ে বলেন, “সাম্প্রদায়িক হিংসা যে ছড়াবে, পুলিশকে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। না হলে আমরা রাজ্যের সব থানায় এফআইআর করব।” দাঙ্গা নিয়ে কথা বলা শুরু করতেই বোঝা গিয়েছিল মুর্শিদাবাদ প্রসঙ্গ আসবেই। হলও তাই। সেলিম জানান, “আমি মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে গিয়েছিলাম, সুতিতে গিয়েছিলাম। কোথাও পুলিশের গুলিতে কোথাও হামলাকারীদের আক্রমণে মানুষ মারা গিয়েছেন।” সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঠেকাতে উপায় বাতলে বক্তা বলেন, “হিংসা দেখলে ডান্ডাগুলোকে মোটা করতে হবে। দেশ বাঁচাতে হলে আবার লাল ঝান্ডাকে মজবুত করতে হবে।

ব্রিগেড মঞ্চ থেকে মুর্শিদাবাদ প্রসঙ্গ তুলে সেলিম বলেন, ‘‘দুর্নীতিবাজদের চোদ্দ তলা থেকে মাটিতে টেনে নামানোর শপথ নিতে হবে আমাদের। গরিব মানুষের লড়াই স্যুট-বুট পরে লাট-বেলাট লড়তে পারবে না। গরিবকেই লড়তে হবে। বাঁচতে গেলে হিন্দু মুসলিম একসঙ্গে লড়তে হবে। লড়াইকে আমরা ভয় পাই না। কিন্তু সেই লড়াই মন্দির, মসজিদকে ঘিরে নয়। ধর্মের নামে বেসাতি যারা করে, বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে দেখুন। আমরা মুর্শিদাবাদকে বাংলাদেশের মতো সংখ্যালঘু নিধনের জায়গা হতে দিতে পারি না। লড়ে যাওয়ার শপথ নিতে হবে তাই। আমাদের লড়াই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কাজ, মা-বোনের ইজ্জত রক্ষার জন্য, সম্প্রীতির জন্য লড়াই। তৃণমূল-বিজেপির হাতে বাংলার সর্বনাশ হতে দেব না। সব ধর্মের অধিকার রক্ষা করে সরকার চালাতে হবে। এখন তো সরকারই বলছে মন্দির-মসজিদ চালাবে। ট্রেনটা ভাল করে চালাক আগে। কেন্দ্র ট্রেন বেচে দিচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার ট্রাম বেঁচে দিচ্ছেন। আসলে তৃণমূল বিজেপির স্ক্রিপ্ট এক। তা লেখা হয়েছে নাগপুরে। লিখে দিয়েছেন মোহন ভাগবত।’’ সেলিম আরও বলেন, ‘‘ওয়াকফের সংশোধন নিয়ে বিরুদ্ধে গোটা দেশে প্রতিবাদ হচ্ছে, শুধু বিজেপি আর তৃণমূলের পাঁচ-ছ’জন সাংসদ ছাড়া। কোথাও তো অশান্তি হচ্ছে না। এখানে হল কেন? মুর্শিদাবাদে যাঁরা খুন হলেন, তাঁদের সমস্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে হবে। আমরা চাই বিচারবিভাগীয় তদন্ত হোক। কারা ষড়যন্ত্র করল, নেপথ্যে কারা ছিল, সব বেরিয়ে আসবে। বহিরাগতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে। তারা ভিতরে ঢুকলেন কী ভাবে? আমি বলব, হিন্দু আর মুসলমান লড়াই কোরো না। লড়তে হয় বেকারত্বের বিরুদ্ধে লড়ো। ছাব্বিশের লড়াইয়ের শুরু এখান থেকেই হোক। গ্রামে গ্রামে এই লড়াই ছড়িয়ে দিতে হবে।’’

আরও পড়ুন:- ঠিক এই ভুলে গরমে বার্স্ট করে ফ্রিজ, সাবধান না হলেই শেষ…

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন