Bangla News Dunia, দীনেশ :- জম্মু ও কাশ্মীরের পহলগামে নিরীহ পর্যটকদের হত্যাকাণ্ডের পর খাদের কিনারায় পৌঁছে গিয়েছে ভারত-পাকিস্তান (India-Pakistan) সম্পর্ক। হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৬টি পদক্ষেপ করেছে ভারত। পাক দূতাবাসের সিংহভাগ কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠানো, সেদেশের নিরাপত্তা আধিকারিকদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ, ইসলামাবাদে মোতায়েন ভারতীয় কূটনীতিকদের দেশে ফিরিয়ে আনা, পাকিস্তানিদের জন্য সার্ক ভিসা বাতিল, আটারি সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্য বন্ধের মতো সিদ্ধান্তের পাশাপাশি সিন্ধু জলচুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন:- পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলাকে সমর্থন, গ্রেফতার বিধায়ক । বিস্তারিত জানুন
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, এ পর্যন্ত ভারতের তরফে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যতগুলি পদক্ষেপ করা হয়েছে, তার মধ্যে জলচুক্তি বাতিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর ওপর দীর্ঘমেয়াদে পাকিস্তানের টিকে থাকা নির্ভর করছে। ১৯৬০-এ স্বাক্ষরিত সিন্ধু জলচুক্তি (Indus Waters Treaty) অনুযায়ী সিন্ধু, ঝিলম ও চন্দ্রভাগা নদীর জল ব্যবহারের অধিকার রয়েছে পাকিস্তানের। বিপরীতে ইরাবতী, বিপাশা ও শতদ্রুর জলের অধিকার রয়েছে ভারতের কাছে। যদিও সবকটি নদীই ভারতের মধ্যে দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছে। অর্থাৎ, উজানের দেশ হিসাবে ৬টি নদীর জলের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে ভারতের।
আরও পড়ুন : বিদ্যুৎ বিল কমাতে সরকারের নতুন উদ্যোগ! কি সুবিধা হবে ? বিস্তারিত জেনে নিন
সাড়ে ৬ দশক আগে হওয়া চুক্তিকে মান্যতা দিয়ে এতদিন সিন্ধু, ঝিলম ও চন্দ্রভাগা নদীর ওপর বাঁধ দেয়নি ভারত। মঙ্গলবারের জঙ্গি হামলার পর সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করার কারণে ভারতের সামনে আর সিন্ধুর জলপ্রবাহ অবাধ রাখার বাধ্যবাধকতা নেই। অদূর ভবিষ্যতে ভারত সিন্ধুতে বাঁধ দিলে জলশূন্য হয়ে পড়বে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশ। সেদেশের কৃষিপণ্যের পাঁচ ভাগের চার ভাগ জোগান আসে এই রাজ্যটি থেকে। সিন্ধুর মূল প্রবাহ থেকে সেচখালের মাধ্যমে চাষ হয় পাক পঞ্জাবে। জল না পেলে ভেঙে পড়বে পাকিস্তানের কৃষি ব্যবস্থা, যার ওপর সেদেশের ৭০ শতাংশ মানুষের রুজি-রুটি নির্ভর করছে। এছাড়া পঞ্জাব ও সিন্ধু প্রদেশের সবকটি বড় শহর জল সরবরাহের জন্য সিন্ধুর ওপর নির্ভর করে। এর থেকেই সিন্ধু জলচুক্তির গুরুত্ব বোঝা যায়।
আরও পড়ুন:- সম্পূর্ণ বন্ধ বাণিজ্য! কত কোটির ক্ষতির মুখে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ? জেনে নিন
যে কারণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিবৃতির পরেই তড়িঘড়ি বয়ান জারি করেছে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রক। মন্ত্রকের মুখপাত্র মুহাম্মদ ফয়সাল বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ১৯৬০-এ সিন্ধু জলচুক্তির ফলে সিন্ধু সহ ৩টি নদীর জলের ওপর পাকিস্তানের অধিকার রয়েছে। সেই জল অন্যখাতে প্রবাহের চেষ্টা হলে তা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসাবে গণ্য করা হবে।’ ভারত অবশ্য সেই হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত সিন্ধু জলচুক্তি থেকে বেরিয়ে এলে শুরুতেই পাকিস্তানের অংশে জলপ্রবাহে তেমন ফারাক পড়বে না। ভারত বড়জোর ৫-১০ শতাংশ জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। কিন্তু আর্থিক সামর্থ্য থাকায় সংশ্লিষ্ট নদীগুলিতে কয়েক বছরের মধ্যে বাঁধ দিতে পারে ভারত। তখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে যাবে। তাই এখন থেকেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে পাকিস্তান।
আরও পড়ুন : ভারত VS পাকিস্তান, স্থল-জল-আকাশে কার কত ক্ষমতা ? বিস্তারিত জেনে নিন
আরও পড়ুন:- এক এক করে জঙ্গিদের বাড়ি বোমায় উড়িয়ে দিচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী, জানতে বিস্তারিত পড়ুন